Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রয়লার মুরগির কেজি ৩০০ ছুঁই ছুঁই

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মুরগির বাজারে অস্থিরতা চলছে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এখন ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি তিন শ টাকা ছুঁই ছুঁই অবস্থা।

সোমবার (২০ মার্চ) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

রমজান মাস সামনে রেখেও স্থিতিশীলতা ফিরছে না বাজারে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা মনে করেন, এর জন্য অনেকাংশে দায়ী বাজার সিন্ডিকেট। যদিও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে খাদ্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং-এর মাধ্যমে রমজানে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে সব পণ্যের দাম।

সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর আগের দিন শনিবার (১৮মার্চ) কেজিতে দাম বাড়ে ৭-৮ টাকা। সে হিসেবে গত তিনদিনে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। শুক্রবার (১৭ মার্চ) প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে। সোমবার (২০মার্চ) তা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় এমনিতেই মুরগির সংকট। তার ওপর গত দুদিনে বৃষ্টিতে সরবরাহ আরও কমেছে। এ কারণে বাজারে দাম বেড়ে গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্রয়লার মুরগির বর্তমান দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি কেজি প্রায় স্বাভাবিক দামের থেকে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ছিলো প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি কখনো বিক্রি হয়নি। ব্রয়লারের দাম বাড়ার কারণে এখন সোনালি ও কর্কসহ দেশি মুরগির দামও বেড়েছে। অনেক আগেই দেশি মুরগির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে।

সোমবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সেগুনবাগিচা বাজারের এক ব্রয়লার বিক্রেতা জানান, গত রাতে (রোববার দিনগত রাত) কাপ্তান বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২০-২২ টাকা বেশি গেছে। আগের রাতে (শনিবার দিনগত রাত) বেড়েছে আরও ৫-৬ টাকা। সবমিলে শুক্রবারের (১৭মার্চ) পর সোমবার (২০মার্চ) পর্যন্ত এ দাম ৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি কেজিতে। বাজারে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকার মতো। কয়েক সপ্তাহ আগে সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। এখন ৩৭০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারে দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে দেশি মুরগির দামেও বড় পার্থক্য হয়েছে। মাসখানেক আগেও ৫০০ টাকার কমে পাওয়া যেত প্রতিকেজি দেশি মুরগি।

খামারিরা জানিয়েছেন, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও অনেক খামার বন্ধ হওয়ায় বাজারে ডিম ও মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে। তাতে প্রকৃতপক্ষেই দাম কিছুটা বেড়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দাম আরও বাড়াচ্ছেন।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার গণমাধ্যমে বলেন, খাদ্য ও বাচ্চার মূল্যবৃদ্ধির ফলে মুরগির দাম বেড়েছে। তবে এখনকার দাম মাত্রাতিরিক্ত। এত বেশি দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হোক, সেটি আমরাও চাই না। কারণ প্রান্তিক খামারিরা বাড়তি দাম পাচ্ছেন না। এ মুনাফা নিয়ে যাচ্ছে করপোরেট কোম্পানিগুলো। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিদিনের দাম নির্ধারণ করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

ব্রয়লার মুরগির কেজি ৩০০ ছুঁই ছুঁই

প্রকাশের সময় : ০৬:৫৭:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মুরগির বাজারে অস্থিরতা চলছে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এখন ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি তিন শ টাকা ছুঁই ছুঁই অবস্থা।

সোমবার (২০ মার্চ) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

রমজান মাস সামনে রেখেও স্থিতিশীলতা ফিরছে না বাজারে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা মনে করেন, এর জন্য অনেকাংশে দায়ী বাজার সিন্ডিকেট। যদিও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে খাদ্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং-এর মাধ্যমে রমজানে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে সব পণ্যের দাম।

সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর আগের দিন শনিবার (১৮মার্চ) কেজিতে দাম বাড়ে ৭-৮ টাকা। সে হিসেবে গত তিনদিনে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। শুক্রবার (১৭ মার্চ) প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে। সোমবার (২০মার্চ) তা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় এমনিতেই মুরগির সংকট। তার ওপর গত দুদিনে বৃষ্টিতে সরবরাহ আরও কমেছে। এ কারণে বাজারে দাম বেড়ে গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্রয়লার মুরগির বর্তমান দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি কেজি প্রায় স্বাভাবিক দামের থেকে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ছিলো প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি কখনো বিক্রি হয়নি। ব্রয়লারের দাম বাড়ার কারণে এখন সোনালি ও কর্কসহ দেশি মুরগির দামও বেড়েছে। অনেক আগেই দেশি মুরগির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে।

সোমবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সেগুনবাগিচা বাজারের এক ব্রয়লার বিক্রেতা জানান, গত রাতে (রোববার দিনগত রাত) কাপ্তান বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২০-২২ টাকা বেশি গেছে। আগের রাতে (শনিবার দিনগত রাত) বেড়েছে আরও ৫-৬ টাকা। সবমিলে শুক্রবারের (১৭মার্চ) পর সোমবার (২০মার্চ) পর্যন্ত এ দাম ৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি কেজিতে। বাজারে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকার মতো। কয়েক সপ্তাহ আগে সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। এখন ৩৭০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারে দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে দেশি মুরগির দামেও বড় পার্থক্য হয়েছে। মাসখানেক আগেও ৫০০ টাকার কমে পাওয়া যেত প্রতিকেজি দেশি মুরগি।

খামারিরা জানিয়েছেন, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও অনেক খামার বন্ধ হওয়ায় বাজারে ডিম ও মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে। তাতে প্রকৃতপক্ষেই দাম কিছুটা বেড়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দাম আরও বাড়াচ্ছেন।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার গণমাধ্যমে বলেন, খাদ্য ও বাচ্চার মূল্যবৃদ্ধির ফলে মুরগির দাম বেড়েছে। তবে এখনকার দাম মাত্রাতিরিক্ত। এত বেশি দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হোক, সেটি আমরাও চাই না। কারণ প্রান্তিক খামারিরা বাড়তি দাম পাচ্ছেন না। এ মুনাফা নিয়ে যাচ্ছে করপোরেট কোম্পানিগুলো। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিদিনের দাম নির্ধারণ করেন।