Dhaka মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রিটেনে ভারতীয় মালিকানাধীন ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি

  • যোগাযোগ ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:২২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২১৯ জন দেখেছেন

ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির ভারতীয় মালিক

ভারতে বাণিজ্যের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রবেশ করে শতাব্দীজুড়ে উপমহাদেশ কবজা করে রেখেছিল ব্রিটেনের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি। তারা নানাভাবে অত্যাচার-নিপীড়ন করে ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় তৈরি করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং প্রথম করপোরেশন কম্পানি হিসেবেও অনেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে চেনেন।

শুরুতে এর নাম ছিল ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি (১৬০০-১৭০৮)। পরবর্তীতে এর নাম বদলে করা হয় অনারেবল কম্পানি অব মার্চেন্টস অব লন্ডন ট্রেডিং ইনটু দ্য ইস্ট ইন্ডিজ অথবা ইউনাইটেড কম্পানি অব মার্চেন্টস অব ইংল্যান্ড ট্রেডিং টু দ্য ইস্ট ইন্ডিজ (১৭০৮-১৮৭৩)। মূলত ১৮১৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির কাঠামোর ভেঙে পড়ে। কিন্তু পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায় ১৮৭৪ সালে।

দীর্ঘদিন পরে সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি ব্রিটেনে কাজ শুরু করেছে, যার মালিক এক ভারতীয়। তবে আগের কাজের সঙ্গে মিল নেই এ যুগের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির।

বিলুপ্তির প্রায় ১৩৫ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে আবারো ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি সচল হয়েছে। তবে এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর হাত ধরে। এই ব্যবসায়ীর নাম সঞ্জীব মেহতা।

১৬০০ সালের স্যার থমাস স্মাইথের নেতৃত্বে লন্ডনের একদল বণিক রাণী প্রথম এলিজাবেথের কাছে এক আর্জি নিয়ে হাজির হন। তারা রাণীর কাছে পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবসা করার জন্য রাণীর সম্মতি ও রাজসনদ প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। রাণী প্রথম এলিজাবেথ তাদের সম্মতি দেন।

আরও পড়ুন : যে দেশে গণপরিবহনে যাতায়াতে টাকা লাগে না

পরবর্তীতে ৭০ হাজার পাউন্ড পুঁজি নিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি এক দক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলে। পাশাপাশি ভারতের উপকূলে তাদের অবস্থান ছিল শক্তিশালী।

এছাড়া যেকোনও প্রয়োজনে তাদের ডাকে ব্রিটিশ নৌবাহিনী সাড়া দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। সামরিক দিক দিয়ে এগিয়ে থাকার কারণে ভারতের বিভিন্ন যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়।

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ এবং ১৭৬৪ সালের বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর কম্পানি বাংলার কর সংগ্রহের ক্ষমতালাভ করে। ১৮১৮ সালের হিসেব অনুসারে ভারতের দুই-তৃতীয়াংশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির দখলে ছিল।

১৮৭৪ সালে বিলুপ্তির প্রায় ১৩৫ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে আবারো ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি সচল হয়েছে। তবে এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর হাত ধরে। তার নাম সঞ্জীব মেহতা। মূলত পূর্বের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সাথে এই কম্পানির নাম ছাড়া আর কোনও কিছুতেই মিল নেই।

মূলত পূর্বের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সাথে এই কম্পানির নাম ছাড়া আর কোনও কিছুতেই মিল নেই। ৪৮ বছর বয়সী ভারতীয় ব্যবসায়ী সঞ্জীব মেহতা ২০০৫ সালে স্বল্প মূল্যে ইস্ট কম্পানির পেটেন্ট ক্রয় করেন। এর পাঁচ বছর তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে ভোগ্য পণ্যের ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সঞ্জীব মেহতা ২০০৫ সালে স্বল্প মূল্যে ইস্ট কম্পানির পেটেন্ট কেনার পর লন্ডনে বিলাসবহুল এক খাবারের দোকান চালু করেছেন। ৩৫ জন কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ প্রতিষ্ঠানে মেহতার বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১২ মিলিয়ন পাউন্ড।

