নিজস্ব প্রতিবেদক :
ব্যবসা ও বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের উদারতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, লাল ফিতার দৌরাত্ম্য সরিয়ে দেওয়া হবে। (যে বিষয়ে) সিদ্ধান্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নও হবে।
শনিবার (১১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট- ২০২৩ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিবেশের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। সেটি আরও সংস্কার ও ব্যবসাবান্ধব করা হবে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য সরিয়ে দেওয়া হবে। (যে বিষয়ে) সিদ্ধান্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়ন হবে।
ব্যবসায়ীদের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মানসিকতা রাখার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হলে আমাদের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য আমি দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মানসিকতা নিয়ে এগোনোর অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি কোনো হতাশা শুনতে চাই না। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করব।
নিজস্ব অর্থায়নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ তাদের সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী তিনি বলেন, আমরা যে পারি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সেটা প্রমাণ করেছি। সেতুটি চালুর ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে শুধু রাজধানী ঢাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়নি, এর ফলে দেশের অর্থনীতিও বেগবান হবে।
রুপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। সকলের সহযোগিতায় বর্তমান সরকার গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তনে সক্ষম হয়েছে।
ব্যবসা ও বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের উদারতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিবেশের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। সেটি আরও সংস্কার ও ব্যবসাবান্ধব করা হবে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য সরিয়ে দেওয়া হবে। যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নও হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। করোনায় পুরো বিশ্ব থমকে গেলেও আমাদের অর্থনীতি থামেনি। ২০০৬ এর ৬০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি এখন ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, পোশাক খাতে বিশ্বে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। বেসরকারি খাতকে গুরত্ব না দিলে এতো কিছু করা সম্ভাব হতো না। ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২০তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। করোনায় পুরো বিশ্ব থমকে গেলেও আমাদের অর্থনীতি থামেনি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে উন্নয়নের রোল মডেল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর অভিঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বাণিজ্যিক অবরোধ বা পাল্টা অবরোধে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নকামী দেশেগুলোকে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন করেছে। শুধু আমাদের মতো দেশ না, উন্নত দেশগুলোও কিন্তু হিমশিম খাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিসহ মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের নেতাদের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার পন্থা খুঁজে বের করতে হবে এবং সেই পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে নিজেরা নিজেদের বাজার হারাবেন।
বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তুলে ধরার লক্ষ্যে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় এই ব্যবসায়িক সম্মেলন।
যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ সাতটি দেশের মন্ত্রী, ১২টি বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ১৭টি দেশের ২০০ টিরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতারা শীর্ষ এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত আছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।