Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে অশনি সংকেত

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২
  • ১৮৭ জন দেখেছেন

বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ১৬ শতাংশ। শীর্ষ ৩০ দেশের মধ্যে ২২ দেশ থেকেই রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ কমেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের তথ্য বিশ্লেষণে এমন তথ্য জানা গেছে। যার প্রভাব সামগ্রিক রেমিট্যান্স আহরণের ওপর পড়েছে। এছাড়া আকুর দেনা পরিশোধে পর বর্তমানে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যাকে মুখোমুখি অবস্থা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেমিট্যান্স আহরণ বাড়াতে বিদায়ী অর্থবছরে নীতিমালা শিথিল করেছে। বলা হয়েছিল, কোনো কাগজপত্র ছাড়াই যত খুশি ততো রেমিট্যান্স আনা যাবে। এতে বর্ধিত হারে অর্থাৎ আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা পেতেও কোনো বাধা থাকবে না। এ শিথিলতা চলমান রয়েছে। কিন্তু প্রবাস আয় আনতে নীতিমালা শিথিলের পরেও প্রবাহ বাড়ছে না।

এর অন্যতম কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারি শুরু পর যে হারে চাকরি হারিয়ে বিদেশ থেকে শ্রমিক ফিরে এসেছে ওই হারে যায়নি। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময়ে চলমান করোনাভাইরাসের প্রভাবের পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর সামগ্রিক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। যদিও জনশক্তি কর্মসংস্থা বু্যরোর হিসাবে বিদায়ী বছরে দেশে থেকে প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে সৌদি আরব থেকে। বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ২০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ওই সময়ে সৌদি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৫৪ কোটি ১৯ লাখ মার্কিন ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরে ছিল ৫৭২ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার।

মধ্যপ্রাচ্যের অপর দেশ আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৭ কোটি ডলার, যা আগের বছরে ছিল ২৪২ কোটি মার্কিন ডলার। আরব আমিরাত থেকে বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ১৫ শতাংশের ওপরে। আগের অর্থবছরে কাতার থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা বিদায়ী অর্থবছরে এসেছে ১৩৪ কোটি ডলার। কাতার থেকে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ৭.১৭ শতাংশ।

এর বাইরে সিঙ্গাপুর থেকে বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ৩৮.৩০ শতাংশ। রেমিট্যান্স কমে গেছে মালয়েশিয়া থেকেও। বিদায়ী অর্থবছরে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স কমে গেছে ৪৯ শতাংশ।

পরিসংখ্যান মতে, বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার তালিকায় আরো রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, দক্ষিণ আফ্রিকা, জর্দান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, লেবালন, ব্রুনাই, মালদ্বীপ, ইরাক, সুইডেন, বেলজিয়াম, হংকংসহ আরো কয়েকটি দেশ থেকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাস আয় কমেছে ১৬ শতাংশ। আর একক মাস হিসেবে মে মাসে কমেছে সোয়া ১৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, আগের মাস এপ্রিলের তুলনায়ও প্রবাস আয় কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে সম্প্রতি আকুর দেনা পরিশোধের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বর্তমানে ৩৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। আইএমএফএর হিসাবে চাহিদার সাথে সরবরাহের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় টাকা বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। আমদানি পর্যায়ে ব্যাংকারদের প্রতি ডলার পেতে এখন কার্ব মার্কেটে ৯৮ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এ ঘাটতি সমন্বয় করতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিলাসজাত পণ্যসহ অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিন দেয়া হয়েছে। পণ্য আমদানিতে নানা বিধি-নিষেধ দেয়া হয়েছে। আগে যেখানে ৫ লাখ টাকা বিদেশ থেকে পাঠালে বৈদেশিক কাগজপত্র লাগতো এখন সে নির্দেশনা তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংকট মোকাবিলায় আইএমএফ থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা নিতে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে সরকার।

আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম-৬) ম্যানুয়াল অনুযায়ী, এসব দায় রিজার্ভ হিসেবে বিবেচিত হবে না। সংস্থাটির ভাষায় এগুলো নন লিকুইড সম্পদ বা ইনভেস্টমেন্ট গ্রেড সিকিউরিটিজ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, রিজার্ভের প্রকৃত মজুদ ৩২ বিলিয়ন ডলার। এ মজুদ দিয়ে চার মাসের কিছু বেশি চলা যাবে। এর সঙ্গে সেবা খাতের দায় পরিশোধ, সরকারি-বেসরকারি ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ যোগ করলে আমদানির জন্য আরও কম রিজার্ভ থাকবে।

আইএমএফ মনে করে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ), গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ), লং টার্ম ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ বিমানকে দেওয়া অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার দায়। বর্তমানে ইডিএফে ৭০০ কোটি, জিটিএফে ২০ কোটি, এলটিএফএফে ৩ কোটি ৮৫ লাখ এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৬৪ কোটি ডলার ও বাংলাদেশ বিমানকে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণ দেওয়া হয়েছে। এই ৭৯২ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের বাইরে কারেন্সি সোয়াপের আওতায় শ্রীলংকাকে দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি ডলার।

পিআরআইএর এ নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, এখন পর্যন্ত রিজার্ভের লেভেল ঠিক আছে। তবে আরও কমে গেলে শঙ্কা আছে। রিজার্ভ যাতে না কমে, সে জন্য আমদানির রাশ টানতেই হবে। এ জন্য আমদানি অর্থায়নের সুদহার ও মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে হবে। এ ছাড়া আন্তঃব্যাংক ও খোলাবাজারের ডলারের রেটের পার্থক্য ২ টাকার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত রীতি মেনে দীর্ঘদিন ধরে একই পদ্ধতিতে রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে রিজার্ভ বেশি দেখানোর সুযোগ নেই, যা আইএমএফকেও চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে অশনি সংকেত

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২

বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ১৬ শতাংশ। শীর্ষ ৩০ দেশের মধ্যে ২২ দেশ থেকেই রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ কমেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের তথ্য বিশ্লেষণে এমন তথ্য জানা গেছে। যার প্রভাব সামগ্রিক রেমিট্যান্স আহরণের ওপর পড়েছে। এছাড়া আকুর দেনা পরিশোধে পর বর্তমানে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যাকে মুখোমুখি অবস্থা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেমিট্যান্স আহরণ বাড়াতে বিদায়ী অর্থবছরে নীতিমালা শিথিল করেছে। বলা হয়েছিল, কোনো কাগজপত্র ছাড়াই যত খুশি ততো রেমিট্যান্স আনা যাবে। এতে বর্ধিত হারে অর্থাৎ আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা পেতেও কোনো বাধা থাকবে না। এ শিথিলতা চলমান রয়েছে। কিন্তু প্রবাস আয় আনতে নীতিমালা শিথিলের পরেও প্রবাহ বাড়ছে না।

এর অন্যতম কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারি শুরু পর যে হারে চাকরি হারিয়ে বিদেশ থেকে শ্রমিক ফিরে এসেছে ওই হারে যায়নি। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময়ে চলমান করোনাভাইরাসের প্রভাবের পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর সামগ্রিক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। যদিও জনশক্তি কর্মসংস্থা বু্যরোর হিসাবে বিদায়ী বছরে দেশে থেকে প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে সৌদি আরব থেকে। বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ২০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ওই সময়ে সৌদি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৫৪ কোটি ১৯ লাখ মার্কিন ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরে ছিল ৫৭২ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার।

মধ্যপ্রাচ্যের অপর দেশ আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৭ কোটি ডলার, যা আগের বছরে ছিল ২৪২ কোটি মার্কিন ডলার। আরব আমিরাত থেকে বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ১৫ শতাংশের ওপরে। আগের অর্থবছরে কাতার থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা বিদায়ী অর্থবছরে এসেছে ১৩৪ কোটি ডলার। কাতার থেকে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ৭.১৭ শতাংশ।

এর বাইরে সিঙ্গাপুর থেকে বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ৩৮.৩০ শতাংশ। রেমিট্যান্স কমে গেছে মালয়েশিয়া থেকেও। বিদায়ী অর্থবছরে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স কমে গেছে ৪৯ শতাংশ।

পরিসংখ্যান মতে, বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার তালিকায় আরো রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, দক্ষিণ আফ্রিকা, জর্দান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, লেবালন, ব্রুনাই, মালদ্বীপ, ইরাক, সুইডেন, বেলজিয়াম, হংকংসহ আরো কয়েকটি দেশ থেকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাস আয় কমেছে ১৬ শতাংশ। আর একক মাস হিসেবে মে মাসে কমেছে সোয়া ১৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, আগের মাস এপ্রিলের তুলনায়ও প্রবাস আয় কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে সম্প্রতি আকুর দেনা পরিশোধের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বর্তমানে ৩৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। আইএমএফএর হিসাবে চাহিদার সাথে সরবরাহের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় টাকা বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। আমদানি পর্যায়ে ব্যাংকারদের প্রতি ডলার পেতে এখন কার্ব মার্কেটে ৯৮ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এ ঘাটতি সমন্বয় করতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিলাসজাত পণ্যসহ অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিন দেয়া হয়েছে। পণ্য আমদানিতে নানা বিধি-নিষেধ দেয়া হয়েছে। আগে যেখানে ৫ লাখ টাকা বিদেশ থেকে পাঠালে বৈদেশিক কাগজপত্র লাগতো এখন সে নির্দেশনা তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংকট মোকাবিলায় আইএমএফ থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা নিতে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে সরকার।

আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম-৬) ম্যানুয়াল অনুযায়ী, এসব দায় রিজার্ভ হিসেবে বিবেচিত হবে না। সংস্থাটির ভাষায় এগুলো নন লিকুইড সম্পদ বা ইনভেস্টমেন্ট গ্রেড সিকিউরিটিজ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, রিজার্ভের প্রকৃত মজুদ ৩২ বিলিয়ন ডলার। এ মজুদ দিয়ে চার মাসের কিছু বেশি চলা যাবে। এর সঙ্গে সেবা খাতের দায় পরিশোধ, সরকারি-বেসরকারি ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ যোগ করলে আমদানির জন্য আরও কম রিজার্ভ থাকবে।

আইএমএফ মনে করে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ), গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ), লং টার্ম ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ বিমানকে দেওয়া অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার দায়। বর্তমানে ইডিএফে ৭০০ কোটি, জিটিএফে ২০ কোটি, এলটিএফএফে ৩ কোটি ৮৫ লাখ এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৬৪ কোটি ডলার ও বাংলাদেশ বিমানকে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণ দেওয়া হয়েছে। এই ৭৯২ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের বাইরে কারেন্সি সোয়াপের আওতায় শ্রীলংকাকে দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি ডলার।

পিআরআইএর এ নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, এখন পর্যন্ত রিজার্ভের লেভেল ঠিক আছে। তবে আরও কমে গেলে শঙ্কা আছে। রিজার্ভ যাতে না কমে, সে জন্য আমদানির রাশ টানতেই হবে। এ জন্য আমদানি অর্থায়নের সুদহার ও মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে হবে। এ ছাড়া আন্তঃব্যাংক ও খোলাবাজারের ডলারের রেটের পার্থক্য ২ টাকার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত রীতি মেনে দীর্ঘদিন ধরে একই পদ্ধতিতে রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে রিজার্ভ বেশি দেখানোর সুযোগ নেই, যা আইএমএফকেও চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।