নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে শোক দিবসের দোয়া চলাকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজার চেষ্টা করে কিছু মানুষ। এ নিয়ে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মসজিদের ভেতরে শোক দিবসের দোয়া চলাকালে গায়েবানা জানাজা পড়ার চেষ্টা করে সাঈদীর অনুসারী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটাধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ নিয়ন্ত্রণে গেলে তাদের ওপর হামলা চালায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে তারা। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের দোয়া মাহফিল হচ্ছিল। এ সময় সাঈদীর অনুসারী ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সদস্যরা হট্টগোল সৃষ্টি করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে জামায়াতের অনুসারীরা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দীন মিয়া বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গণ এলাকা থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। থানায় যাচাই-বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার বিকেলে বুকে ব্যথা নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে। পরে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন তিনি।
সাঈদীর মৃত্যুর খবর শোনার পর গতকাল রাতে জামায়াত-শিবিরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও ভক্তরা হাসপাতাল এলাকায় জড়ো হন। নেতাকর্মীরা ঢাকায় জানাজা করতে চাইলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বারণ করা হয়। অনড় অবস্থানে থাকা জামায়াতের নেতাকর্মীরা রাতভর বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের সামনে অবস্থান নেন। পুলিশও সতর্ক অবস্থানে থাকে।
ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের। সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা। পরে টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে কড়া পাহারায় অ্যাম্বুলেন্সে করে সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেখানে জানাজা শেষে তাকে বড় ছেলে রফিক বিন সাঈদীর কবরের পাশে দাফন করা হবে।