স্পোর্টস ডেস্ক :
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। এরপরেই দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতায় ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সিরিজের শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের কাছে বিশাল ব্যবধানে হেরে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বেনোনির উইলোমোর পার্কে বাংলাদেশকে ২১৬ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মেয়েদের ওয়ানডেতে রানের হিসাবে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার। এর আগে কিম্বারলিতে ২০১৮ সালে ১৫৪ রানের জয়টি ছিল সবচেয়ে বড়।
বাংলাদেশের সামনেও ছিল ইতিহাস গড়ার সুযোগ। এখন পর্যন্ত প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো জয়ের রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচ নিগার সুলতানার দল জিতেছিল ১১৬ রানে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ উইকেটের জয় নিয়ে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। ফলে গতকাল সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রোটিয়াদের একের পর এক গড়া রেকর্ডের নিচে চাপা পড়লো বাংলাদেশের ইতিহাস।
জবাব দিতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলেই শামীমা সুলতানার (৬) উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে ওভারে সাজঘরে ফেরেন তিনে নামা মুর্শিদা খাতুন (৮)। ফারজানা হক (৮) ও নিগার সুলতানা জ্যোতিও (৩) ইনিংস বড় করতে পারেননি। এতে করে দলীয় ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৬১ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়েন রিতু মনি ও ফাহিমা খাতুন। ম্যাচের সর্বোচ্চ জুটি এটিই। ১৭তম ওভারে ফাহিমা আউট হলে এই জুটি ভাঙে। ফেরার আগে ২৬ বলে ১৫ রান করে যান তিনি। এরপর খুব্র দ্রুত আউট হন স্বর্ণা আক্তার (৭)। এরপর দলীয় ৯৬ রানে এক প্রান্ত আগলে রাখা রিতু মনি আউট হলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে টাইগ্রেসদের ইনিংস।
ব্যক্তিগত ইনিংসে ৬৭ বলে চারটি চারের মারে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন রিতু। পরে একে একে সাজঘরের পথ ধরেন নাহিদা আক্তার (১১), রাবেয়া খান (০) ও মারুফা আক্তার (১)। বল হাতে প্রোটিয়া নারীদের হয়ে আয়াবঙ্গা খাকা ও নাদিন ডি ক্লার্ক নেন তিনটি করে উইকেট। আর দুই উইকেট ঝুলিতে তোলেন মারিজান্নে ক্যাপ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে রেকর্ডের পসরা সাজিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা। দুই ওপেনারের সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩১৬ রান তোলে স্বাগতিকেরা। মেয়েদের ওয়ানডে দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস হলেও এটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ডটিও দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০১৮ সালে পচেফস্ট্রুমে ৯ উইকেটে ২৭০ রান করেছিল দলটি।
প্রথম ৫ ওভার খানিক ধীরে খেললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভয়ঙ্কর হতে শুরু করে উলভার্ট-ব্রিটস জুটি। পাওয়ারপ্লের পর আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশকে কোনো সুযোগই দেননি এই দুই ব্যাটার। ১৯ ওভারের মাঝে ১০০ আর ৩০ ওভারের মাঝে আসে দুই শ’ রান। সেঞ্চুরি পেয়েছেন দু’জনেই। টাইগ্রেস দলপতি জ্যোতি উইকেটের আশায় একে একে ব্যবহার করেছেন ৭ বোলার। কিন্তু কেউই দিতে পারেননি কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু।
বাংলাদেশ প্রথম সফলতা পায় ইনিংসের ৪৩তম ওভারে। লরা উলভার্টকে বোল্ড করেন মারুফা আক্তার। ততক্ষণে লরার সংগ্রহ ১২৬। স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ২৪৩ রান। টিকতে পারেননি ব্রিটসও। ১১৮ রান করে দলীয় ২৫১ রানে রিতু মনির বলে স্ট্যাম্পিং হন তিনি। অ্যানিকি বসের সঙ্গে এরপর দ্রুত রান তোলেন শুন লুস। এই জুটি থেকে আসে ৪৮ রান। ২৯৮ রানে লুসকে ফেরান রাবেয়া। পরের বলেই আবারও ফেরান নাদিন ডি ক্লার্ককে।