আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের তামিলনাড়ুর মাদুরাই রেলস্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনের বগিতে আগুন লেগে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরও ২০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের মাদুরাইয়ের সরকারি রাজাজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং উদ্ধার অভিযান চলছে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দেশটির স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। মাদুরাইয়ের জেলা কালেক্টর এমএস সঙ্গীতা ১০ জন নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। খবর এনডিটিভির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার (২৬ আগস্ট) ভোরে দেশটির তামিলনাড়ুর মাদুরাই স্টেশনের কাছে ট্রেনটির প্যান্ট্রি কারে আগুন লাগে। এরপর তা বগিগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে। সকাল ৭টা ১৫ মিনিট নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ইতোমধ্যে পুড়ে যাওয়া বগি থেকে মরদেহগুলো বের করে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিরুপতি-রামেশ্বমর থেকে কন্যাকুমারীর দিকে যাচ্ছিল আইআরসিটিসির এই স্পেশাল ট্রেনটি।
আগুনের সূত্রপাতের বিষয়ে রেল সূত্র জানিয়েছে, পুনালুর-মাদুরাই এক্সপ্রেসের একটি ব্যক্তিগত কোচে আগুন লাগে। পার্টি করার উদ্দেশে ভাড়া করা কামরাটি আলাদা করে মাদুরাই স্টেশনের কাছে রাখা হয়েছিল। কোচের যাত্রীরা লুকিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাত্রা করছিলেন। ট্রেনের কামরার মধ্যেই তীর্থযাত্রীরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে কফি বানাচ্ছিলেন। সেখান থেকেই আগুন লাগে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুন দেখে অনেকেই কামরা থেকে বাইরে বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু বৃদ্ধরা পারেননি।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বগির একটি কামরা ছাড়া বাকি কোনো কামরা তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় রেল দপ্তরের দক্ষিণাঞ্চলীয় শাখা শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ট্রেনটি গত ১৭ তারিখ লখনৌ থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল, আগামী কাল সেটির চেন্নাই পৌঁছানোর কথা চিল। যে কম্পার্টমেন্টটিতে আগুন লেগেছে, সেটি ছিল একটি পার্টি কোচ। একটি গ্রুপ সেই কামরাটি ভাড়া করেছিল এবং কামরার ভেতর রান্না করার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে গিয়েছিল। সেই সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই আগুন লেগেছে।
পুড়ে যাওয়া কামরাটির ভেতর থেকে রান্নার সরঞ্জাম ও এক ব্যাগ আলু উদ্ধার উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
এদিকে কামরায় আগুন লাগার পরই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন মাদুরাই’র জেলা প্রশাসক এমএস সঙ্গীতা। তিনি জানিয়েছেন, আহতদের সবাইকে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতদের দেহ হস্তান্তরের জন্য তাদের পরিবারের সদস্যদের অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
গত জুন মাসে ভারতের ওড়িশার করমন্ডলে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়। তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক এক দৃশ্যের। সূত্র : এনডিটিভি।