Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাসী নয় : মেজর হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাসী নয়। তারা হয়ত ভাবেন, দুই-একটা মিছিল করলে দেশ ঠিক হয়ে যাবে, এগুলো এদের গুরুরা হয়ত শেখান।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ‘মহান ৭ নভেম্বরের আকাঙ্ক্ষা ও আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

তিনি বলেন, তারা (ছাত্র নেতারা) মনে করে, রাজপথে দুইটা মিছিল করলেই দেশ ঠিক হয়ে যাবে। তাদের গুরুরা তাদের শেখায়, ফার্স্ট রিপাবলিক, সেকেন্ড রিপাবলিক। রিপাবলিক একটাই, যেটা আমরা ৭১ সালে সৃষ্টি করেছিলাম। এখানে সেকেন্ড, থার্ড রিপাবলিক এসব আতেল জাতীয় কথাবার্তা। এগুলোর এখন প্রয়োজন নেই। সাধারণ মানুষ বুঝে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনী সংস্কার করে নির্বাচন দেন।

সমন্বয়কদের কথায় দুঃখ পেয়েছেন জানিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, দুই দিন আগেই ছাত্রদের এক বড় নেতা বলেছেন, ২ হাজার লোক ভোট দেওয়ার জন্য জীবন দেয়নি। ভোট এতো সোজা? ভোটই তো গণতন্ত্রের প্রতীক। ভোটের জন্যই তো ৭১ সালে যুদ্ধ করেছি। এই লড়াই তো হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, বাক-স্বাধীনতার জন্য, জনগণের মৌলিক অধিকারের জন্য। যার প্রথম পদক্ষেপ হলো একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। আর এরা বলতেছে, ভোটের জন্য স্বাধীন হয়নি। তাহলে কিসের জন্য এই যুদ্ধ? কিসের জন্য আমাদের এই আত্মদান? ভোট হেলাফেলার বস্তু? অর্থাৎ এরা গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাসী নয়।

সংস্কার করবেন, সংস্কার তো কোথাও দেখছি না উল্লেখ করে মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অবশ্যই যারা হত্যা, গুম, লুন্ঠন করেছে, যারা ভোট কারচুপি করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এসময় তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালায় না, কত বড় বড় কথা বলেছেন অথচ এক কাপড়ে পালাতে হয়েছে। কি হলো? জনতার শক্তিকে সমীহ করতে শিখেন। কত বড় শক্তি ছিলো, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছেন তারপরও কোন অনুশোচনা দেখছি না।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) আবারও ক্ষমতায় যেতে চায়। কি করবেন? আরও মানুষ হত্যা করবেন? আরও টাকা লুট করবেন? আপনাদের বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন গ্রহণ করবে না। সাহস থাকলে আসুন, দুই হাত জোড় করে বলুন ক্ষমা চায়। ক্ষমা চেয়ে বলুন মানুষ হত্যা করেছি, গুম, খুন লুন্ঠন করেছি। কিন্তু ডিসেম্বরেই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দিবেন এই ধরনের উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না।

ইউনূস সরকারকে সমর্থন করেছি, ভবিষ্যতেও করবো জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আজীবন ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবেন না। ১০-২০ বছর ক্ষমতায় থাকার চিন্তা করবেন না। ইতোমধ্যে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে, পুলিশ বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসেনি। যারা শেখ হাসিনার কুশীলব ছিলেন তারা বহাল তবিয়তে যার যার জায়গায় বসে আছেন। এদের দ্রুত সরানো বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্র্বতী সরকার করা হয়েছে। এই সরকারের প্রধান কাজ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ‘লঙ্কায় যায় সেই রাবণ হয়’ । তারা দীর্ঘদিন ২০ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান। ইতোমধ্যেই সরকারের উপদেষ্টা পদে আওয়ামী ঘরনার বিভিন্ন লোক ঢুকে গেছেন। ছাত্ররা আমাদের সন্তান সমতুল্য, তাদের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয়, দেশটা তারাই স্বাধীন করেছেন, আর কেউ জীবন দেননি। বিএনপিসহ বিরোধীদল এগুলোর হাজার নেতাকর্মী জীবন দিলেন তাদের হিসাব-নিকাশ কে করবেন?

