নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক তাদের রাজনৈতিক হালে পানি পাওয়ার অপচেষ্টা মাত্র, এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি নেতারা যখনই বেকায়দায় পড়েছেন বা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন, তখনই সস্তা ইস্যু তৈরির জন্য ভারত বিরোধিতার রব তুলেছেন।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি কঠিন লড়াইয়ে রয়েছি, আমাদের এখন খুব সহজ সময় যাচ্ছে না। আবার এই বিএনপি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. মঈন খানেরা যখন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তখনই সস্তা ইস্যু তৈরি করে ভারত বিরোধিতা করে ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলেছেন। এই ভারত পণ্য বর্জন, ভারত বিরোধিতা হলো ওদের রাজনৈতিক হালে পানি পাওয়ার জন্য অপচেষ্টা মাত্র। কিন্তু তারা জানে না, জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া ভারত ইস্যুকে ঘিরে যে ‘ভারত জুজুর রাজনীতি’ করেছিল সেই বাংলাদেশ আজকে আর নেই।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে খুনিদের অবাধ বিচরণ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। যাদের আমরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত করেছিলাম, সেই ঘাতকদের অবাধ চারণভূমিতে পরিণত করেছিল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদরা। আজকের দিনে বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আবার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জামায়াত-শিবির কিন্তু বসে নেই, ছাত্রলীগকে মনে রাখতে হবে ওরা নিঃশেষ হয়ে যায়নি।
স্বাধীনতার ঘোষক প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, যারা বলেন, হুইসেল দিয়েছেন আর স্বাধীনতা এসে গেছে। যারা ৫২, ৫৪ দেখেনি; যেই জিয়াউর রহমান ৫২, ৫৪, ৫৬, ৫৮, ৬৬, ৬৯ এবং ৭০ এর নির্বাচন দেখেনি, সেই জিয়াউর রহমান হঠাৎ করে এসে চট্টগ্রামের কালুরঘাটের বেতার কেন্দ্রে এসে স্বাধীনতার ঘোষণা করে ঘোষক হয়ে গেলেন। আমি একমাত্র মানুষ যে মাইকিং করে বরিশালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা মাইকিং করেছিলাম। যদি জিয়াউর রহমান ঘোষক হয়, অন বিহ্যাফ অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই স্বাধীনতার কথা বলে, তাহলে কি জাহাঙ্গীর কবির নানকও ঘোষক? তাহলে কি কল রেডিও ঘোষক? এ হলো ইতিহাস বিকৃতি। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা দীর্ঘ একটা কালো অধ্যায় পার করেছি।
জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, ‘যারা চুয়ান্ন দেখেনি তাদের অনেকে বলেন- হুইসেল বাতি দিয়েছেন আর স্বাধীনতা এসে গিয়েছে। জিয়াউর রহমান বায়ান্ন দেখে নাই, জিয়াউর রহমান চুয়ান্ন দেখে নাই, তিনি ছাপ্পান্ন দেখে নাই। জিয়াউর রহমান আটান্ন দেখে নাই। জিয়াউর রহমান ছেষট্টি দেখে নাই, তিনি ঊনসত্তর দেখে নাই। জিয়াউর রহমান সত্তরের নির্বাচনও দেখেন নাই। সেই জিয়াউর রহমান হঠাৎ করে এসে চট্টগ্রাম কালুরঘাট থেকে ঘোষণা করেই ঘোষক হয়ে গেলেন?
এসময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তানভীর হাসান সৈকত বক্তব্য রাখেন। এছাড়া এতে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।