খুলনা জেলা প্রতিনিধি :
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদ আবিদ (২৩) আত্মহত্যা করেছেন।
সোমবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রোডের শাহ শিরিন সড়কের ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তৌকির আহমেদের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের শাহ শিরিন সড়কের একটি ফ্ল্যাটবাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে তৌকিরের শিক্ষক পরীক্ষায় তাঁর ফেল করার কারণে বিষণ্ন থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকাটি পড়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) হরিণটানা থানার মধ্যে। ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ খাইরুল বাশার বিকেল চারটার দিকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
তৌকির আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির কেয়ারটেকার সিয়াম জমাদ্দার বলেন, দুই কক্ষবিশিষ্ট ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন তৌকির। অপর কক্ষে ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। আজ দুপুরের দিকে পাশের কক্ষের ওই শিক্ষার্থী তৌকিরের কাছে যাওয়ার জন্য দরজা নক করতে গিয়ে দেখেন, তা বন্ধ। পরে বিভিন্নভাবে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে তিনি জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন, তাঁর শরীর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে তাঁর চিৎকারে লোকজন ছুটে এসে তৌকিরকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। হরিণটানা থানা-পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ইসিই ডিসিপ্লিনের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, আজ তৌকির ক্লাসে আসেননি। গত পরীক্ষায় তিনি কয়েকটি সাবজেক্টে ফেল করেছিলেন। সব সময় বিষণ্ন থাকতেন, একাডেমিকভাবেও পিছিয়ে পড়েছিলেন। ব্যাপারটি নিয়ে তাঁকে কাউন্সেলিং করানো হয়েছিল। এরপর লেখাপড়ায় কিছুটা মনোযোগী হচ্ছিল তিনি। তৌকিরের পরিবারকে আগেই জানানো হয়েছিল, তাঁকে যেন একা না রাখেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক নাজমুস সাদাত বলেন, প্রেমঘটিত সম্পর্কের জেরে পারিবারিকভাবে চাপে ছিলেন ওই শিক্ষার্থী। পড়াশোনায়ও বেশি মনোযোগী ছিলেন না। এটা নিয়ে ডিসিপ্লিনের পক্ষ থেকে তাঁকে কাউন্সেলিং করানো হয়েছে।