নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ভারত অত্যন্ত পরিপক্ক; তারা তাদের নিজেদের ও আঞ্চলিক শান্তি স্থিতিশীলতার জন্য যদি যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু বলে থাকে, তাহলে সেটি সবার জন্য ভালো হবে।
রোববার (২০ আগস্ট) ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারত ওয়াশিংটনকে বার্তা দিয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক কোনো ভাষ্য আছে কিনা- জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।
এ সময় ড. মোমেন বলেন, ভারত সরকার অত্যন্ত পরিপক্ব । তাদের একটি অত্যন্ত শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ। তারা যেটা ভালো মনে করে, সেটাই তারা করেছে। আমাদের তাদের সম্পর্কে কোনো কিছু বলার নেই। তারা নিজেদের জন্য এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য যদি কিছু বলে থাকেন, অবশ্যই এটা অত্র এলাকার উপকারে আসবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সরকারব্যবস্থা অত্যন্ত পরিপক্ক। তারা নিজেদের জন্য এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য যদি কিছু বলে থাকেন, অবশ্যই সেটা অত্র এলাকার উপকারে আসবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি না কোনো দেশের প্রিজনারকে বিদেশে পাঠায় কি না।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে কি না। এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. মোমেন বলেন, আমরা জানি না কোনো দেশের প্রিজনারকে (বন্দি) বিদেশে পাঠায় কি না।
প্রশ্নকারী সাংবাদিককে তিনি বলেন, আপনি কী জানেন কোনো দেশ, তার দেশের প্রিজনারকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠায়? যদি পাঠিয়ে থাকে আমাকে বলবেন। এখানে দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা তাকে দেওয়া হচ্ছে। আর প্রিজনারকে বিদেশে পাঠায় কি না আমার জানা নেই। আপনি যদি জানতে পারেন, তাহলে উই উইল ওয়েলকাম।
ভারতের মেঘালয়ে অবস্থান করা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দীন আহমেদ যে ট্র্যাভেল পাস পেয়েছেন, তার মেয়াদ সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হচ্ছে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ল’ যেটা আছে, বিধিবিধান যেটা আছে সে অনুযায়ী চলবে। সেপ্টেম্বরে ডেটলাইন পার হয়ে যাবে সে প্রশ্নের জবাবে বলেন, সেটা আমাদের জানা নেই। পার হলে আমাদের যেটা অনুরোধ করবে সে অনুযায়ী কাজ করবো।
ব্রিকসে যোগদান প্রসঙ্গে এ কে মোমেন বলেন, অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দিতে চায়। এখানে ভূরাজনীতি থাকা উচিত নয়। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলোর অনেকগুলোই চাহিদামতো অর্থায়ন পাচ্ছে না। ব্রিকস এতে সাহায্য করতে পারে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে জোহানেসবার্গে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক হবে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা বেশ কিছু রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অনুরোধ করেছি। তবে যেহেতু জি-২০ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ আছে, সেজন্য দিল্লিতে হতে পারে।
ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর সংখ্যা সীমিত। সরকারিভাবে মোট ১৪ জন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাবেন। এমনিতে বাইরের কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি যাবেন, ব্যবসায়ী যাবেন। কারণ, আমাদের বিনিয়োগ, বাণিজ্য বাড়ানোর একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। সেজন্য কিছু ব্যবসায়ী যাবেন।
এসময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন কূটনীতি শাখার মহাপরিচালক সেহেলি সাবরীন উপস্থিত ছিলেন।