Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি আন্দোলন করুক, অগ্নিসন্ত্রাস যেন করতে না পারে : প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:২১:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • ২০৪ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করছে, ঠিক আছে করুক। যদি তারা বাসে আগুন দিতে চায়, আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাকে বলছি, যারা বাসে আগুন দেবে, সঙ্গে সঙ্গে যে ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে; যাতে মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, আবার অগ্নিসন্ত্রাস করতে না পারে। আন্দোলন করুক আমাদের আপত্তি নেই। কারণ আমি তো সারাজীবন আন্দোলন করে তারপর ক্ষমতায় এসেছি। কিন্তু তারা মানুষের ক্ষতি যেন করতে না পারে।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১টা ৩০ মিনিটে তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের আওতায় নির্মিত ১৫০টি সেতু এবং বিভিন্ন মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন; নানান কথা বলে। সেটা নিয়ে আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না। কারণ, অনেকগুলো ভালো কাজ করেছি ভালো কথাগুলো বলে যেতে চাই কিন্তু এদের কথা এবং এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করতে চাই। আজকে এই উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক সেটা আমরা চাই না।

বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। তারা প্রতিদিন আন্দোলন করছে। তারা নাকি আমাদেরকে হটিয়ে দেবে। ঠিক আছে তারা আন্দোলন করতে থাকুক। আমার তো জনগণ আছে। জনগণের কল্যাণ করাই আমার লক্ষ্য।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের সময় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যারা মারা গিয়েছিল, যাদের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, আমরা তাদের প্রায় ৩ হাজার ৮০০ জনকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলাম। আর যারা অগ্নিদগ্ধ, এখনও তাদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।

PM4

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এখন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বলে। আমি সমালোচনা করতে চাই না। তবে এদের কথা, এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক করবো। আজকের উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক, সেটা আমরা চাই না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে কী দিয়েছে? তারা দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করেছে? তারা দেশের কতটুকু উন্নতি করেছে, সেটাই হলো বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই এ দেশের উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি। কারণ আমাদের গ্যাস অন্য দেশ কিনবে; আমি রাজি হইনি। খেসারত দিতে হয়েছে, ক্ষমতায় আসতে পারিনি। জনগণের ভোট পেয়েছিলাম কিন্তু চক্রান্তের শিকার হয়েছিলাম। তার পরে দেশটার অবস্থা কী হয়েছিল? বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি-অপশাসনের কারণে এ দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা হয়। তারপর আসে আর্মি ব্যাকড তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

তিনি আরও বলেন, সেই সময়টার কথা একবার চিন্তা করে দেখেন মানুষের কী দুরাবস্থা ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য করার কোনো সুযোগ ছিল না। বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছিল এ দেশের মানুষের ওপর, তারই ধারাবাহিকতা চলতে থাকে। যা হোক একটা পর্যায়ে ২০০৮ সালে তারা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।

ফিলিস্তিন বিষয়ে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেখি অনেকেই চুপ থাকেন। কারণ যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তারা আবার নাখোশ যদি হয়, এই ভয়ে নির্যাতিতদের পক্ষে কথা বলতে সাহস হয় না। তারা আবার আন্দোলনের কথা বলে পতদ্যাগের ডাক দেয়।

PM4

তিনি বলেন, যখন স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় বসে তখন কীভাবে দেশের উন্নয়ন হবে? জাতীয় জীবন থেকে ২১ বছর চলে গেছে। এই ২১ বছরে দেশের মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে। তারপর ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে।

গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাস-ট্রাক-গাড়ি চালায়, তাদের যে অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা, ওভারটেক করার প্রতিযোগিতা, এগুলো বন্ধ করতে হবে। এ জন্য চালকদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার পরপর বাস ও ট্রাকের চালক ও যাত্রীরা যাতে একটু বিশ্রাম নিতে পারে, সে জন্য বিশ্রামাগার করে দিতে বলেছি। ইতোমধ্যে কয়েকটা জায়গায় নির্মাণ হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আমরা আরও করে দেবো।

গাড়িচালকদের প্রতি গাড়ির মালিকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে (গাড়িচালক) কিন্তু একজন মানুষ, তারও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। চালক ঠিকমতো খাবার খেতে পারলো কি না, সেটাও দেখতে হবে। গাড়ি চালাতে পেট্রোল লাগবে কিন্তু যাকে দিয়ে চালাবেন, তারও তো পেট্রোলের দরকার আছে। সেদিকেও নজর দিতে হবে।

যাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাড়িতে যেমন পেট্রোল লাগে, চালকেরও তেমনই পেট্রোল লাগে। তাই চালকরা যাতে বিশ্রাম পায়, তিনি যাতে খাওয়াদাওয়া করতে পারেন, সেদিকে আপনাদেরকেই খেয়াল রাখতে হবে।

চালকের বিশ্রামের দিকে নজর দিতে মালিকদেরকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একটানা গাড়ি না চালিয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। গাড়ি চালাতে তেল-পেট্রল লাগে। যিনি গাড়িটা চালাবেন তারও তো তেল-পেট্রল ঠিক থাকতে হবে। তারও কিন্তু শরীর। মাথা যেন ঠিক থাকে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

PM3

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েল যেভাবে প্যালেস্টাইনের ওপর হামলা করে, বিশেষ করে হাসপাতালে হামলা করে নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, আমরা তার নিন্দা জানিয়েছি। আমাদের কথা হচ্ছে দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। আর প্যালেস্টাইনবাসী যেন তাদের ন্যায্য জায়গা ফেরত পায়। যে জায়গাগুলো তারা (ইসরায়েল) দখল করেছে, সেই জায়গাগুলো তাদের দিতে হবে।

তিনি বলেন, শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সারা দেশের সব মসজিদে জুমার নামাজের পরে এবং সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যেন তাদের (ফিলিস্তিনি) জন্য প্রার্থনা করা হয়। শনিবার (২১ অক্টোবর) আমরা একটা দিন শোক দিবস ঘোষণা করেছি। সেদিন আমাদের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি ফিলিস্তিনে নারী-শিশুসহ আহত যারা আছে, তাদের জন্য ওষুধের ব্যবস্থা করার জন্য ইতোমধ্যে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলে দিয়েছি। আমরা তাদের জন্য শুকনো খাদ্য এবং মেয়ে ও শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাঠাবো।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে ১৫০টি সেতু ও ১৪টি ওভার পাস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

এদিন প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর কেওয়াটখালী সেতু ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিএ’র স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষাকেন্দ্র, বিআরটিসির বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন তিনি। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক ভবনে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় সড়ক ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ‘তৃতীয় নেত্র’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বিএনপি আন্দোলন করুক, অগ্নিসন্ত্রাস যেন করতে না পারে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:২১:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করছে, ঠিক আছে করুক। যদি তারা বাসে আগুন দিতে চায়, আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাকে বলছি, যারা বাসে আগুন দেবে, সঙ্গে সঙ্গে যে ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে; যাতে মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, আবার অগ্নিসন্ত্রাস করতে না পারে। আন্দোলন করুক আমাদের আপত্তি নেই। কারণ আমি তো সারাজীবন আন্দোলন করে তারপর ক্ষমতায় এসেছি। কিন্তু তারা মানুষের ক্ষতি যেন করতে না পারে।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১টা ৩০ মিনিটে তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের আওতায় নির্মিত ১৫০টি সেতু এবং বিভিন্ন মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন; নানান কথা বলে। সেটা নিয়ে আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না। কারণ, অনেকগুলো ভালো কাজ করেছি ভালো কথাগুলো বলে যেতে চাই কিন্তু এদের কথা এবং এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করতে চাই। আজকে এই উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক সেটা আমরা চাই না।

বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। তারা প্রতিদিন আন্দোলন করছে। তারা নাকি আমাদেরকে হটিয়ে দেবে। ঠিক আছে তারা আন্দোলন করতে থাকুক। আমার তো জনগণ আছে। জনগণের কল্যাণ করাই আমার লক্ষ্য।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের সময় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যারা মারা গিয়েছিল, যাদের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, আমরা তাদের প্রায় ৩ হাজার ৮০০ জনকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলাম। আর যারা অগ্নিদগ্ধ, এখনও তাদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।

PM4

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এখন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বলে। আমি সমালোচনা করতে চাই না। তবে এদের কথা, এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক করবো। আজকের উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক, সেটা আমরা চাই না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে কী দিয়েছে? তারা দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করেছে? তারা দেশের কতটুকু উন্নতি করেছে, সেটাই হলো বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই এ দেশের উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি। কারণ আমাদের গ্যাস অন্য দেশ কিনবে; আমি রাজি হইনি। খেসারত দিতে হয়েছে, ক্ষমতায় আসতে পারিনি। জনগণের ভোট পেয়েছিলাম কিন্তু চক্রান্তের শিকার হয়েছিলাম। তার পরে দেশটার অবস্থা কী হয়েছিল? বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি-অপশাসনের কারণে এ দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা হয়। তারপর আসে আর্মি ব্যাকড তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

তিনি আরও বলেন, সেই সময়টার কথা একবার চিন্তা করে দেখেন মানুষের কী দুরাবস্থা ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য করার কোনো সুযোগ ছিল না। বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছিল এ দেশের মানুষের ওপর, তারই ধারাবাহিকতা চলতে থাকে। যা হোক একটা পর্যায়ে ২০০৮ সালে তারা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।

ফিলিস্তিন বিষয়ে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেখি অনেকেই চুপ থাকেন। কারণ যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তারা আবার নাখোশ যদি হয়, এই ভয়ে নির্যাতিতদের পক্ষে কথা বলতে সাহস হয় না। তারা আবার আন্দোলনের কথা বলে পতদ্যাগের ডাক দেয়।

PM4

তিনি বলেন, যখন স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় বসে তখন কীভাবে দেশের উন্নয়ন হবে? জাতীয় জীবন থেকে ২১ বছর চলে গেছে। এই ২১ বছরে দেশের মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে। তারপর ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে।

গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাস-ট্রাক-গাড়ি চালায়, তাদের যে অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা, ওভারটেক করার প্রতিযোগিতা, এগুলো বন্ধ করতে হবে। এ জন্য চালকদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার পরপর বাস ও ট্রাকের চালক ও যাত্রীরা যাতে একটু বিশ্রাম নিতে পারে, সে জন্য বিশ্রামাগার করে দিতে বলেছি। ইতোমধ্যে কয়েকটা জায়গায় নির্মাণ হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আমরা আরও করে দেবো।

গাড়িচালকদের প্রতি গাড়ির মালিকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে (গাড়িচালক) কিন্তু একজন মানুষ, তারও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। চালক ঠিকমতো খাবার খেতে পারলো কি না, সেটাও দেখতে হবে। গাড়ি চালাতে পেট্রোল লাগবে কিন্তু যাকে দিয়ে চালাবেন, তারও তো পেট্রোলের দরকার আছে। সেদিকেও নজর দিতে হবে।

যাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাড়িতে যেমন পেট্রোল লাগে, চালকেরও তেমনই পেট্রোল লাগে। তাই চালকরা যাতে বিশ্রাম পায়, তিনি যাতে খাওয়াদাওয়া করতে পারেন, সেদিকে আপনাদেরকেই খেয়াল রাখতে হবে।

চালকের বিশ্রামের দিকে নজর দিতে মালিকদেরকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একটানা গাড়ি না চালিয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। গাড়ি চালাতে তেল-পেট্রল লাগে। যিনি গাড়িটা চালাবেন তারও তো তেল-পেট্রল ঠিক থাকতে হবে। তারও কিন্তু শরীর। মাথা যেন ঠিক থাকে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

PM3

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েল যেভাবে প্যালেস্টাইনের ওপর হামলা করে, বিশেষ করে হাসপাতালে হামলা করে নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, আমরা তার নিন্দা জানিয়েছি। আমাদের কথা হচ্ছে দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। আর প্যালেস্টাইনবাসী যেন তাদের ন্যায্য জায়গা ফেরত পায়। যে জায়গাগুলো তারা (ইসরায়েল) দখল করেছে, সেই জায়গাগুলো তাদের দিতে হবে।

তিনি বলেন, শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সারা দেশের সব মসজিদে জুমার নামাজের পরে এবং সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যেন তাদের (ফিলিস্তিনি) জন্য প্রার্থনা করা হয়। শনিবার (২১ অক্টোবর) আমরা একটা দিন শোক দিবস ঘোষণা করেছি। সেদিন আমাদের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি ফিলিস্তিনে নারী-শিশুসহ আহত যারা আছে, তাদের জন্য ওষুধের ব্যবস্থা করার জন্য ইতোমধ্যে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলে দিয়েছি। আমরা তাদের জন্য শুকনো খাদ্য এবং মেয়ে ও শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাঠাবো।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে ১৫০টি সেতু ও ১৪টি ওভার পাস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

এদিন প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর কেওয়াটখালী সেতু ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিএ’র স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষাকেন্দ্র, বিআরটিসির বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন তিনি। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক ভবনে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় সড়ক ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ‘তৃতীয় নেত্র’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।