নিজস্ব প্রতিবেদক :
ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে আসতে বিএনপিকে ৩৬ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অন্যথায় দলটির কালো হাত গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুপুরে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আওয়ামী লীগকে ৩৬ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে ৩৬ দিনের সময় দেওয়া হলো। তাদের আগুন সন্ত্রাস, নাশকতার রাজনীতি ছাড়তে হবে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। নতুবা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অপরাজনীতির কালোহাত গুঁড়িয়ে দেবো।
তিনি বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ৩৬ মিনিটও আন্দোলন করতে পারেনি। ৩৬ দিনের সময় দিলাম, ঠিক হয়ে যান। বিএনপির কোমর ভেঙে গেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যদি অস্ত্র নিয়ে আসে ওই হাত ভেঙে দিতে হবে। আগুন নিয়ে আসলে ওই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যেমন কুকুর, তেমন মুগুর।
এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খেলা হবে, হবে খেলা। আগামী মাসে খেলা হবে। আর আসল খেলা বা ফাইনাল খেলা হবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তিনি নেতাকর্মীদের ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেন।
বিএনপি জামায়াতের দেশবিরোধী হরতাল, নৈরাজ্য ও অবরোধ প্রতিরোধে আয়োজিত সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ভর করেছে ভিসানীতির ওপর, আর আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তির ওপর। কারও নিষেধাজ্ঞা ও খবরদারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন চলবে না। ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা আমরা করি না। যারা ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা দেয় তাদের দেশেই গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। কিছুই তারা করতে পারছে না। আমরা পরোয়া করি বাংলাদেশের জনগণকে। বাংলাদেশের জনগণ ছাড়া কোনো ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা মানি না, মানবো না। আমাদের নির্বাচন আমরা করবো। সংবিধান বলে দিয়েছে কীভাবে নির্বাচন হবে।
আমেরিকার ভিসানীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা এই ভিসানীতির তোয়াক্কা করি না। বার্তা দিয়ে দিচ্ছি, কারো নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা আমরা করি না। বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি কারো নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করার জন্য নয়। রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে কারো নিষেধাজ্ঞা মানার জন্য নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার গণতন্ত্র আমি করব, আমার নির্বাচন আমি করব। তুমি কে? সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড় থেকে আটলান্টিকের ওপার থেকে নিষেধাজ্ঞা দেবে?
সেতুমন্ত্রী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন রাখেন। বিএনপির পলাতক দণ্ডিত নেতা তারেক রহমানকে দেওয়া মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টির দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কী হলো ফখরুল সাহেব?
বিএনপির উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, সুযোগ একটাই; নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনে যদি না আসেন খেলার আগেই হেরে যাবেন।
বিএনপির ঘুম হারাম হয়ে গেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুই সেলফিতে বিএনপির ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ফখরুল ছটফটিয়ে ঘুমায় না রাতে। উপরে-উপরে নেতাকর্মীদের বোঝানোর জন্য বড় বড় কথা বলে। হায়রে কষ্ট, হায়রে দুঃখ। এত লোটা, এত কম্বল, এত বিছানা নিয়ে সমাবেশ করল, কোনো কাজ হয় না। নির্বাচন যথাসময়ে হবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গেছে, কষ্ট আছে, দুঃখ আছে কিন্তু আমাদের একজন নেতা আছে। যে নেতা ঘুমায় না। আজকের এই দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য শেখ হাসিনাকেই এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে। তিনি যা করতে পারবেন, তাই বলেন। কোনোদিনও মিথ্যা কথা বলেন না। তার মতো ঈমানদার নেতা নেই। তিনি যত দিন আছেন, আল্লাহর আশীর্বাদ বাংলাদেশের সঙ্গে আছে।
দেশের মানুষকে সংকটে হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই সব সংকট কেটে যাবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।