Dhaka শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, তবে আক্রান্ত হলে ছেড়ে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন বলেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, তবে আক্রান্ত হলে ছেড়ে দেওয়া হবে না। মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবি সদস্য বাড়ানো হয়েছে। অস্থির পরিবেশ চলছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে বিভিন্ন কারনেই দেরী হচ্ছে, তবে সরকার সব রকমের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। আরাকান আর্মি একের পর এক মিয়ানমার পুলিশের ঘাঁটি দখল করে নিচ্ছে। আত্মরক্ষার্থে ১৪ জন মিয়ানমার পুলিশের সদস্য বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। অস্ত্র নিয়ে তাদের আটক রাখা হয়েছে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে।

সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বনে, মিয়ানমারে সংকট অনেক দিনের। আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশ কখনও যুদ্ধে জড়াতে চায় না – এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে আসছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে। তার অর্থ এই নয়, কেউ গায়ে এসে পড়লে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। সেটার জন্য বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।

শনিবার থেকে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লাগাতার গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের একটি গোলা সীমান্ত অতিক্রম করে এসে সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্লাসে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমার জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আমাদের সীমানায় যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কোস্ট গার্ড ও পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে ব্যাপারে সরকার খুব সতর্ক রয়েছে।

তিনি বলেন, তীব্র গোলাগুলিতে দিশেহারা হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৪ সদস্যকে ফেরত পাঠাতে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মিয়ানমারের ঘটনা নতুন নয়। দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সীমানার ভেতরে ঢুকে সহযোগিতা চেয়েছেন। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

সীমান্তের ওপার থেকে গুলি ও মর্টার শেল বাংলাদেশে আসায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, কোনারপাড়া, ভাজাবনিয়া ও বাইশফাঁড়ি এলাকার শত শত পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তের ১০০ গজ দূরত্বে থাকা মিশকাতুন নবী দাখিল মাদ্রাসাসহ সীমান্ত এলাকার ৫টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন, যদি এভাবে আত্মরক্ষার্থে ঢুকে থাকে, তাহলে জায়গা দেবেন কি না— জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সীমান্তের কাছে বর্ডার পুলিশ যারা, তারা আত্মরক্ষার্থে বাংলাদেশে ঢুকে থাকলে করণীয় কিছু থাকে না। তাদেরকে আবার ফেরত দিতে হবে। আমরা তাদের আটক রেখেছি, আবার ফেরত পাঠাব।

রোহিঙ্গাদের আর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত একটিই— সীমান্তে এখন যুদ্ধ চলছে, এখানে এখন কারও আসা উচিত হবে না। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যদি মনে করে, তাদের ওখানে যুদ্ধ হচ্ছে, তারা অন্য কোথাও যাবে; তাহলে এই মুহূর্তে আর কাউকে আমরা ঢুকতে দেব না।

মন্ত্রী আরও বলেন, মানবাধিকারের প্রশ্ন এখন আসবে না, কারণ যুদ্ধ চলছে। গোলাগুলি চলছে। এখানে কারও আসা উচিত হবে না। যেই আসবে, তাকে আবদ্ধ করে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, তবে আক্রান্ত হলে ছেড়ে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৭:১৫:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন বলেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, তবে আক্রান্ত হলে ছেড়ে দেওয়া হবে না। মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবি সদস্য বাড়ানো হয়েছে। অস্থির পরিবেশ চলছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে বিভিন্ন কারনেই দেরী হচ্ছে, তবে সরকার সব রকমের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। আরাকান আর্মি একের পর এক মিয়ানমার পুলিশের ঘাঁটি দখল করে নিচ্ছে। আত্মরক্ষার্থে ১৪ জন মিয়ানমার পুলিশের সদস্য বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। অস্ত্র নিয়ে তাদের আটক রাখা হয়েছে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে।

সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বনে, মিয়ানমারে সংকট অনেক দিনের। আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশ কখনও যুদ্ধে জড়াতে চায় না – এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে আসছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে। তার অর্থ এই নয়, কেউ গায়ে এসে পড়লে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। সেটার জন্য বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।

শনিবার থেকে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লাগাতার গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের একটি গোলা সীমান্ত অতিক্রম করে এসে সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্লাসে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমার জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আমাদের সীমানায় যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কোস্ট গার্ড ও পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে ব্যাপারে সরকার খুব সতর্ক রয়েছে।

তিনি বলেন, তীব্র গোলাগুলিতে দিশেহারা হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৪ সদস্যকে ফেরত পাঠাতে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মিয়ানমারের ঘটনা নতুন নয়। দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সীমানার ভেতরে ঢুকে সহযোগিতা চেয়েছেন। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

সীমান্তের ওপার থেকে গুলি ও মর্টার শেল বাংলাদেশে আসায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, কোনারপাড়া, ভাজাবনিয়া ও বাইশফাঁড়ি এলাকার শত শত পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তের ১০০ গজ দূরত্বে থাকা মিশকাতুন নবী দাখিল মাদ্রাসাসহ সীমান্ত এলাকার ৫টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন, যদি এভাবে আত্মরক্ষার্থে ঢুকে থাকে, তাহলে জায়গা দেবেন কি না— জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সীমান্তের কাছে বর্ডার পুলিশ যারা, তারা আত্মরক্ষার্থে বাংলাদেশে ঢুকে থাকলে করণীয় কিছু থাকে না। তাদেরকে আবার ফেরত দিতে হবে। আমরা তাদের আটক রেখেছি, আবার ফেরত পাঠাব।

রোহিঙ্গাদের আর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত একটিই— সীমান্তে এখন যুদ্ধ চলছে, এখানে এখন কারও আসা উচিত হবে না। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যদি মনে করে, তাদের ওখানে যুদ্ধ হচ্ছে, তারা অন্য কোথাও যাবে; তাহলে এই মুহূর্তে আর কাউকে আমরা ঢুকতে দেব না।

মন্ত্রী আরও বলেন, মানবাধিকারের প্রশ্ন এখন আসবে না, কারণ যুদ্ধ চলছে। গোলাগুলি চলছে। এখানে কারও আসা উচিত হবে না। যেই আসবে, তাকে আবদ্ধ করে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেব।