নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, দোকান মালিক এবং কর্মচারীদের ঈদ উপহার হিসেবে ৯ কোটি টাকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বরাদ্দ করা টাকা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও মালিকদের মোবাইলে পৌঁছে গেছে।
গত ৪ এপ্রিল ভোর ৬টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গবাজারের পাশের এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেট, মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও মার্কেটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। উদ্ধারকাজ ও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীরও। সবার চেষ্টায় বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুন তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর। আর পুরোপুরি আগুন নেভে ৭৫ ঘণ্টা পর অর্থাৎ ৭ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ৭০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চায় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও মহাসচিব মো. জহিরুল হক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি দাবি করা হয়ঃ
১. প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ৭০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ।
২. তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত।
৩. ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যাতে নিজ নিজ দোকান ফিরে পান, সে ব্যবস্থাগ্রহণ।
এ ঘটনায় ওই দিনই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীনকে আহ্বায়ক ও প্রধান সমাজকল্যাণ এবং বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীনকে সদস্য সচিব করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ডিএসসিসি।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর ১১ এপ্রিল ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।
প্রতিবেদনে তিন হাজার ৮৪৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর নামের তালিকাসহ বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডের সময় চৈত্রের খরতাপ ও বাতাসের প্রবাহ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও ডিএসসিসির মালিকানাধীন টিন, কাঠ ও লোহার কাঠামো দ্বারা তৈরি বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি মার্কেট ও মহানগর শপিং কমপ্লেক্স সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। সাততলা বিশিষ্ট এনেক্সকো টাওয়ারের বহু দোকান এবং একই সঙ্গে রাস্তার পশ্চিম পাশের বঙ্গ ইসলামিয়া সুপার মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সের বহু দোকান পুড়ে যায়।