নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ৫ আগস্টের পর ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। তবে সম্পর্ক কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাভিত্তিক (সার্ক) সাংবাদিকদের ফোরামের এক আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের কারণে দুই দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ৫ আগস্টের পরে সম্পর্কের গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। তবে সম্পর্ক কীভাবে এগিয়ে নেযা যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারত যদি আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিতে পারতো তাহলে ভারতের সুবিধা হতো, আমাদের সুবিধা হতো। কিন্তু সেটা দুঃখজনকভাবে হচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান খুবই ভালো। কিন্তু গত দুই-তিন মাসে যে ব্যবসায়িক মন্দা যাচ্ছে সেটা কি শুধু বাংলাদেশকে ইফেক্ট করছে?
তিনি বলেন, এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশকে ইফেক্ট করছে না, ভারতকেও ইফেক্ট করছে। পরিমাণটা অত কিন্তু বেশি না, তবে ইফেক্ট কিন্তু পড়ছে। কলকাতার অর্থনীতি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারব। অচলবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো যোগাযোগ স্থাপন। আগামীকাল ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসছেন আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করতে। এটা স্ট্যান্ডিং মেকানিজম, অস্বাভাবিক কিছু না। প্রতিবছর আমাদের একজন যান ওপাশে, পরের বছর ওপাশ থেকে একজন আসেন। এটাকে কনসাল্টেশন বলা হয়, যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। আমি আশা করব তারা একটা ফলপ্রসূ আলোচনা করবেন।
তিনি বলেন, আমি এর আগে বলেছি, যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে স্বীকার করতে হবে যে সমস্যা আছে। আমাদের এটিও স্বীকার করতে হবে যে পাঁচ আগস্টের আগে এবং পরে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের একটি গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে। সে হিসেবে আমি প্রস্তাব করেছিলাম আমাদের যে ফরেন অ্যাফেয়ার্স কনসালটেশন আছে সেটি শুরু করব।
আঞ্চলিক দারিদ্র্য দূর করতে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা যদি পরস্পরকে সহযোগিতা করি তাহলে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য দূর করা যাবে। দারিদ্র্য থেকে সবাইকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। আমরা কিছুটা সাফল্য অর্জন করিনি তা কিন্তু না। আরো কিছুটা পথ পাড়ি দিতে হবে। সেজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। সার্ককে আমাদের কর্মক্ষমতা পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের সঙ্গে স্টান্ডিং কমিটির মিটিং করাই লক্ষ্য। দেশ ও স্বার্থ রক্ষায় একটা সামিট করার লক্ষ্য রয়েছে।
ফোরামের প্রেসিডেন্ট নাসির আল মামুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন দ্য নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল আওয়াল মিন্টু, ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া প্রমুখ।