নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি ২০১৩-১৪ সালে জ্বালাও-পোড়াও করেছে। তারা যেকোনো সময় আবারও নাশকতা করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে রহমতে আলম ইসলাম মিশন ও ইসলাম মিশন এতিমখানায় আয়োজিত ‘জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন’ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও চালিয়েছিল। সে সময় শুধু মানুষ নয়, পশুও হত্যা করেছে তারা। বিএনপি সভা-সমাবেশ, আন্দোলনের নামে যদি আবারো নাশকতা করে তবে এবার আর ছাড় দেওয়া হবে না। এ দেশের জনগণ আর এটা মেনে নেবে না।
জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে– এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জঙ্গিরা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাদের নির্মূল করা হচ্ছে। সম্প্রতি মৌলভীবাজারে দেখেছেন, এখনো কিছু কিছু জায়গায় মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের নির্মূল করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
১৫ আগস্টকে ঘিরে কোনো নিরাপত্তা হুমকি আছে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টে জাতীয় শোক দিবসকে ঘিরে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ১৫ আগস্ট কি হয়েছিল আমরা সবাই জানি। আমরা এও জানি, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে যায়নি তাদেরই বসে থাকা নীলনকশায় এ ঘটনা ঘটেছিল। তাদের কয়েকজনকে চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আরও কয়েকজন শাস্তি পাবেন। আজ বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়, কারা এর পেছনের কুশীলব-সুবিধাভোগী ছিল। এ হত্যাকাণ্ডে কারা লাভবান হয়েছিল সেটাও মানুষ জানতে চায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দেশের জনগণের দাবি আসছে তাদের খুঁজে বের করার। তারা যদি জীবিত নাও থাকে তবুও তাদের মরণোত্তর বিচারের দাবি নিয়ে আসছে মানুষ। আমি মনে করি জনগণের এ দাবি যথার্থ। একইসঙ্গে যারা এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল তাদের চেহারা এবং ষড়যন্ত্রের কথা জানানো উচিত বলে আমি মনে করি। হয়ত অনেক বছর পেরিয়ে গেছে। অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের সঠিক সন্ধান পেলেও হয়ত তার একটা ধারণা পাব। সেই ধারণাটিও প্রকাশ করার জন্য আমরা যদি কিছু করতে পারি তবে আমরা নিজেদের সার্থক মনে করব।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন বাংলার কথা বলতেন। বাংলার মানুষের কথা বলতেন। তিনি যে একজন ভবিষ্যৎ নেতা হবেন, সেটা তার বাবা ছোটবেলাতেই বুঝতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যদি দেখতেন তার বন্ধু শীতে কাঁপছে, তাহলে তার শীতের চাদরটি দিয়ে দিতেন। এগুলো আপনারা সবই শুনেছেন। সবই জানেন। তার পিতা একদিন দেখেন তাদের ধানের গোলা থেকে সবাই লাইন ধরে ধান নিয়ে যাচ্ছে। ঘটনা কি জিজ্ঞাসা করতেই বঙ্গবন্ধু বাবাকে বললেন, আমি কয়েকদিন ধরেই লক্ষ্য করছি তাদের ঘরে খাবার নেই, তাই এখান থেকে যার যতটা প্রয়োজন ততটা নিয়ে যেতে বলেছি। সারাজীবন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য কীভাবে পরিবর্তন করতে হবে সেটাই চিন্তা-চেতনা ছিল বঙ্গবন্ধুর। তাকে নিয়ে বলতে গেলে অনেক ইতিহাস। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ও বঙ্গবন্ধুর কথা বলে শেষ করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি কামরুল আহসান, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ পুলিশ সদরদপ্তর ও ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।