নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকার বৈধ কথা, ন্যায়ের কথা সহ্য করতে পারে না। যা ফ্যাসিস্টের লক্ষণ। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলা দেওয়া হয়েছে, রায়ও ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তাকে এক প্রকার নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের কর্মীদের উপর অজস্র অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে। এ সরকার ভয়-ভীতি দেখিয়েই টিকে থাকতে চায়, এটাই তাদের অস্তিত্বের চাবিকাঠি।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) প্রেস ক্লাবে ‘ যায়যায়দিন পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক শফিক রেহমান ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) আহ্বায়ক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজার’ প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।
তিনি বলেন, এমন একটা দেশ আমরা স্বাধীন করেছি যেখানে সরকারি কর্মকর্তারা এখন রাজনীতির কথা বলেন। সরাসরি রাজনীতি করতে চাইলে উর্দি খুলে ফেলুন। কী দরকার এসব বলার? কারণ আপনারা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলেন। সুতরাং জনগণ তা মেনে নেবে না। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে পেশাজীবীদের আন্দোলন আমাদের অনুপ্রাণিত করে। এ আন্দোলন চলমান থাকুক।
ফখরুল বলেন, এ সরকারের সফলতা হলো তারা এ দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। শাসন বিভাগ কব্জা করেছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। আমরা এখন অস্তিত্ব সংগ্রামের লড়াইয়ে নেমেছি। এক দফা দাবি সবখানে ছড়িয়ে দিতে হবে। তারেক জিয়ার ডাকে সাড়া দিতে হবে। এ সরকার ভেঙে দিয়ে নতুন পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে আদালত, বিচারব্যবস্থা। বিচারকের কাছে যখন বিচার চাইতে যায় সেখানে যখন অবিচার চলতে থাকে তখনতো আর মানুষের কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকে না। সেজন্যেই আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে সফলতা কোথায় জানেন? এ রাষ্ট্রকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সবচেয়ে সফল হয়েছে তারা। দেশটি এখন ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে তারা বিচারব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে, পার্লামেন্টারি ব্যবস্থা বদলে দিয়েছে, প্রশাসনকে ভেঙে দিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে দিয়েছে। আর সংবাদমাধ্যমগুলোকে কব্জা করে ধরেছে। যার ফলশ্রুতিতে আজকে মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমান দেশের বাইরে রয়েছে। আমাদের অসংখ্য সাংবাদিক এখন বেকার হয়ে আছে, তাদের চাকরি নেই।
দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কতজনের কথা বলব। আজকেও মহানগর দক্ষিণের এক নেতাকে নির্যাতন করার পর কারাগারে মারা গেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে কুপিয়েছে। সে মারা গেছে। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে দুই বছর অন্ধকার কারাগারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। সঞ্চালনা করেন বিএসপিপির সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা রুহুল আমীন গাজী, বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজে একাংশের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাঈদ খান প্রমুখ।
সামাবেশ শেষে পেশাজীবী পরিষদের পক্ষ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলটি প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু করে হাইকোর্ট চত্বর ঘুরে পুনরায় প্রেস ক্লাবে এসে শেষ হয়।