Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে : শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এছাড়া নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার নির্দেশও দেন।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে দলের ৩০০ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

এসময় শেখ হাসিনা মনোনয়নে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে নেতাদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বিরোধীদল না আসা সাপেক্ষে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করতে প্রয়োজনে আসন উন্মুক্ত করা হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পরে। সেক্ষেত্রে একাধিক ডামি প্রার্থী রাখতে মত দেন দলীয় প্রধান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী জানান, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যদি কোনো আসনে জয়ী হয়, তাহলে বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলীয় প্রধান জানিয়েছেন। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা যে কোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবে বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন।

আরেক প্রার্থী জানান, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে প্রয়োজনে ডামি প্রার্থী রাখতে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। একইসঙ্গে নির্বাচনের সময় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতেও নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

ঢাকার একটি আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এক নেতা বলেন, নেত্রী বলেছেন, আপনারা সাড়ে তিন হাজারের মতো প্রার্থী। এর মধ্যে থেকে আপনারা আমাকে তিন শ নাম দেন। পরে সবাই নেত্রীকে দায়িত্ব দেন। আরেকটা হচ্ছে, ডামি প্রার্থী রাখতে বলছেন। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যেকোনো নেতা বা যেকোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবে বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন।

সাক্ষাৎ শেষে মনোনয়নপ্রত্যার্শী জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বলেছেন নির্বাচনকে উৎসব মুখর করতে হবে। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রত্যাশার জন্য বলেছেন। বলেছেন, ‘ভোটারদের গুরুত্ব দাও, তাদের কাছে ভোট চাও।’ ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তার অধিকার প্রয়োগ করে সেটাই তিনি বলেছেন।’

হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হাইকোর্টের আলোচিত আইনজীবী সায়েদুল হক চৌধুরী সুমন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বলেন, সবাইকে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। আরেকজন প্রার্থীকে দলের সঙ্গে রাখার জন্য বলেছেন এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন আসতে না পরে সেটি বলেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মনোনয়ন বঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে আপত্তি থাকবে না আওয়ামী লীগের। নির্বাচনকে উৎসব ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্যান্য দলের কেউ প্রার্থী হলে তাকেও সহযোগী ও উৎসাহ দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

জনগণের আওয়ামী লীগের শক্তি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, আমাদের কোনো মুরব্বি নেই, আমাদের মুরব্বি জনগণ। আমাদের অগণিত নেতাকর্মী আছে, জনগণের সমর্থন আছে। কারো তোষামোদি করে ক্ষমতায় থাকতে হবে সেই রাজনীতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা করে না।

বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকায় দেশের মানুষ শান্তি পেয়েছে, স্বস্তি পেয়েছে, মানুষ ভালো থাকতে শুরু করেছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদেরকে ভোট দিলে, আমরা সরকার গঠন করতে পারলে উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।

সবার জন্য কাজ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করছি। দলমত নির্বিশেষে সবার দায়িত্ব আমার। তারা আমার পরিবার।

বিএনপি দেশের মানুষের কল্যাণ চায় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ওপর তাদের আস্থা-বিশ্বাস নেই। সেজন্য তারা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে।

নাশকতা এবং অগ্নি-সন্ত্রাসের বিষয়ে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত দুষ্ট-চক্র যেন মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

এর আগে সকাল থেকেই গণভবনের প্রবেশ পথে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মতবিনিময় করতে সকাল থেকে নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে সারিবদ্ধভাবে গণভবনে প্রবেশ করেন। নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে ভেবেই উচ্ছ্বসিত ছিলেন তারা।

মোট ৩ হাজার ৩৬২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী আজ গণভবনে এসেছেন। দিনব্যাপী সভা শেষে বিকাল ৪টায় সেখান থেকেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক চার লেন দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন 

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে : শেখ হাসিনা

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৫:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এছাড়া নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার নির্দেশও দেন।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে দলের ৩০০ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

এসময় শেখ হাসিনা মনোনয়নে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে নেতাদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বিরোধীদল না আসা সাপেক্ষে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করতে প্রয়োজনে আসন উন্মুক্ত করা হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পরে। সেক্ষেত্রে একাধিক ডামি প্রার্থী রাখতে মত দেন দলীয় প্রধান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী জানান, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যদি কোনো আসনে জয়ী হয়, তাহলে বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলীয় প্রধান জানিয়েছেন। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা যে কোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবে বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন।

আরেক প্রার্থী জানান, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে প্রয়োজনে ডামি প্রার্থী রাখতে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। একইসঙ্গে নির্বাচনের সময় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতেও নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

ঢাকার একটি আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এক নেতা বলেন, নেত্রী বলেছেন, আপনারা সাড়ে তিন হাজারের মতো প্রার্থী। এর মধ্যে থেকে আপনারা আমাকে তিন শ নাম দেন। পরে সবাই নেত্রীকে দায়িত্ব দেন। আরেকটা হচ্ছে, ডামি প্রার্থী রাখতে বলছেন। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যেকোনো নেতা বা যেকোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবে বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন।

সাক্ষাৎ শেষে মনোনয়নপ্রত্যার্শী জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বলেছেন নির্বাচনকে উৎসব মুখর করতে হবে। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রত্যাশার জন্য বলেছেন। বলেছেন, ‘ভোটারদের গুরুত্ব দাও, তাদের কাছে ভোট চাও।’ ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তার অধিকার প্রয়োগ করে সেটাই তিনি বলেছেন।’

হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হাইকোর্টের আলোচিত আইনজীবী সায়েদুল হক চৌধুরী সুমন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বলেন, সবাইকে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। আরেকজন প্রার্থীকে দলের সঙ্গে রাখার জন্য বলেছেন এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন আসতে না পরে সেটি বলেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মনোনয়ন বঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে আপত্তি থাকবে না আওয়ামী লীগের। নির্বাচনকে উৎসব ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্যান্য দলের কেউ প্রার্থী হলে তাকেও সহযোগী ও উৎসাহ দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

জনগণের আওয়ামী লীগের শক্তি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, আমাদের কোনো মুরব্বি নেই, আমাদের মুরব্বি জনগণ। আমাদের অগণিত নেতাকর্মী আছে, জনগণের সমর্থন আছে। কারো তোষামোদি করে ক্ষমতায় থাকতে হবে সেই রাজনীতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা করে না।

বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকায় দেশের মানুষ শান্তি পেয়েছে, স্বস্তি পেয়েছে, মানুষ ভালো থাকতে শুরু করেছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদেরকে ভোট দিলে, আমরা সরকার গঠন করতে পারলে উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।

সবার জন্য কাজ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করছি। দলমত নির্বিশেষে সবার দায়িত্ব আমার। তারা আমার পরিবার।

বিএনপি দেশের মানুষের কল্যাণ চায় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ওপর তাদের আস্থা-বিশ্বাস নেই। সেজন্য তারা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে।

নাশকতা এবং অগ্নি-সন্ত্রাসের বিষয়ে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত দুষ্ট-চক্র যেন মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

এর আগে সকাল থেকেই গণভবনের প্রবেশ পথে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মতবিনিময় করতে সকাল থেকে নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে সারিবদ্ধভাবে গণভবনে প্রবেশ করেন। নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে ভেবেই উচ্ছ্বসিত ছিলেন তারা।

মোট ৩ হাজার ৩৬২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী আজ গণভবনে এসেছেন। দিনব্যাপী সভা শেষে বিকাল ৪টায় সেখান থেকেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে।