Dhaka শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাজিলে প্রবল বৃষ্টি-ধসে বন্যায় নিহত ২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

প্রবল বৃষ্টির পর ধস ও বন্যায় নাজেহাল ব্রাজিল। এখনো পর্যন্ত ২১ জন মারা গেছেন। এই ঘটনায় আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মূলত ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মুষলধারে বৃষ্টি এবং প্রবল বাতাসের কারণে ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে বিপর্যয়কর এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির ওই এলাকায় আরও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। দেশটির রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলের গভর্নর বলেছেন, এটিই তার প্রদেশের সবচেয়ে খারাপ আবহাওয়া বিপর্যয়ের ঘটনা।

বিবিসি বলছে, হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাঁচ হাজার বাসিন্দার শহর মুকুমে শত শত লোককে তাদের বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করতে হয়েছে কারণ শহরের ৮৫ শতাংশই প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে।

দেশটির সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ ব্রাজিল। মারা গেছেন অন্তত ২১ জন। রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলেতে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ১২ মি লি বেশি বৃষ্টি পড়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, পানি কিছুটা কমার পর সেখানে ১৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে বন্যা ও ধসে ২১ জন মারা গেছেন এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েকশ মানুষের সঙ্গে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয় ব্রাজিলে। এই বৈরি আবহাওয়ায় ছয় হাজারের বেশি মানুষ ঘড় ছাড়তে বাধ্য হন। কারণ, বৃষ্টির পরেই শুরু হয় বন্যা এবং নেমে আশে ধস।

লুয়ানা দা লুজ শহরের এক বাসিন্দা বলেছেন, সকাল থেকে বন্যার পানি বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। আমরা উঁচু জায়গায় জিনিসপত্র রাখতে শুরু করেছি। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হচ্ছেনা।’’ অন্যদিকে নোভা বাসানো শহরের বাসিন্দা রেগিনাটো বলেছেন, তিনি সব হারিয়ে এখন বিপর্যস্ত। তার বাড়িতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্রান্দে দো সালের গভর্নর এদুয়ার্দো লেইতে জানিয়েছেন, রাজ্যের অন্তত ৬০টি শহর এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শহরগুলোতে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার পানি নেমে গেলে বিভিন্ন শহর থেকে ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সান্তা কাতারিনায় আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা জানিয়েছেন, তিনি ও তার সরকার সাধারণ মানুষের পাশে আছে। সরকার তাদের সবরকম সাহায্য করবে। আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা জানান, আরও বৃষ্টি হতে পারে এবং তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

এদিকে বন্যার কারণে বিচ্ছিন্ন এলাকায় পৌঁছাতে উদ্ধারকর্মীরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন। সংবাদমাধ্যম বলছে, বন্যা হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকে বলে মনে করা হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজিলের সাও পাওলো প্রদেশে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছিলেন। এছাড়া গত বছর দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রেসিফ শহরের কাছে প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধস ও কাদার স্রোতে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বার্ড স্ট্রাইক, বেঙ্গালুরুতে ফ্লাইট বাতিল করল এয়ার ইন্ডিয়া

ব্রাজিলে প্রবল বৃষ্টি-ধসে বন্যায় নিহত ২১

প্রকাশের সময় : ০১:০৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

প্রবল বৃষ্টির পর ধস ও বন্যায় নাজেহাল ব্রাজিল। এখনো পর্যন্ত ২১ জন মারা গেছেন। এই ঘটনায় আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মূলত ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মুষলধারে বৃষ্টি এবং প্রবল বাতাসের কারণে ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে বিপর্যয়কর এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির ওই এলাকায় আরও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। দেশটির রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলের গভর্নর বলেছেন, এটিই তার প্রদেশের সবচেয়ে খারাপ আবহাওয়া বিপর্যয়ের ঘটনা।

বিবিসি বলছে, হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাঁচ হাজার বাসিন্দার শহর মুকুমে শত শত লোককে তাদের বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করতে হয়েছে কারণ শহরের ৮৫ শতাংশই প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে।

দেশটির সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ ব্রাজিল। মারা গেছেন অন্তত ২১ জন। রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলেতে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ১২ মি লি বেশি বৃষ্টি পড়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, পানি কিছুটা কমার পর সেখানে ১৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে বন্যা ও ধসে ২১ জন মারা গেছেন এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েকশ মানুষের সঙ্গে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয় ব্রাজিলে। এই বৈরি আবহাওয়ায় ছয় হাজারের বেশি মানুষ ঘড় ছাড়তে বাধ্য হন। কারণ, বৃষ্টির পরেই শুরু হয় বন্যা এবং নেমে আশে ধস।

লুয়ানা দা লুজ শহরের এক বাসিন্দা বলেছেন, সকাল থেকে বন্যার পানি বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। আমরা উঁচু জায়গায় জিনিসপত্র রাখতে শুরু করেছি। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হচ্ছেনা।’’ অন্যদিকে নোভা বাসানো শহরের বাসিন্দা রেগিনাটো বলেছেন, তিনি সব হারিয়ে এখন বিপর্যস্ত। তার বাড়িতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্রান্দে দো সালের গভর্নর এদুয়ার্দো লেইতে জানিয়েছেন, রাজ্যের অন্তত ৬০টি শহর এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শহরগুলোতে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার পানি নেমে গেলে বিভিন্ন শহর থেকে ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সান্তা কাতারিনায় আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা জানিয়েছেন, তিনি ও তার সরকার সাধারণ মানুষের পাশে আছে। সরকার তাদের সবরকম সাহায্য করবে। আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা জানান, আরও বৃষ্টি হতে পারে এবং তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

এদিকে বন্যার কারণে বিচ্ছিন্ন এলাকায় পৌঁছাতে উদ্ধারকর্মীরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন। সংবাদমাধ্যম বলছে, বন্যা হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকে বলে মনে করা হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজিলের সাও পাওলো প্রদেশে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছিলেন। এছাড়া গত বছর দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রেসিফ শহরের কাছে প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধস ও কাদার স্রোতে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়।