সূত্র: উইওনিউজ, আরব নিউজ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন সড়কের বেহাল দশা, চলাচলে চরম ভোগান্তি

ব্রিটেনে ভারতীয় মালিকানাধীন ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি

প্রকাশের সময় : ০৬:২২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

ভারতে বাণিজ্যের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রবেশ করে শতাব্দীজুড়ে উপমহাদেশ কবজা করে রেখেছিল ব্রিটেনের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি। তারা নানাভাবে অত্যাচার-নিপীড়ন করে ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় তৈরি করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং প্রথম করপোরেশন কম্পানি হিসেবেও অনেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে চেনেন।

শুরুতে এর নাম ছিল ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি (১৬০০-১৭০৮)। পরবর্তীতে এর নাম বদলে করা হয় অনারেবল কম্পানি অব মার্চেন্টস অব লন্ডন ট্রেডিং ইনটু দ্য ইস্ট ইন্ডিজ অথবা ইউনাইটেড কম্পানি অব মার্চেন্টস অব ইংল্যান্ড ট্রেডিং টু দ্য ইস্ট ইন্ডিজ (১৭০৮-১৮৭৩)। মূলত ১৮১৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির কাঠামোর ভেঙে পড়ে। কিন্তু পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায় ১৮৭৪ সালে।

দীর্ঘদিন পরে সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি ব্রিটেনে কাজ শুরু করেছে, যার মালিক এক ভারতীয়। তবে আগের কাজের সঙ্গে মিল নেই এ যুগের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির।

বিলুপ্তির প্রায় ১৩৫ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে আবারো ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি সচল হয়েছে। তবে এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর হাত ধরে। এই ব্যবসায়ীর নাম সঞ্জীব মেহতা।

১৬০০ সালের স্যার থমাস স্মাইথের নেতৃত্বে লন্ডনের একদল বণিক রাণী প্রথম এলিজাবেথের কাছে এক আর্জি নিয়ে হাজির হন। তারা রাণীর কাছে পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবসা করার জন্য রাণীর সম্মতি ও রাজসনদ প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। রাণী প্রথম এলিজাবেথ তাদের সম্মতি দেন।

আরও পড়ুন : যে দেশে গণপরিবহনে যাতায়াতে টাকা লাগে না

পরবর্তীতে ৭০ হাজার পাউন্ড পুঁজি নিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি এক দক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলে। পাশাপাশি ভারতের উপকূলে তাদের অবস্থান ছিল শক্তিশালী।

এছাড়া যেকোনও প্রয়োজনে তাদের ডাকে ব্রিটিশ নৌবাহিনী সাড়া দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। সামরিক দিক দিয়ে এগিয়ে থাকার কারণে ভারতের বিভিন্ন যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়।

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ এবং ১৭৬৪ সালের বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর কম্পানি বাংলার কর সংগ্রহের ক্ষমতালাভ করে। ১৮১৮ সালের হিসেব অনুসারে ভারতের দুই-তৃতীয়াংশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির দখলে ছিল।

১৮৭৪ সালে বিলুপ্তির প্রায় ১৩৫ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে আবারো ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি সচল হয়েছে। তবে এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর হাত ধরে। তার নাম সঞ্জীব মেহতা। মূলত পূর্বের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সাথে এই কম্পানির নাম ছাড়া আর কোনও কিছুতেই মিল নেই।

মূলত পূর্বের ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সাথে এই কম্পানির নাম ছাড়া আর কোনও কিছুতেই মিল নেই। ৪৮ বছর বয়সী ভারতীয় ব্যবসায়ী সঞ্জীব মেহতা ২০০৫ সালে স্বল্প মূল্যে ইস্ট কম্পানির পেটেন্ট ক্রয় করেন। এর পাঁচ বছর তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে ভোগ্য পণ্যের ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সঞ্জীব মেহতা ২০০৫ সালে স্বল্প মূল্যে ইস্ট কম্পানির পেটেন্ট কেনার পর লন্ডনে বিলাসবহুল এক খাবারের দোকান চালু করেছেন। ৩৫ জন কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ প্রতিষ্ঠানে মেহতার বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১২ মিলিয়ন পাউন্ড।

সূত্র: উইওনিউজ, আরব নিউজ।