Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের উড়িয়ে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড জয়

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩
  • ২০৫ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ইংল্যান্ডের বোলারদের পিটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যে রানপাহাড় গড়ে, তারপর আসলে লড়াই করা কঠিনই ছিল জস বাটলারদের জন্য। তবে ৪০০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এভাবে নাজেহাল হবে ইংলিশরা, সমর্থকরা নিশ্চয়ই সেটাও ভাবেননি।

তারা বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অন্ততপক্ষে লড়াইটা তো করতে পারতো। সেটাও হলো না! ইংল্যান্ডকে ২২৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের লজ্জায় ডুবালো প্রোটিয়ারা। ৪ ম্যাচে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় জয়, অন্যদিকে সমান ম্যাচে তৃতীয় হার ইংলিশদের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের তালিকায় আট নম্বরে জায়গা পেয়েছে ইংলিশদের লজ্জার এই হার।

শনিবার (২১ অক্টোবর) ওয়াংখেড়েতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৯৯ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা।

৪০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। প্রথম থেকেই দেখেশুনে খেলেন তারা। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তাদের জুটি। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই ওপেনিং জুটি ভাঙেন লুঙ্গি এনগিডি। তার এক্সট্রা বাউন্স বলে ডুসেনের তালুবন্দী হন বেয়ারস্টো। সাজঘরে ফেরার আগে ১০ করেন তিনি।

দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট করতে আসে জো রুটও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। দলীয় ২৩ রানে জানসেনের বলে মিলারকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার। এরপর ইংলিশ শিবিরে ব্যাটিংয়ে চলে আসা যাবার মিছিল। ৪৫ রানের ভিতর হারিয়ে বসে আরও চার উইকেট। মালান ৬, বেন স্টোক ৫, জস বাটলার ১৫ ও হ্যারি ব্রুক ১৭ করে সাজঘরে ফিরলে ম্যাচ থেকে এক প্রকার ছিটকে যায় ইংল্যান্ড।

পরে ক্রিস উড ও গাস অ্যাটকিনসনের ৭০ রানের জুটি হারের ব্যবধান কমিয়েছে ইংলিশদের। ম্যাচের ২৩ ওভারের গাস অ্যাটকিনসনের স্ট্যাম্প ভাঙেন কেশব মহারাজ। এতে ইংলিশদের ইনিংস থেমে যায় ১৭০ রানে। প্রোটিয়াদের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন জেরার্ল্ড কোয়েৎজে।

ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। ফিল্ডিং নিয়ে শুরুটা দারুণ হয় ইংলিশদের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে পাঠান ইনফর্ম ওপেনার কুইন্টন ডি কককে। রেস টপলির বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। যদিও ডি ককের উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে অধিনায়ক বাটলারের দক্ষতার তারিফ করতেই হয়। আম্পায়ার জোড়ালো আবেদনে সাড়া না দিলে আত্মবিশ্বাসী বাটলার দ্রুতই রিভিউ নেন। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল ডি ককের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে যায়। অথচ প্রথম বলেই চার মেরে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন ডি কক।

ডি ককের বিদায়ের পরও রানের চাকা সচল ছিল প্রোটিয়াদের। আরেক ওপেনার রেজা হেনড্রিকসের সঙ্গে তিন নম্বরে নামা ডুসেন ১২১ রানের জুটি গড়েন। আদিল রশীদের বলে বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ডুসেন করেন ৬০ রান। ৬১ বলের মোকাবিলায় তিনি ৮টি চার মারেন। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার অসুস্থতার কারণে এ ম্যাচে সুযোগ পান হেনড্রিকস। সুযোগটা কী দারুণই না কাজে লাগালেন তিনি। আগ্রাসী ব্যাটিং করা হেনড্রিকস মাত্র ১৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল নয়টি চার ও তিনটি ছ্ক্কায়।

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মার্করাম এই ম্যাচে অর্ধশতকের আগেই টপলির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ৪২ রানে। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ বোলারদের ওপর শুরুতেই চড়াও হন হেনরিখ ক্লাসেন। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে খেই হারায় মার্ক উড-উইলিরা। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন মার্কো জানসেন। এই জুটিতে আসে ১৫১ রান।

৬১ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ক্লাসেন, অ্যাটকিনশনের বলে আউট হয়ে ফেরার আগে ১০৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। মাত্র ৬৭ বলের ইনিংসটি তিনি ১২ টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজান। তবে শেষ ওভারে অ্যাটকিনশনের কামব্যাকের কারণে প্রোটিয়াদের ইনিংস আরও বড় হয়নি। ৫০তম ওভারে তিনি খরচ করেন মাত্র ৫ রান। ওই ওভারে উইকেট তুলে নেন দুইটি। অন্য পাশে শেষ পর্যন্ত জানসেন অপরাজিত থাকেন ৭৫ রানে। ৪২ বলের ইনিংসে তিনি ছয়টি ছক্কা এবং তিনটি চার মারেন।

৮৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সেরা বোলার ছিলেন রিস টপলি। আদিল রশিদ ও অ্যাটকিনসন দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে উঠে এসেছে প্রোটিয়ারা। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত শুরু করা প্রোটিয়ার প্রথম দু’ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়াকে বড় ব্যবধানে হারায়। লঙ্কানদের বিপক্ষে ১০২ রানের পর অজিদের বিপক্ষে জয় পায় ১৩৪ রানে। তবে উড়তে থাকা প্রোটিয়াদের তৃতীয় ম্যাচে মাটিতে নামায় নেদারল্যান্ডস। ডাচরা ৩৮ রানে হারায় আফ্রিকাকে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ডাকসু নির্বাচনে জয়ী প্রথম দম্পতি রায়হান-সালমা

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের উড়িয়ে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড জয়

প্রকাশের সময় : ১০:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ইংল্যান্ডের বোলারদের পিটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যে রানপাহাড় গড়ে, তারপর আসলে লড়াই করা কঠিনই ছিল জস বাটলারদের জন্য। তবে ৪০০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এভাবে নাজেহাল হবে ইংলিশরা, সমর্থকরা নিশ্চয়ই সেটাও ভাবেননি।

তারা বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অন্ততপক্ষে লড়াইটা তো করতে পারতো। সেটাও হলো না! ইংল্যান্ডকে ২২৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের লজ্জায় ডুবালো প্রোটিয়ারা। ৪ ম্যাচে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় জয়, অন্যদিকে সমান ম্যাচে তৃতীয় হার ইংলিশদের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের তালিকায় আট নম্বরে জায়গা পেয়েছে ইংলিশদের লজ্জার এই হার।

শনিবার (২১ অক্টোবর) ওয়াংখেড়েতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৯৯ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা।

৪০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। প্রথম থেকেই দেখেশুনে খেলেন তারা। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তাদের জুটি। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই ওপেনিং জুটি ভাঙেন লুঙ্গি এনগিডি। তার এক্সট্রা বাউন্স বলে ডুসেনের তালুবন্দী হন বেয়ারস্টো। সাজঘরে ফেরার আগে ১০ করেন তিনি।

দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট করতে আসে জো রুটও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। দলীয় ২৩ রানে জানসেনের বলে মিলারকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার। এরপর ইংলিশ শিবিরে ব্যাটিংয়ে চলে আসা যাবার মিছিল। ৪৫ রানের ভিতর হারিয়ে বসে আরও চার উইকেট। মালান ৬, বেন স্টোক ৫, জস বাটলার ১৫ ও হ্যারি ব্রুক ১৭ করে সাজঘরে ফিরলে ম্যাচ থেকে এক প্রকার ছিটকে যায় ইংল্যান্ড।

পরে ক্রিস উড ও গাস অ্যাটকিনসনের ৭০ রানের জুটি হারের ব্যবধান কমিয়েছে ইংলিশদের। ম্যাচের ২৩ ওভারের গাস অ্যাটকিনসনের স্ট্যাম্প ভাঙেন কেশব মহারাজ। এতে ইংলিশদের ইনিংস থেমে যায় ১৭০ রানে। প্রোটিয়াদের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন জেরার্ল্ড কোয়েৎজে।

ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। ফিল্ডিং নিয়ে শুরুটা দারুণ হয় ইংলিশদের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে পাঠান ইনফর্ম ওপেনার কুইন্টন ডি কককে। রেস টপলির বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। যদিও ডি ককের উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে অধিনায়ক বাটলারের দক্ষতার তারিফ করতেই হয়। আম্পায়ার জোড়ালো আবেদনে সাড়া না দিলে আত্মবিশ্বাসী বাটলার দ্রুতই রিভিউ নেন। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল ডি ককের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে যায়। অথচ প্রথম বলেই চার মেরে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন ডি কক।

ডি ককের বিদায়ের পরও রানের চাকা সচল ছিল প্রোটিয়াদের। আরেক ওপেনার রেজা হেনড্রিকসের সঙ্গে তিন নম্বরে নামা ডুসেন ১২১ রানের জুটি গড়েন। আদিল রশীদের বলে বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ডুসেন করেন ৬০ রান। ৬১ বলের মোকাবিলায় তিনি ৮টি চার মারেন। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার অসুস্থতার কারণে এ ম্যাচে সুযোগ পান হেনড্রিকস। সুযোগটা কী দারুণই না কাজে লাগালেন তিনি। আগ্রাসী ব্যাটিং করা হেনড্রিকস মাত্র ১৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল নয়টি চার ও তিনটি ছ্ক্কায়।

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মার্করাম এই ম্যাচে অর্ধশতকের আগেই টপলির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ৪২ রানে। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ বোলারদের ওপর শুরুতেই চড়াও হন হেনরিখ ক্লাসেন। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে খেই হারায় মার্ক উড-উইলিরা। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন মার্কো জানসেন। এই জুটিতে আসে ১৫১ রান।

৬১ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ক্লাসেন, অ্যাটকিনশনের বলে আউট হয়ে ফেরার আগে ১০৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। মাত্র ৬৭ বলের ইনিংসটি তিনি ১২ টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজান। তবে শেষ ওভারে অ্যাটকিনশনের কামব্যাকের কারণে প্রোটিয়াদের ইনিংস আরও বড় হয়নি। ৫০তম ওভারে তিনি খরচ করেন মাত্র ৫ রান। ওই ওভারে উইকেট তুলে নেন দুইটি। অন্য পাশে শেষ পর্যন্ত জানসেন অপরাজিত থাকেন ৭৫ রানে। ৪২ বলের ইনিংসে তিনি ছয়টি ছক্কা এবং তিনটি চার মারেন।

৮৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সেরা বোলার ছিলেন রিস টপলি। আদিল রশিদ ও অ্যাটকিনসন দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে উঠে এসেছে প্রোটিয়ারা। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত শুরু করা প্রোটিয়ার প্রথম দু’ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়াকে বড় ব্যবধানে হারায়। লঙ্কানদের বিপক্ষে ১০২ রানের পর অজিদের বিপক্ষে জয় পায় ১৩৪ রানে। তবে উড়তে থাকা প্রোটিয়াদের তৃতীয় ম্যাচে মাটিতে নামায় নেদারল্যান্ডস। ডাচরা ৩৮ রানে হারায় আফ্রিকাকে।