নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে সিজারে সন্তান জন্মদান। স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতাল কেন্দ্রিক প্রসব বাড়ার কারণে সি-সেকশন বা সিজারিয়ানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সিজারের ঘটনা বেড়ে ৩৪ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সিজারের বেশিরভাগই হয়ে থাকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল রেডিসনে ব্লুতে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস) ২০২২-এর প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য দেওয়া হয়। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) সভাটির আয়োজন করে।
২০২২ সালে এসে দেশের মোট সিজারে জন্মদানের ৮৪ শতাংশই হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। এছাড়া ১৪ শতাংশ হয়েছে সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বাকি ২ শতাংশ হয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় (এনজিওতে)।
২০২২ সালে বাংলাদেশে মোট ৩৭ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এর মধ্যে ১৬ লাখ শিশু সিজারের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করে। ২০২২ সালে ঘরে শিশু জন্মদান হয়েছে ১২ লাখ ৬২ হাজার ৩২৪ জন, সরকারিতে ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৮ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১৬ লাখ ৩১ হাজার ২৫৫ জন ও এনজিওতে ৬১ হাজার ৪৮৯ জন। আর এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে সিজার হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮ জনের। বেসরকারিতে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার ৯৪২ জনের সিজার হয়েছে। এছাড়া এনজিওতে সিজার হয়েছে ২২ হাজার ১৩৬ জনের।
সভায় এ সিজার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
এবারের প্রাপ্ত ফলাফলের দেখা গেছে, বিগত বছরগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশু স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শিশু মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে।
ধারাবাহিক তিন বছরের গড় অনুযায়ী, পাঁচ বছরের নিচে জীবিত শিশু জন্মের পর মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৪৩ থেকে ৩১-এ নেমে এসেছে। এক বছরের কম বয়সের শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫ জন এবং এক মাসের কম বয়সের শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২০ জন। পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে অর্থাৎ সঠিক বৃদ্ধি ঘটছে না এই হার ৩১ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে এলেও, কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের সংখ্যায় কোনও পরিবর্তন হয়নি।
অবহিতকরণ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, এনডিসি, ইউএসএআই ডির বাংলাদেশের পরিচালক (পপুলেশন, হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন) ক্যারি রাসমুসেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম।