আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারত একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের পক্ষে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
শুক্রবার (৭ মার্চ) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ভারত একটি ‘স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল’ বাংলাদেশের পক্ষে। যেখানে সকল অমিমাংসিত বিষয় গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং ‘সমন্বিত ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
বাংলাদেশে ‘‘ক্রমবর্ধমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, গুরুতর অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সহিংস উগ্রপন্থীদের মুক্তি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের কর্মকর্তারা সম্প্রতি কলকাতায় যৌথ নদী কমিশনের ৮৬তম বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি পুনর্নবায়নের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। আগামী বছর এই চুক্তি পুনর্নবায়ন করার কথা রয়েছে।
মুখপাত্র জয়সওয়াল বলেন, উভয়পক্ষ গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি, পানির প্রবাহ পরিমাপ এবং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে।
বাংলাদেশে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) নিয়েও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় জয়সোয়ালকে। তবে সে প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে এই মুখপাত্র বলেন, আমরা এমন এক স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, বহুত্ববাদী, প্রগতিশীল বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাই, যেখানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হয়।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বারবার উল্লেখ করেছি হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দায়িত্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। আমি আবারও এই বিষয়ের ওপর জোর দেব। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি ও ধর্মীয় স্থানগুলোর নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে এ বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৩৭৪টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের পুলিশ ১২৫৪টি ঘটনা খতিয়ে দেখেছে। আর এই ঘটনাগুলোকে রাজনৈতিক মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। খুন, অগ্নিসংযোগ, হিংসার ঘটনাকে রাজনৈতিক রঙ না দিয়ে যথাযথ তদন্ত করুন, জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনুন।
এসময় কলকাতায় বাংলাদেশ ও ভারতের কর্মকর্তারা যৌথ নদী কমিশনের ৮৬তম বৈঠকে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
জয়সওয়াল বলেন, বছরে তিনবার নির্ধারিত এই নিয়মিত প্রযুক্তিগত সভাটি ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত কাঠামোগত ব্যবস্থার অংশ।বৈঠকে উভয় পক্ষ গঙ্গা পানি চুক্তি, জলপ্রবাহ, পরিমাপ এবং পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে।