স্পোর্টস ডেস্ক :
তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে পাত্তাই দেয়নি নিউজিল্যান্ড। যে কারণে ধবলধোলাই এড়াতে শেষ ম্যাচে জিততেই হতো লঙ্কানদের। অবশেষে বহুল কাঙ্ক্ষিত জয়টি পেয়েছে চারিথ আসালঙ্কার দল। শুধু জয় নয়, নিউজিল্যান্ডকে রীতিমতো নাকানিচুবানি খাইয়েছে সফরকারীরা। সিরিজের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হেরেছে ১৪০ রানে এ ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ালো লঙ্কানরা।
অকল্যান্ডে শনিবার (১১ জানুয়ারি) তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার জয় ১৪০ রানে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রানের হিসেবে এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। সেরা ২০০৭ সালে এই অকল্যান্ডেই ১৮৯ রানের জয়।
পাথুম নিসাঙ্কা, কুসাল মেন্ডিস, জানিথ লিয়ানাগের ফিফটিতে ৮ উইকেটে ২৯০ রান তোলে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কা। পরে আসিথা ফার্নান্দোর দুর্দান্ত এক স্পেল এবং মাহিশ থিকশানা ও ইশান মালিঙ্গার দারুণ বোলিংয়ে স্বাগতিকদের তারা থামিয়ে দেয় ১৫০ রানে।
প্রথম দুই ম্যাচে লঙ্কানদের হারিয়ে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে কিউইরা। কিন্তু এবার আর নিজেদের মেলে ধরতে পারল না তারা। নিজ আঙিনায় সবশেষ ২০ ওয়ানডেতে এটি তাদের স্রেফ দ্বিতীয় হার।
লঙ্কানদের এই জয়ের নায়ক আসিথার প্রথম স্পেলে এলোমেলো হয়ে যায় কিউইদের ব্যাটিং। নতুন বলে পাঁচ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন এই পেসার। পরে আরও দুই ওভার করলেও উইকেট পাননি তিনি। তাকে সঙ্গ দেওয়া থিকশানা ও মালিঙ্গাও নেন তিনটি করে উইকেট।
ম্যাচের প্রথমভাগে দাপট দেখান লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৫ ছক্কা ও ৬ চারে ৪২ বলে ৬৬ রান করেন নিসাঙ্কা। ৪৮ বলে ৫৪ রান করতে ২ ছক্কা ও ৫ চার মারেন মেন্ডিস। ২ ছক্কা ও ৩ চারে লিয়ানাগের ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৫৩ রান।
ম্যাচের প্রথম বলে ম্যাট হেনরিকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন নিসাঙ্কা। ন্যাথান স্মিথের ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা মারেন শ্রীলঙ্কা ওপেনার। ৩১ বলে ফিফটিতে পা রাখেন তিনি।
সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করার সময়ই নিতম্বে টান লাগে নিসাঙ্কার। তখন আর ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি।
আভিশকা ফার্নান্দোর বিদায়ের পর নতুন দুই ব্যাটসম্যান কুসাল মেন্ডিস ও কামিন্দু মেন্ডিসের ব্যাটে বাড়তে থাকে সফরকারীদের রান। তাদের ৮৭ রানের জুটি ভাঙে ১৫ রানে জীবন পেয়ে ফিফটি করা মেন্ডিসের বিদায়। রানের খাতা খুলতে পারেননি চারিথ আসালাঙ্কা।
স্মিথের বলে মিড অনে কামিন্দুর সহজ ক্যাচ ছাড়েন হেনরি। ৩৫ রানে বেঁচে যাওয়া এই ব্যাটসম্যানকে পরে হেনরিই কট বিহাইন্ডে ফেরান। ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৪৬ রান করেন কামিন্দু।
আহত অবসর নিয়ে মাঠ ছাড়া নিসাঙ্কা আবার নামেন ব্যাটিংয়ে। কিন্তু এবার তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মিচেল স্যান্টনার। পরের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লিয়ানাগে বাড়ান দলের রান। ৫১ বলে ফিফটি ছোঁয়া ব্যাটসম্যান বিদায় নেন শেষ ওভারে।
রান তাড়ায় কিউইদের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। ২১ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে তাদের চেপে ধরে লঙ্কানরা। উইল ইয়াংকে রানের খাতা খুলতে দেননি থিকশানা। রাচিন রাভিন্দ্রাকে বোল্ড করা আসিথা সপ্তম ওভারে বিদায় করেন টম ল্যাথাম ও গ্লেন ফিলিপসকে। মাঝে ড্যারিল মিচেলকে ড্রেসিং রুমে পাঠান মালিঙ্গা।
ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া নিউ জিল্যান্ডের এক প্রান্ত ধরে রাখেন মার্ক চ্যাপম্যান। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। আরেক প্রান্তে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে এগিয়ে যান চ্যাপম্যান, ৪৬ বলে পা রাখেন পঞ্চাশে।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ১ ছক্কা ও ১০ চারে ৮১ বলে ৮১ রান করেন চ্যাপম্যান। তিনি ছাড়া কিউইদের ইনিংসে ২০ রানও করতে পারেননি আর কেউ।