স্পোর্টস ডেস্ক :
মেহেদী হাসান মিরাজ বেশ কয়েকবারই হেসে হেসে উত্তর দিলেন সংবাদ সম্মেলনে। তার উত্তর সহজ-সরল, কখনো আবার পথ হারা। বাংলাদেশ দলের এখন বিপর্যস্ত অবস্থা। সাত ম্যাচের কেবল একটিতে জিতেছে তারা।
এখন আর দুটি ম্যাচ বাকি। তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তির সুযোগ খুব কম। বিশ্বকাপে সেরা আটে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার স্বপ্নও এখনও ফিকে। দুই ম্যাচে হারাতে হবে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়াকে। এরপরও তাকিয়ে থাকতে হবে বাকিদের দিকে। শেষ অবধি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না পারলে সেটা দেশের জন্য কত বড় বিপর্যয় হবে?
উত্তরে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, আমাদের কিন্তু ভাগ্যটাও কাজ করছে না। আমরা চেষ্টা করছি। সবাই ভালো খেলার চেষ্টা করছে। কেউ তো খারাপ খেলতে চায় না। দিনশেষে আমরা সবাই চেষ্টা করছি। কিন্তু একটা জিনিস দেখেন অনেকসময় লাক ফেভার করছে না। আমরা ব্যাটসম্যানরা যেখানে খেলছি, সেখানে হাতে চলে যাচ্ছে বল। ক্যাচ হচ্ছে অথবা ফিল্ডিং করছে। বোলিং যখন করছি কিছু না কিছু হচ্ছে। এরকম তো কখনোই হয়নি, বিগত তিন বছর ধরে ওয়ানডে আমরা খেলছি। কিন্তু আমার মনে হয় লাকটা একটু কম কাজ করছে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ আবার কামব্যাক করবে।
সাত বছরের বেশি সময়ের ক্যারিয়ার মেহেদী হাসান মিরাজের। বেশ কিছু আইসিসি ইভেন্টেই অংশ নিয়েছেন তিনি। খেলেছেন সবশেষ বিশ্বকাপেও। এমন খারাপ অবস্থা কী দলের ভেতর কখনো দেখেছেন? এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল পাকিস্তান ম্যাচের পরের সংবাদ সম্মেলনে।
উত্তরে মিরাজ বলেন, এরকম কখনই হয়নি। আমাদের ভাগ্য সহায় হচ্ছে না। সবাই চেষ্টা করছে কিন্তু। প্র্যাকটিস করছি, পরিকল্পনা করছি। কিন্তু ভাগ্য না থাকলে সফল হবেন না। দিনশেষে আল্লাহর রহমত দরকার, ভাগ্য দরকার। বিশ্বাস করি এটা বেশি দিন যাবে না, আমরা কামব্যাক করব।
বাংলাদেশ জাতীয় দলে এই মুহূর্তে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটিং পজিশন কি? কোটি টাকার প্রশ্ন বলাই যায় এটি। কারণ এই ব্যাটার একেক ম্যাচে খেলেন একেক পজিশনে। কোনদিন কোথায় খেলবেন এই বিষয়ে আগে থেকে বলা মুশকিল। যার উত্তর স্বয়ং মিরাজের কাছেও নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে অবশ্য আট নাম্বারেই ব্যাট করেছেন টাইগার এই অলরাউন্ডার।
তবে দলের প্রয়োজনে নিজের এমন ব্যাটিং অদল বদল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মিরাজ বলেন, এই যে পজিশন বদল, সেটি দলের সমন্বয় তৈরি করতেই হচ্ছে। প্রতি ম্যাচেই ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেয়, কে কোথায় ব্যাটিং করবে। এটা দলের জন্যই। যে ভালো খেলতে পারে, তাকেই সুযোগ দেওয়া হয়।
বারবার ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনে অবশ্য খুব একটা আফসোস নেই মিরাজের। তবে এই পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে গিয়ে কারও পারফরম্যান্সই ভালো নয়। সেটা নিয়েও অবশ্য পরিষ্কার মিরাজের বক্তব্য, আমরা কেউই ক্লিক করছি না। কাউকে দোষ দিতে চাই না। আমরা সবাই খারাপ করেছি। আলাদা করে বলতে চাই না যে দু–একজন খারাপ খেলেছি। আমরা সবাই খারাপ খেলেছি, মেনে নিচ্ছি।
পাকিস্তান ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ ব্যাট করেছেন পাঁচ নম্বরে এবং মুশফিক চার নম্বরে। কারণ হিসেবে মিরাজ বলেন, রিয়াদ ভাইকে (মাহমুদউল্লাহ) ওপরে ব্যাটিং করানো হয়েছে। কারণ, তিনি খুব ভালো খেলছেন, ভালো শেপে আছেন। আর তিনি আত্মবিশ্বাসীও এই মুহূর্তে। এটি বিবেচনা করেই তাকে ওপরে পাঠানো হয়েছে। মুশফিক ভাইকেও (মুশফিকুর রহিম।
দলের অবস্থা এখন কেমন এ নিয়ে জানতে চাইলে মিরাজ বলেন, হারলে তো সবারই খারাপ লাগে। কিন্তু দিনশেষে ক্রিকেট খেলায় হার জিত থাকবে এটা মেনে নিতে হবে। তারপরও বিশ্বকাপে আমাদের দুটি ম্যাচ আছে, ওগুলোতে ওভাবেই প্রস্তুতি নেবো।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যদি না খেলতে পারি তাহলে আমাদের সবার জন্যই খারাপ লাগবে। আমাদের বলেন বা আপনাদের (সাংবাদিকদের)! কারণ আপনারাও তো আমাদের মত কভার করতে পারবেন না…।