Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের বিপক্ষে লজ্জার হার পাকিস্তানের

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:১১:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ২৪৪ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

গ্রুপপর্বে ভারত ছিল কিছুটা কোণঠাসা। মনে হচ্ছিল, বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়া তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। সুপার ফোরপর্বে ঠিক যেন উল্টো চিত্র। বৃষ্টিবাধায় পড়া ম্যাচটি রিজার্ভ ডেতে গড়ালেও পাকিস্তানি সমর্থকরা হয়তো খুব করে চাইছিলেন, বৃষ্টি খেলাটা পণ্ড করে দিক।

ভারতের ইনিংস শেষ হতেই যে কার্যত ম্যাচটা পাকিস্তানের হাতছাড়া হয়ে যায়। এরপর ব্যাটাররা বাজে শুরু করলে বৃষ্টিই ছিল পাকিস্তানের শেষ ভরসা। কিন্তু বৃষ্টিবাধায় পড়লেও শেষপর্যন্ত ম্যাচে কোনো ওভার কাটা যায়নি। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারতের ছুড়ে দেওয়া ৩৫৭ রানের পাহাড়সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ৩২ ওভারে অলআউট হয়ে গেছে ১২৮ রানেই। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ভারত ২২৮ রানের হারের লজ্জাও পেল পাকিস্তান। যদিও এদিন চোটের কারণে ব্যাট করতে নামেননি পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটার। ভারতের হয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন দলে ফেরা কুলদীপ যাদব।

এশিয়া কাপ কিংবা বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে বহুল আকাঙ্ক্ষিত একটি ম্যাচ ভারত-পাকিস্তান লড়াই। এবারের এশিয়া কাপে এ নিয়ে দুবার মুখোমুখি হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটি। প্রথম দফায় বেরসিক বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার পর সুপার ফোরেও তেমন শঙ্কা ছিল। নির্ধারিত দিনে (রোববার) বৃষ্টির বাগড়ার পর সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রিজার্ভ ডেতে গড়ায় খেলা। এদিনও বৃষ্টির বাধা থাকলেও শেষ বিকেলে মুখ তুলে তাকায় কলম্বোর আকাশ। আর তাতে ব্যাট-বলে দারুণ প্রদর্শনী দেখাল ভারত।

বৃষ্টির কারণে রিজার্ভ ডেতে গড়ানো ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ৩৫৬ রানের পুঁজি পায় ভারত। রাহুল ১০৬ বলে ১১১ ও কোহলি ৯৪ বলে ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই যেন শেষ পাকিস্তান! ইনফর্ম ইমাম-উল-হকের পর ব্যর্থ বাবর আজমও। দুই টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে যখন ধুঁকছিল পাকিস্তান, তখনই কলম্বোতে আরও একবার বৃষ্টির হানা। এরপর খেলা শুরু হলেও ভাগ্য বদলায়নি পাকিস্তানের।

বৃষ্টি থামার পর খেলা শুরু হলে প্রথম ওভারেই শার্দূল ঠাকুর আউট করেন মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (২)। পাকিস্তান ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ভারতের জয় এক রকম নিশ্চিত হয়ে যায়।

ভেজা আউটফিল্ডকে কাজে লাগিয়ে ভারতের পেসাররা ধারাবাহিকভাবে অস্বস্তিতে রাখেন পাক ব্যাটারদের। অন্যদিকে একের পর এক উইকেট তুলে নিতে থাকেন কুলদীপ। ফখর জামান (২৭) এবং আঘা সালমানকে (২৩) সাজঘরে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আরও কোণঠাসা করে দেন এই ভারতীয় স্পিনার। বিপদে ভরসা দিতে পারেননি সহ-অধিনায়ক শাদাব খানও (৬)। তাকেও আউট করলেন কুলদীপ। ফেরালেন ইফতিখার আহমেদকেও (২৩)। ফাহিম আশরাফও (৪) আউট হলেন বাঁহাতি স্পিনারের বলে। ২৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন সুপার ফোরে দলে জায়গা পাওয়া কুলদীপ।

চোটের কারণে পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটার নাসিম শাহ এবং হ্যারিস রউফ ব্যাট করতে নামতে পারেননি। তাই ১২৮ রানে ৮ উইকেট পড়ার পরেই শেষ হয়ে যায় বাবরদের ইনিংস। একটি করে উইকেট নিয়েছেন বুমরা, হার্দিক এবং শার্দুল ঠাকুর।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন দুই ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিবমন গিল। প্রথম ওভারে শাহিন আফ্রিদিকে ছয় দিয়ে স্কোর বোর্ডে রান যোগ করেন রোহিত শর্মা। শুরু থেকে পাকিস্তান বোলাদের ওপর চড়াও হন এই দুই ওপেনাররা।

এই দিন পাকিস্তানের বোলাররা ছিল একদম ছন্ন ছাড়া। মারমুখী ব্যাটিংয়ে অর্ধশতক পূরণ করেন গিল ও রোহিত। তবে ইনিংসের ১৭তম ওভারে প্রথম সাফল্য পায় পাকিস্তান। শাদাব খানের বলে ক্যাচ তুলে দেন রোহিত। দলীয় ১২১ রানে ৪৯ বলে ৫৬ রানে আউট হন রোহিত। এরপর ক্রিজে আসেন বিরাট কোহলি। কোহলিকে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন গিল।

তবে দলীয় ১২৩ রানে ৫২ বলে ৫৮ রান করে আউট হন গিল। তাকে সাজঘরে ফেরান শাহিন আফ্রিদি। এরপর ক্রিজে আসা রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন কোহলি। ২৪.১ ওভারে ভারত ২ উইকেটে ১৪৭ রান করার পর নামে বৃষ্টি।

সেখান থেকে রিজার্ভ ডেতে শুরু হয় খেলা। রিজার্ভ ডের শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার রাহুল ও কোহলি। পাকিস্তানি বোলারদের কোন রকম সুযোগ না দিয়ে অর্ধশত রান তুলে নেন রাহুল ও কোহলি।

এই দুই ব্যাটারের অর্ধশতরানের পর আরও আগ্রাসী হয়ে পাকিস্তান বোলারদের ওপর চড়া হতে থাকেন। ১০০ বলে শতক পূর্ণ করেন রাহুল। তার শতকের পরেই ৮৪ বলে ক্যারিয়ারের ৪৭তম শতক পূর্ণ করেন কোহলি। সেইসঙ্গে ওয়ানডেতে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই কিং কোহলি।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৫৬ রান সংগ্রহ করে রোহিত শর্মার দল। রাহুল ১১১ ও কোহলি ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে শাহীন আফ্রিদি ও শাদব খান নেন ১টি করে উইকেট।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জাকসু নির্বাচনের দায়িত্ব ছাড়লেন বিএনপিপন্থি ৩ শিক্ষক

ভারতের বিপক্ষে লজ্জার হার পাকিস্তানের

প্রকাশের সময় : ১২:১১:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

গ্রুপপর্বে ভারত ছিল কিছুটা কোণঠাসা। মনে হচ্ছিল, বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়া তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। সুপার ফোরপর্বে ঠিক যেন উল্টো চিত্র। বৃষ্টিবাধায় পড়া ম্যাচটি রিজার্ভ ডেতে গড়ালেও পাকিস্তানি সমর্থকরা হয়তো খুব করে চাইছিলেন, বৃষ্টি খেলাটা পণ্ড করে দিক।

ভারতের ইনিংস শেষ হতেই যে কার্যত ম্যাচটা পাকিস্তানের হাতছাড়া হয়ে যায়। এরপর ব্যাটাররা বাজে শুরু করলে বৃষ্টিই ছিল পাকিস্তানের শেষ ভরসা। কিন্তু বৃষ্টিবাধায় পড়লেও শেষপর্যন্ত ম্যাচে কোনো ওভার কাটা যায়নি। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারতের ছুড়ে দেওয়া ৩৫৭ রানের পাহাড়সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ৩২ ওভারে অলআউট হয়ে গেছে ১২৮ রানেই। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ভারত ২২৮ রানের হারের লজ্জাও পেল পাকিস্তান। যদিও এদিন চোটের কারণে ব্যাট করতে নামেননি পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটার। ভারতের হয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন দলে ফেরা কুলদীপ যাদব।

এশিয়া কাপ কিংবা বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে বহুল আকাঙ্ক্ষিত একটি ম্যাচ ভারত-পাকিস্তান লড়াই। এবারের এশিয়া কাপে এ নিয়ে দুবার মুখোমুখি হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটি। প্রথম দফায় বেরসিক বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার পর সুপার ফোরেও তেমন শঙ্কা ছিল। নির্ধারিত দিনে (রোববার) বৃষ্টির বাগড়ার পর সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রিজার্ভ ডেতে গড়ায় খেলা। এদিনও বৃষ্টির বাধা থাকলেও শেষ বিকেলে মুখ তুলে তাকায় কলম্বোর আকাশ। আর তাতে ব্যাট-বলে দারুণ প্রদর্শনী দেখাল ভারত।

বৃষ্টির কারণে রিজার্ভ ডেতে গড়ানো ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ৩৫৬ রানের পুঁজি পায় ভারত। রাহুল ১০৬ বলে ১১১ ও কোহলি ৯৪ বলে ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই যেন শেষ পাকিস্তান! ইনফর্ম ইমাম-উল-হকের পর ব্যর্থ বাবর আজমও। দুই টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে যখন ধুঁকছিল পাকিস্তান, তখনই কলম্বোতে আরও একবার বৃষ্টির হানা। এরপর খেলা শুরু হলেও ভাগ্য বদলায়নি পাকিস্তানের।

বৃষ্টি থামার পর খেলা শুরু হলে প্রথম ওভারেই শার্দূল ঠাকুর আউট করেন মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (২)। পাকিস্তান ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ভারতের জয় এক রকম নিশ্চিত হয়ে যায়।

ভেজা আউটফিল্ডকে কাজে লাগিয়ে ভারতের পেসাররা ধারাবাহিকভাবে অস্বস্তিতে রাখেন পাক ব্যাটারদের। অন্যদিকে একের পর এক উইকেট তুলে নিতে থাকেন কুলদীপ। ফখর জামান (২৭) এবং আঘা সালমানকে (২৩) সাজঘরে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আরও কোণঠাসা করে দেন এই ভারতীয় স্পিনার। বিপদে ভরসা দিতে পারেননি সহ-অধিনায়ক শাদাব খানও (৬)। তাকেও আউট করলেন কুলদীপ। ফেরালেন ইফতিখার আহমেদকেও (২৩)। ফাহিম আশরাফও (৪) আউট হলেন বাঁহাতি স্পিনারের বলে। ২৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন সুপার ফোরে দলে জায়গা পাওয়া কুলদীপ।

চোটের কারণে পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটার নাসিম শাহ এবং হ্যারিস রউফ ব্যাট করতে নামতে পারেননি। তাই ১২৮ রানে ৮ উইকেট পড়ার পরেই শেষ হয়ে যায় বাবরদের ইনিংস। একটি করে উইকেট নিয়েছেন বুমরা, হার্দিক এবং শার্দুল ঠাকুর।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন দুই ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিবমন গিল। প্রথম ওভারে শাহিন আফ্রিদিকে ছয় দিয়ে স্কোর বোর্ডে রান যোগ করেন রোহিত শর্মা। শুরু থেকে পাকিস্তান বোলাদের ওপর চড়াও হন এই দুই ওপেনাররা।

এই দিন পাকিস্তানের বোলাররা ছিল একদম ছন্ন ছাড়া। মারমুখী ব্যাটিংয়ে অর্ধশতক পূরণ করেন গিল ও রোহিত। তবে ইনিংসের ১৭তম ওভারে প্রথম সাফল্য পায় পাকিস্তান। শাদাব খানের বলে ক্যাচ তুলে দেন রোহিত। দলীয় ১২১ রানে ৪৯ বলে ৫৬ রানে আউট হন রোহিত। এরপর ক্রিজে আসেন বিরাট কোহলি। কোহলিকে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন গিল।

তবে দলীয় ১২৩ রানে ৫২ বলে ৫৮ রান করে আউট হন গিল। তাকে সাজঘরে ফেরান শাহিন আফ্রিদি। এরপর ক্রিজে আসা রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন কোহলি। ২৪.১ ওভারে ভারত ২ উইকেটে ১৪৭ রান করার পর নামে বৃষ্টি।

সেখান থেকে রিজার্ভ ডেতে শুরু হয় খেলা। রিজার্ভ ডের শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার রাহুল ও কোহলি। পাকিস্তানি বোলারদের কোন রকম সুযোগ না দিয়ে অর্ধশত রান তুলে নেন রাহুল ও কোহলি।

এই দুই ব্যাটারের অর্ধশতরানের পর আরও আগ্রাসী হয়ে পাকিস্তান বোলারদের ওপর চড়া হতে থাকেন। ১০০ বলে শতক পূর্ণ করেন রাহুল। তার শতকের পরেই ৮৪ বলে ক্যারিয়ারের ৪৭তম শতক পূর্ণ করেন কোহলি। সেইসঙ্গে ওয়ানডেতে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই কিং কোহলি।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৫৬ রান সংগ্রহ করে রোহিত শর্মার দল। রাহুল ১১১ ও কোহলি ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে শাহীন আফ্রিদি ও শাদব খান নেন ১টি করে উইকেট।