জিয়াউর রহমান জনগণের চাওয়ার কারণে রাজনীতিতে এসেছে বলে উল্লেখ করে মেজর হাফিজ বলেন, ৭ নভেম্বর বিপ্লবের পর রাজনৈতিক সংকট ছিল দেশে। কেউ তা পূরণ করতে পারেনি। যার কারণে জনগণের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে তিনি ২ বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারবে না : গয়েশ্বর

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাসী নয় : মেজর হাফিজ

প্রকাশের সময় : ০৩:১৪:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাসী নয়। তারা হয়ত ভাবেন, দুই-একটা মিছিল করলে দেশ ঠিক হয়ে যাবে, এগুলো এদের গুরুরা হয়ত শেখান।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ‘মহান ৭ নভেম্বরের আকাঙ্ক্ষা ও আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

তিনি বলেন, তারা (ছাত্র নেতারা) মনে করে, রাজপথে দুইটা মিছিল করলেই দেশ ঠিক হয়ে যাবে। তাদের গুরুরা তাদের শেখায়, ফার্স্ট রিপাবলিক, সেকেন্ড রিপাবলিক। রিপাবলিক একটাই, যেটা আমরা ৭১ সালে সৃষ্টি করেছিলাম। এখানে সেকেন্ড, থার্ড রিপাবলিক এসব আতেল জাতীয় কথাবার্তা। এগুলোর এখন প্রয়োজন নেই। সাধারণ মানুষ বুঝে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনী সংস্কার করে নির্বাচন দেন।

সমন্বয়কদের কথায় দুঃখ পেয়েছেন জানিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, দুই দিন আগেই ছাত্রদের এক বড় নেতা বলেছেন, ২ হাজার লোক ভোট দেওয়ার জন্য জীবন দেয়নি। ভোট এতো সোজা? ভোটই তো গণতন্ত্রের প্রতীক। ভোটের জন্যই তো ৭১ সালে যুদ্ধ করেছি। এই লড়াই তো হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, বাক-স্বাধীনতার জন্য, জনগণের মৌলিক অধিকারের জন্য। যার প্রথম পদক্ষেপ হলো একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। আর এরা বলতেছে, ভোটের জন্য স্বাধীন হয়নি। তাহলে কিসের জন্য এই যুদ্ধ? কিসের জন্য আমাদের এই আত্মদান? ভোট হেলাফেলার বস্তু? অর্থাৎ এরা গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাসী নয়।

সংস্কার করবেন, সংস্কার তো কোথাও দেখছি না উল্লেখ করে মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অবশ্যই যারা হত্যা, গুম, লুন্ঠন করেছে, যারা ভোট কারচুপি করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এসময় তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালায় না, কত বড় বড় কথা বলেছেন অথচ এক কাপড়ে পালাতে হয়েছে। কি হলো? জনতার শক্তিকে সমীহ করতে শিখেন। কত বড় শক্তি ছিলো, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছেন তারপরও কোন অনুশোচনা দেখছি না।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) আবারও ক্ষমতায় যেতে চায়। কি করবেন? আরও মানুষ হত্যা করবেন? আরও টাকা লুট করবেন? আপনাদের বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন গ্রহণ করবে না। সাহস থাকলে আসুন, দুই হাত জোড় করে বলুন ক্ষমা চায়। ক্ষমা চেয়ে বলুন মানুষ হত্যা করেছি, গুম, খুন লুন্ঠন করেছি। কিন্তু ডিসেম্বরেই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দিবেন এই ধরনের উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না।

ইউনূস সরকারকে সমর্থন করেছি, ভবিষ্যতেও করবো জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আজীবন ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবেন না। ১০-২০ বছর ক্ষমতায় থাকার চিন্তা করবেন না। ইতোমধ্যে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে, পুলিশ বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসেনি। যারা শেখ হাসিনার কুশীলব ছিলেন তারা বহাল তবিয়তে যার যার জায়গায় বসে আছেন। এদের দ্রুত সরানো বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্র্বতী সরকার করা হয়েছে। এই সরকারের প্রধান কাজ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ‘লঙ্কায় যায় সেই রাবণ হয়’ । তারা দীর্ঘদিন ২০ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান। ইতোমধ্যেই সরকারের উপদেষ্টা পদে আওয়ামী ঘরনার বিভিন্ন লোক ঢুকে গেছেন। ছাত্ররা আমাদের সন্তান সমতুল্য, তাদের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয়, দেশটা তারাই স্বাধীন করেছেন, আর কেউ জীবন দেননি। বিএনপিসহ বিরোধীদল এগুলোর হাজার নেতাকর্মী জীবন দিলেন তাদের হিসাব-নিকাশ কে করবেন?

জিয়াউর রহমান জনগণের চাওয়ার কারণে রাজনীতিতে এসেছে বলে উল্লেখ করে মেজর হাফিজ বলেন, ৭ নভেম্বর বিপ্লবের পর রাজনৈতিক সংকট ছিল দেশে। কেউ তা পূরণ করতে পারেনি। যার কারণে জনগণের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে তিনি ২ বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন।