Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা পানি শোধন করে দিচ্ছি, এই পানি ব্যবহারে সকলকে মিতব্যয়ী হতে হবে। অযথা যেন পানি নষ্ট না হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর আফতাবনগর এলাকায় দৈনিক ৫০ কোটি লিটার শোধন ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার কেন্দ্র (এসটিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার সময় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পানির ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। সে সব দেশে কেউ গাড়ি ধুতে পারবে না, কেউ পাইপ দিয়ে বাগানে পানি দিতে পারবে না, অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে পারবে না, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবে না। এরকম অনেক নির্দেশনা তাদের মেনে চলতে হচ্ছে। আমাদের দেশেও আমি চাই, সকলে অন্তত বিদ্যুৎ আর পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন।

তিনি সারা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাশ্রয়ী হলে আপনাদের বিলটাও কম আসবে। এখন থেকে আমরা সব বিলিং সিস্টেম ধীরে ধীরে ডিজিটালাইজড করে দেব। কাজেই এখানে ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগই থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বিএনপির সময়ে ঢাকার ৬০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানি পেত। তখন ঢাকার জনসংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখের মতো। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা সায়েদাবাদ ওয়াটার প্ল্যান্ট করে দিয়েছিলাম। কিছু গভীর নলকূপ বসিয়েছিলাম বলেই মানুষ সুপেয় পানি পেত।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায়, তখন ঢাকা শহরে মাত্র ৬০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানি পেত। সে সময় ঢাকার জনসংখ্যা ছিল এক কোটি বিশ লাখের মতো। পানি উৎপাদন হতো ১২০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসার পানির বিল মাত্র ৬৪ শতাংশ আদায় হতো। রাজস্ব আয় ছিল মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকলে কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না। সেই ধারাবাহিকতায় টানা তিনবার ক্ষমতায় আছি। আমরা প্রথম ঢাকার মানুষকে সুপেয় পানি দিতে উদ্যোগ গ্রহণ করি।

ঢাকা ওয়াসা চাহিদার তুলনায় বেশি পানি উৎপাদন করতে পারছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে আমরা ঢাকা ওয়াসার নতুন কর্মসূচি হাতে নিই। ফলে শতভাগ মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে। ওয়াসা এখন চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদন করছে। ঢাকার পানির চাহিদা ২৬০ কোটি লিটার, আর উৎপাদান হচ্ছে ২৭০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসা দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল।

এ সময় শুধু ঢাকা নয়, গ্রাম পর্যায়ে সব সুবিধা পৌঁছে দিতে ওয়াসা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সবাই সব নাগরিক সুবিধা পাবে। আমরা ঢাকার জন্য করলাম, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের জন্য শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে পানি শোধনাগার এবং পয়ঃশোধনাগার তৈরি করতে হবে। কোনো গ্রাম আর গ্রাম থাকবে না। সবাই সব নাগরিক সুবিধা পাবে। আপনারা (ওয়াসা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়) একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেন, যাতে সবাই সুপেয় পানির আওতায় আসতে পারে।

২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকার চারপাশে পাঁচটি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি। বলেন, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের মাধ্যমে হাতিরঝিলসহ ঢাকার আশপাশের নদী-জলাশয়গুলোর পানির মানোন্নয়ন হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে সুয়ারেজ মাস্টারপ্লান প্রণয়ন করে ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে ঢাকার ২০ শতাংশ পয়ঃনিষ্কাশন ঢাকা ওয়াসা করতে পারে। ঢাকার জন্য মোট ৫টি পয়ঃশোধনাগার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার চালুর মাধ্যমে পয়ঃশোধনাগার মাস্টারপ্লানের কাজ শুরু হলো।

ঢাকা ওয়াসার চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পানির বিল এখন ১০০ শতাংশ আদায় করতে সক্ষম ওয়াসা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

আওয়ামী সরকারের ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক ও ভোটের অধিকার ফেরাতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আধুনিক দেশে পরিণত হয়েছে। সাড়ে ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ কেমন ছিল, এটা যাদের হয়তো একটু বয়স হয়েছে তারা স্মরণ করতে পারবেন। যারা একেবারে হয়তো সে সময় ছোট ছিল তারা হয়তো ভাবতেই পারবে না। মনে করবে ওই হাতে মোবাইল অথবা ইন্টারনেট- এ সবই বুঝি ছিল। তা কিন্তু ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে ১৯৯৬ থেকে ২০০১, এরপর ২০০৯ থেকে ২০২৩ আমরা কিন্তু মানুষের জীবনমান বদলে দিতে সক্ষম হয়েছি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশ উন্নত হয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন হাতে হাতে মোবাইল ফোন দেখে মনে করতে পারেন বাংলাদেশ এমনই ছিল আগে। কিন্তু না, এই ১৫ বছরে দেশ আমূল বদলে গেছে। আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের সময় আমি আর আমার ছোট বোন জার্মানিতে ছিলাম। মিলিটারি ডিক্টেটর আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। ’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীদের ওপর ভরসা করে আমি এক প্রকার জোর করে দেশে চলে আসি। তারপর থেকে শুরু হয় সংগ্রাম।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকলে কোনো দেশের উন্নতি হয় না। পৃথিবীর কোনো দেশে মিলিটারি ডিক্টেটর উন্নতি করতে পারে না, এটা হলো বাস্তবতা। ২১ বছর সংগ্রামের পর ’৯৬ সালে আমরা সরকারে আসি, মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা মেটানোর জন্য প্রথম সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করি। সেভাবে শুরু হয় আমাদের পথ চলা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়ান, ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথোরিটির (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খাবারের প্লেট হাতে শাকিব খানের কান্নার ছবি ভাইরাল

বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০১:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা পানি শোধন করে দিচ্ছি, এই পানি ব্যবহারে সকলকে মিতব্যয়ী হতে হবে। অযথা যেন পানি নষ্ট না হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর আফতাবনগর এলাকায় দৈনিক ৫০ কোটি লিটার শোধন ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার কেন্দ্র (এসটিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার সময় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পানির ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। সে সব দেশে কেউ গাড়ি ধুতে পারবে না, কেউ পাইপ দিয়ে বাগানে পানি দিতে পারবে না, অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে পারবে না, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবে না। এরকম অনেক নির্দেশনা তাদের মেনে চলতে হচ্ছে। আমাদের দেশেও আমি চাই, সকলে অন্তত বিদ্যুৎ আর পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন।

তিনি সারা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাশ্রয়ী হলে আপনাদের বিলটাও কম আসবে। এখন থেকে আমরা সব বিলিং সিস্টেম ধীরে ধীরে ডিজিটালাইজড করে দেব। কাজেই এখানে ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগই থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বিএনপির সময়ে ঢাকার ৬০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানি পেত। তখন ঢাকার জনসংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখের মতো। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা সায়েদাবাদ ওয়াটার প্ল্যান্ট করে দিয়েছিলাম। কিছু গভীর নলকূপ বসিয়েছিলাম বলেই মানুষ সুপেয় পানি পেত।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায়, তখন ঢাকা শহরে মাত্র ৬০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানি পেত। সে সময় ঢাকার জনসংখ্যা ছিল এক কোটি বিশ লাখের মতো। পানি উৎপাদন হতো ১২০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসার পানির বিল মাত্র ৬৪ শতাংশ আদায় হতো। রাজস্ব আয় ছিল মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকলে কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না। সেই ধারাবাহিকতায় টানা তিনবার ক্ষমতায় আছি। আমরা প্রথম ঢাকার মানুষকে সুপেয় পানি দিতে উদ্যোগ গ্রহণ করি।

ঢাকা ওয়াসা চাহিদার তুলনায় বেশি পানি উৎপাদন করতে পারছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে আমরা ঢাকা ওয়াসার নতুন কর্মসূচি হাতে নিই। ফলে শতভাগ মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে। ওয়াসা এখন চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদন করছে। ঢাকার পানির চাহিদা ২৬০ কোটি লিটার, আর উৎপাদান হচ্ছে ২৭০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসা দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল।

এ সময় শুধু ঢাকা নয়, গ্রাম পর্যায়ে সব সুবিধা পৌঁছে দিতে ওয়াসা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সবাই সব নাগরিক সুবিধা পাবে। আমরা ঢাকার জন্য করলাম, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের জন্য শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে পানি শোধনাগার এবং পয়ঃশোধনাগার তৈরি করতে হবে। কোনো গ্রাম আর গ্রাম থাকবে না। সবাই সব নাগরিক সুবিধা পাবে। আপনারা (ওয়াসা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়) একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেন, যাতে সবাই সুপেয় পানির আওতায় আসতে পারে।

২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকার চারপাশে পাঁচটি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি। বলেন, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের মাধ্যমে হাতিরঝিলসহ ঢাকার আশপাশের নদী-জলাশয়গুলোর পানির মানোন্নয়ন হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে সুয়ারেজ মাস্টারপ্লান প্রণয়ন করে ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে ঢাকার ২০ শতাংশ পয়ঃনিষ্কাশন ঢাকা ওয়াসা করতে পারে। ঢাকার জন্য মোট ৫টি পয়ঃশোধনাগার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার চালুর মাধ্যমে পয়ঃশোধনাগার মাস্টারপ্লানের কাজ শুরু হলো।

ঢাকা ওয়াসার চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পানির বিল এখন ১০০ শতাংশ আদায় করতে সক্ষম ওয়াসা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

আওয়ামী সরকারের ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক ও ভোটের অধিকার ফেরাতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আধুনিক দেশে পরিণত হয়েছে। সাড়ে ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ কেমন ছিল, এটা যাদের হয়তো একটু বয়স হয়েছে তারা স্মরণ করতে পারবেন। যারা একেবারে হয়তো সে সময় ছোট ছিল তারা হয়তো ভাবতেই পারবে না। মনে করবে ওই হাতে মোবাইল অথবা ইন্টারনেট- এ সবই বুঝি ছিল। তা কিন্তু ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে ১৯৯৬ থেকে ২০০১, এরপর ২০০৯ থেকে ২০২৩ আমরা কিন্তু মানুষের জীবনমান বদলে দিতে সক্ষম হয়েছি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশ উন্নত হয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন হাতে হাতে মোবাইল ফোন দেখে মনে করতে পারেন বাংলাদেশ এমনই ছিল আগে। কিন্তু না, এই ১৫ বছরে দেশ আমূল বদলে গেছে। আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের সময় আমি আর আমার ছোট বোন জার্মানিতে ছিলাম। মিলিটারি ডিক্টেটর আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। ’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীদের ওপর ভরসা করে আমি এক প্রকার জোর করে দেশে চলে আসি। তারপর থেকে শুরু হয় সংগ্রাম।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকলে কোনো দেশের উন্নতি হয় না। পৃথিবীর কোনো দেশে মিলিটারি ডিক্টেটর উন্নতি করতে পারে না, এটা হলো বাস্তবতা। ২১ বছর সংগ্রামের পর ’৯৬ সালে আমরা সরকারে আসি, মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা মেটানোর জন্য প্রথম সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করি। সেভাবে শুরু হয় আমাদের পথ চলা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়ান, ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথোরিটির (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম উপস্থিত ছিলেন।