Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে হারাল ম্যানচেস্টার সিটি

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৫৪:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১৮২ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক :

তেতে থাকা দলের যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো দরকার, রিয়াল মাদ্রিদের খেলায় সেই তীব্রতা ফুটে উঠল। কিন্তু কিলিয়ান এমবাপের অনুপস্থিতিতে ফিনিশিংয়ে খুব ভুগল শাবি আলোন্সোর দল। পিছিয়ে পড়েও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়ে দারুণ এক জয় তুলে নিল ম্যানচেস্টার সিটি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ২-১ গোলে হেরেছে রিয়াল। ঘরের মাঠে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটা তাদের টানা দ্বিতীয় হার।

লম্বা সময়ের গোল খরা কাটিয়ে জালের দেখা পান রদ্রিগো। তার চমৎকার ফিনিশিংয়েই শুরুতে এগিয়ে যায় রেয়াল। নিকো ও’রাইলির সৌভাগ্যের গোলে সমতায় ফেরার পর, আর্লিং হলান্ডের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায় সিটি।

৪৮ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১২ শট নিয়ে আটটি লক্ষ্যে রাখে সিটি। বল দখলে এগিয়ে থাকা রিয়াল গোলের জন্য শটও নেয় বেশি- ১৬টি। কিন্তু বিস্ময়করভাবে কেবল একটি শটই রাখতে পারে লক্ষ্যে!

৬ ম্যাচে চার জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে আছে রেয়াল। তাদের সমান পয়েন্ট আরও তিনটি দলের।

৬ ম্যাচে চার জয় ও এক ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে চারে সিটি। সমান পয়েন্ট নিয়ে তাদের চেয়ে এগিয়ে পিএসজি, পিছিয়ে আতালান্তা।

৬ ম্যাচে টানা ৬ জয় পাওয়া আর্সেনাল ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে বায়ার্ন মিউনিখ।

ম্যাচের শুরুতেই ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি কিক পায় রিয়াল। ফেদে ভালভের্দের নিচু শট সিটির একজনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

সপ্তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে চমৎকার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র। ডান দিক থেকে রদ্রিগোর নিচু ক্রসে বিপজ্জনক জায়গা থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

ডান দিকে শুরু থেকে সিটির রক্ষণকে চাপে রাখা রদ্রিগোর নৈপুণ্যে ২৮তম মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল। প্রতি-আক্রমণে জুড বেলিংহ্যামের কাছ থেকে বল পেয়ে, দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেরি করায় শরীরের বেশ কাছ দিয়ে যাওয়া বলের নাগাল পাননি সিটি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।

৩২ ম্যাচ পর রেয়ালের হয়ে গোল করলেন রদ্রিগো। ভীষণ চাপে থাকা দল এবং তার নিজের জন্যও স্বস্তি হয়ে এলো এই গোল। এর আগে গত মার্চে সবশেষ ক্লাবের হয়ে জালের দেখা পেয়েছিলেন তিনি।

তাদের এগিয়ে যাওয়ার স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। থিবো কোর্তোয়ার বিরল ভুলে ৩৫তম মিনিটে সমতা ফেরায় সিটি। হায়ান শের্কির কর্নারে ইয়োশকো ভার্দিওলের হেড গ্লাভসে রাখতে পারেননি রিয়াল গোলরক্ষক। সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা নিকো ও’রাইলি অনায়াসে খুঁজে নেন ঠিকানা। চ্যাম্পিয়ন লিগে এটা তার প্রথম গোল।

৪৩তম মিনিটে হলান্ডের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায় সিটি। আগেভাগেই ডাইভ দেন কোর্তোয়া, অনায়াসে অন্য পাশ দিয়ে জাল খুঁজে নেন নরওয়ের স্ট্রাইকার। তাকেই আন্টোনিও রুডিগার ফাউল করায় পেনাল্টি পায় সফরকারীরা। শুরুতে ফাউল ধরেননি রেফারি, ভিএআর মনিটরে রিপ্লে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান তিনি।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দারুণ ডাবল সেভে রিয়ালকে আরও পিছিয়ে যেতে দেননি কোর্তোয়া। হলান্ডের গতিময় শট ডাইভ দিয়ে ফেরান তিনি। ফিরতি বলে শের্কির শট ফের ব্যর্থ করে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

বিরতির পর সমতা ফেরানোর খুব ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেন বেলিংহ্যাম। বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েও শট লক্ষ্য রাখতে পারেননি তিনি। ভালো জায়গায় থাকা কোনো সতীর্থকে বল না বাড়িয়ে চিপ শটে গোলের চেষ্টায় মারেন ক্রসবারের বেশ ওপর দিয়ে।

পরের মিনিটে শের্কির শটে তালগোল পাকালেও শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে নেন কোর্তোয়া। কয়েক সেকেন্ড পর অন্যপ্রান্তে সুযোগ পান রদ্রিগো। তিনিও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে ওঠা ম্যাচে ৬১তম মিনিটে জেরেমি ডোকুর বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কোর্তোয়া।

৭৮তম মিনিটে খুব ভালো সুযোগ নষ্ট করেন ভিনিসিউস। রদ্রিগোর চমৎকার ক্রসে খুব কাছ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। দুই মিনিট পর তিনি নষ্ট করেন এর চেয়েও ভালো সুযোগ। আর্দা গিলেরের কর্নারে একটুর জন্য হাত ছোঁয়াতে পারেননি দোন্নারুম্মা। দূরের পোস্টে অরক্ষিত ভিনিসিউস তাড়াহুড়ায় ঠিকমতো শটই করতে পারেননি।

বদলি নেমে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন এন্দ্রিক। ৮৫তম মিনিটে তার হেড সিটি গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে বাইরে চলে যায়!

বাকি সময়েও চাপ ধরে রেখে সুযোগ তৈরি করে রেয়াল। কিন্তু দোন্নারুম্মার পরীক্ষাই নিতে পারেনি তারা। তাতে রিয়ালের মাঠে দ্বিতীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে হারাল ম্যানচেস্টার সিটি

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৪:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক :

তেতে থাকা দলের যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো দরকার, রিয়াল মাদ্রিদের খেলায় সেই তীব্রতা ফুটে উঠল। কিন্তু কিলিয়ান এমবাপের অনুপস্থিতিতে ফিনিশিংয়ে খুব ভুগল শাবি আলোন্সোর দল। পিছিয়ে পড়েও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়ে দারুণ এক জয় তুলে নিল ম্যানচেস্টার সিটি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ২-১ গোলে হেরেছে রিয়াল। ঘরের মাঠে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটা তাদের টানা দ্বিতীয় হার।

লম্বা সময়ের গোল খরা কাটিয়ে জালের দেখা পান রদ্রিগো। তার চমৎকার ফিনিশিংয়েই শুরুতে এগিয়ে যায় রেয়াল। নিকো ও’রাইলির সৌভাগ্যের গোলে সমতায় ফেরার পর, আর্লিং হলান্ডের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায় সিটি।

৪৮ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১২ শট নিয়ে আটটি লক্ষ্যে রাখে সিটি। বল দখলে এগিয়ে থাকা রিয়াল গোলের জন্য শটও নেয় বেশি- ১৬টি। কিন্তু বিস্ময়করভাবে কেবল একটি শটই রাখতে পারে লক্ষ্যে!

৬ ম্যাচে চার জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে আছে রেয়াল। তাদের সমান পয়েন্ট আরও তিনটি দলের।

৬ ম্যাচে চার জয় ও এক ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে চারে সিটি। সমান পয়েন্ট নিয়ে তাদের চেয়ে এগিয়ে পিএসজি, পিছিয়ে আতালান্তা।

৬ ম্যাচে টানা ৬ জয় পাওয়া আর্সেনাল ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে বায়ার্ন মিউনিখ।

ম্যাচের শুরুতেই ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি কিক পায় রিয়াল। ফেদে ভালভের্দের নিচু শট সিটির একজনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

সপ্তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে চমৎকার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র। ডান দিক থেকে রদ্রিগোর নিচু ক্রসে বিপজ্জনক জায়গা থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

ডান দিকে শুরু থেকে সিটির রক্ষণকে চাপে রাখা রদ্রিগোর নৈপুণ্যে ২৮তম মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল। প্রতি-আক্রমণে জুড বেলিংহ্যামের কাছ থেকে বল পেয়ে, দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেরি করায় শরীরের বেশ কাছ দিয়ে যাওয়া বলের নাগাল পাননি সিটি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।

৩২ ম্যাচ পর রেয়ালের হয়ে গোল করলেন রদ্রিগো। ভীষণ চাপে থাকা দল এবং তার নিজের জন্যও স্বস্তি হয়ে এলো এই গোল। এর আগে গত মার্চে সবশেষ ক্লাবের হয়ে জালের দেখা পেয়েছিলেন তিনি।

তাদের এগিয়ে যাওয়ার স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। থিবো কোর্তোয়ার বিরল ভুলে ৩৫তম মিনিটে সমতা ফেরায় সিটি। হায়ান শের্কির কর্নারে ইয়োশকো ভার্দিওলের হেড গ্লাভসে রাখতে পারেননি রিয়াল গোলরক্ষক। সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা নিকো ও’রাইলি অনায়াসে খুঁজে নেন ঠিকানা। চ্যাম্পিয়ন লিগে এটা তার প্রথম গোল।

৪৩তম মিনিটে হলান্ডের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায় সিটি। আগেভাগেই ডাইভ দেন কোর্তোয়া, অনায়াসে অন্য পাশ দিয়ে জাল খুঁজে নেন নরওয়ের স্ট্রাইকার। তাকেই আন্টোনিও রুডিগার ফাউল করায় পেনাল্টি পায় সফরকারীরা। শুরুতে ফাউল ধরেননি রেফারি, ভিএআর মনিটরে রিপ্লে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান তিনি।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দারুণ ডাবল সেভে রিয়ালকে আরও পিছিয়ে যেতে দেননি কোর্তোয়া। হলান্ডের গতিময় শট ডাইভ দিয়ে ফেরান তিনি। ফিরতি বলে শের্কির শট ফের ব্যর্থ করে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

বিরতির পর সমতা ফেরানোর খুব ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেন বেলিংহ্যাম। বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েও শট লক্ষ্য রাখতে পারেননি তিনি। ভালো জায়গায় থাকা কোনো সতীর্থকে বল না বাড়িয়ে চিপ শটে গোলের চেষ্টায় মারেন ক্রসবারের বেশ ওপর দিয়ে।

পরের মিনিটে শের্কির শটে তালগোল পাকালেও শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে নেন কোর্তোয়া। কয়েক সেকেন্ড পর অন্যপ্রান্তে সুযোগ পান রদ্রিগো। তিনিও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে ওঠা ম্যাচে ৬১তম মিনিটে জেরেমি ডোকুর বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কোর্তোয়া।

৭৮তম মিনিটে খুব ভালো সুযোগ নষ্ট করেন ভিনিসিউস। রদ্রিগোর চমৎকার ক্রসে খুব কাছ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। দুই মিনিট পর তিনি নষ্ট করেন এর চেয়েও ভালো সুযোগ। আর্দা গিলেরের কর্নারে একটুর জন্য হাত ছোঁয়াতে পারেননি দোন্নারুম্মা। দূরের পোস্টে অরক্ষিত ভিনিসিউস তাড়াহুড়ায় ঠিকমতো শটই করতে পারেননি।

বদলি নেমে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন এন্দ্রিক। ৮৫তম মিনিটে তার হেড সিটি গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে বাইরে চলে যায়!

বাকি সময়েও চাপ ধরে রেখে সুযোগ তৈরি করে রেয়াল। কিন্তু দোন্নারুম্মার পরীক্ষাই নিতে পারেনি তারা। তাতে রিয়ালের মাঠে দ্বিতীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটি।