Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভা পদত্যাগ করেছেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান হারজে হালেভির টেবিলে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন। মেজর জেনারেল আহরন হালিভা ৩৮ বছর ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে এই তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ এক গণমাধ্যম।

খবরে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেন তিনি। অক্টোবরে দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন এই সামরিক কর্মকর্তা।
সামরিক বাহিনী একটি বিবৃতিতে জানায়, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে ৭ অক্টোবরের ঘটনার দায়ভার মাথায় নিয়ে মেজর জেনারেল আহারন হালিভা তাকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

সপ্তম মাসে পৌঁছানো ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এই যুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন মানবিক সংকট তৈরি করেছে। যুদ্ধে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।

পদত্যাগ পত্রে জেনারেল আহারন হালিভা লিখেছেন, গোয়েন্দা অধিদপ্তর আমার নেতৃত্বাধীন কমান্ডের ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছিল তা সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি। সেই কালো দিনের ব্যর্থতার দায় আমি নিচ্ছি। আমি চিরদিন এই যুদ্ধের ভয়ংকর যন্ত্রণা বহন করব।

তিনি চিফ অব জেনারেল স্টাফের সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। বলা হয়, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার প্রক্রিয়ায় মেজর জেনারেল আহারন হালিভার উত্তরসূরী নিয়োগ দেওয়া হলে তিনি পদত্যাগ করবেন এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) থেকে অবসর নেবেন।

গত অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই চরম সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দা বিভাগ। এমনকি এই হামলা ঠেকাতে না পারার দায় পর্যন্ত স্বীকার করেন আহারন হালিভা। এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে এবার গোয়েন্দা প্রধানের পদ থেকেই সরে দাঁড়ালেন তিনি।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগ

প্রকাশের সময় : ০৩:৪০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভা পদত্যাগ করেছেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান হারজে হালেভির টেবিলে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন। মেজর জেনারেল আহরন হালিভা ৩৮ বছর ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে এই তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ এক গণমাধ্যম।

খবরে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেন তিনি। অক্টোবরে দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন এই সামরিক কর্মকর্তা।
সামরিক বাহিনী একটি বিবৃতিতে জানায়, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে ৭ অক্টোবরের ঘটনার দায়ভার মাথায় নিয়ে মেজর জেনারেল আহারন হালিভা তাকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

সপ্তম মাসে পৌঁছানো ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এই যুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন মানবিক সংকট তৈরি করেছে। যুদ্ধে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।

পদত্যাগ পত্রে জেনারেল আহারন হালিভা লিখেছেন, গোয়েন্দা অধিদপ্তর আমার নেতৃত্বাধীন কমান্ডের ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছিল তা সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি। সেই কালো দিনের ব্যর্থতার দায় আমি নিচ্ছি। আমি চিরদিন এই যুদ্ধের ভয়ংকর যন্ত্রণা বহন করব।

তিনি চিফ অব জেনারেল স্টাফের সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। বলা হয়, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার প্রক্রিয়ায় মেজর জেনারেল আহারন হালিভার উত্তরসূরী নিয়োগ দেওয়া হলে তিনি পদত্যাগ করবেন এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) থেকে অবসর নেবেন।

গত অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই চরম সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দা বিভাগ। এমনকি এই হামলা ঠেকাতে না পারার দায় পর্যন্ত স্বীকার করেন আহারন হালিভা। এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে এবার গোয়েন্দা প্রধানের পদ থেকেই সরে দাঁড়ালেন তিনি।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।