Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৃষ্টিতে ধসে গেছে সেতুর দুপাশের সংযোগ সড়ক, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের মাঝগ্রামে চিকনাই নদীর শাখার উপর নবনির্মিত সেতুর নির্মাণকাজ শেষের দেড় মাসের মাথায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সংযোগ সড়কে। গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ধসে গেছে সেতুর দুপাশের সংযোগ সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। দ্রুত মেরামত করা না হলে বৃষ্টিতে যেকোনো সময় সড়কটি একেবারে ভেঙে চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মাঝগ্রামে চিকনাই নদীর শাখার উপর পুরাতন সেতু ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।

সেতুটির দুই পাশের মাজগ্রাম, রতনপুর, কুবিরদিয়ার, দাঁথিয়া কয়রাপাড়া, বাহাদুরপুর, মথুরাপুর, আনকুটিয়া, অমৃতকুন্ডাসহ অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ এই পথে যাতায়াত করেন। আশপাশে রয়েছে একটি দাখিল মাদরাসা, একটি হাফিজিয়া মাদরাসা, কবরস্থান, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, অমৃতকুন্ডা হাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৮০ লাখ ২১ হাজার ৭১১ টাকা ব্যয়ে মুলগ্রাম ইউনিয়নের মাঝগ্রামে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। কাজটির মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছিল পাবনার সুজানগরের মেসার্স তীর্থ করবি এন্টারপ্রাইজ। পরে তার কাছ থেকে নিয়ে কাজটি সম্পন্ন করেছেন চাটমোহরের ঠিকাদার মেসার্স সাফায়েত এন্টারপ্রাইজ।

মাঝগ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম দুলু বলেন, সরকার জনগণের সুবিধার জন্য কাজ করে। কিন্তু ঠিকাদার কিভাবে কাজ করলো আমরা বুঝলাম না। ব্রিজ করল কিন্তু সংযোগ সড়কটা ঠিকমতো করল না। দেড় মাসের মধ্যে একটু বৃষ্টিতেই সড়কটা ভেঙে। আর একটু বৃষ্টি হলে তো চলাচলই করা যাবে না।

ময়েজ মোল্লা বলেন, গত ১৭ মে কাজ শেষ করে চলাচল শুরু হয়। কিন্তু জুলাই মাসেই দুপাশের সংযোগ রাস্তা ভেঙে যেতে শুরু করে। ইট খুলে নদীতে পড়ে যাচ্ছে। ভালোভাবে কাজ করলে এমন হতো না।

সাবান আলী বলেন, এ পথ দিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। অমৃতকুন্ডা হাটে যায় মানুষ। ব্রিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। কিন্তু ব্রিজ ভালো হলেও সংযোগ সড়কটা ঠিকমতো না করে দায়সারাভাবে কাজ করেছে। এজন্য কিছুদিনের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে। আবার পুরাতন ব্রিজটা ভাঙার পর রড খুলে নিয়ে গেলেও অন্যান্য অংশ নদীর মধ্যে ফেলে রেখে গেছে।

এলাকাবাসী বলছে, সংযোগ সড়কের দুই পাশে স্থায়ী গাইডওয়াল নির্মাণ না করে যেনতেনভাবে মেরামত করা হলে আবারও ধ্বসে যেতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামীম এহসান বলেন, কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি সরে গিয়ে সড়কের কিছুটা ক্ষতিসাধন হয়েছে। তবে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমি ছুটিতে আছি। ফিরে এসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সাফায়েত এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল ইসলাম নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৃষ্টিতে সংযোগ সড়কের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য ঘটনা পরিদর্শন করেছেন। বৃষ্টি থামলে একটা ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি কি করা যায়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বৃষ্টিতে ধসে গেছে সেতুর দুপাশের সংযোগ সড়ক, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

প্রকাশের সময় : ০১:৪১:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের মাঝগ্রামে চিকনাই নদীর শাখার উপর নবনির্মিত সেতুর নির্মাণকাজ শেষের দেড় মাসের মাথায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সংযোগ সড়কে। গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ধসে গেছে সেতুর দুপাশের সংযোগ সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। দ্রুত মেরামত করা না হলে বৃষ্টিতে যেকোনো সময় সড়কটি একেবারে ভেঙে চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মাঝগ্রামে চিকনাই নদীর শাখার উপর পুরাতন সেতু ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।

সেতুটির দুই পাশের মাজগ্রাম, রতনপুর, কুবিরদিয়ার, দাঁথিয়া কয়রাপাড়া, বাহাদুরপুর, মথুরাপুর, আনকুটিয়া, অমৃতকুন্ডাসহ অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ এই পথে যাতায়াত করেন। আশপাশে রয়েছে একটি দাখিল মাদরাসা, একটি হাফিজিয়া মাদরাসা, কবরস্থান, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, অমৃতকুন্ডা হাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৮০ লাখ ২১ হাজার ৭১১ টাকা ব্যয়ে মুলগ্রাম ইউনিয়নের মাঝগ্রামে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। কাজটির মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছিল পাবনার সুজানগরের মেসার্স তীর্থ করবি এন্টারপ্রাইজ। পরে তার কাছ থেকে নিয়ে কাজটি সম্পন্ন করেছেন চাটমোহরের ঠিকাদার মেসার্স সাফায়েত এন্টারপ্রাইজ।

মাঝগ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম দুলু বলেন, সরকার জনগণের সুবিধার জন্য কাজ করে। কিন্তু ঠিকাদার কিভাবে কাজ করলো আমরা বুঝলাম না। ব্রিজ করল কিন্তু সংযোগ সড়কটা ঠিকমতো করল না। দেড় মাসের মধ্যে একটু বৃষ্টিতেই সড়কটা ভেঙে। আর একটু বৃষ্টি হলে তো চলাচলই করা যাবে না।

ময়েজ মোল্লা বলেন, গত ১৭ মে কাজ শেষ করে চলাচল শুরু হয়। কিন্তু জুলাই মাসেই দুপাশের সংযোগ রাস্তা ভেঙে যেতে শুরু করে। ইট খুলে নদীতে পড়ে যাচ্ছে। ভালোভাবে কাজ করলে এমন হতো না।

সাবান আলী বলেন, এ পথ দিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। অমৃতকুন্ডা হাটে যায় মানুষ। ব্রিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। কিন্তু ব্রিজ ভালো হলেও সংযোগ সড়কটা ঠিকমতো না করে দায়সারাভাবে কাজ করেছে। এজন্য কিছুদিনের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে। আবার পুরাতন ব্রিজটা ভাঙার পর রড খুলে নিয়ে গেলেও অন্যান্য অংশ নদীর মধ্যে ফেলে রেখে গেছে।

এলাকাবাসী বলছে, সংযোগ সড়কের দুই পাশে স্থায়ী গাইডওয়াল নির্মাণ না করে যেনতেনভাবে মেরামত করা হলে আবারও ধ্বসে যেতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামীম এহসান বলেন, কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি সরে গিয়ে সড়কের কিছুটা ক্ষতিসাধন হয়েছে। তবে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমি ছুটিতে আছি। ফিরে এসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সাফায়েত এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল ইসলাম নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৃষ্টিতে সংযোগ সড়কের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য ঘটনা পরিদর্শন করেছেন। বৃষ্টি থামলে একটা ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি কি করা যায়।