Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো যেন আদালত পরিচালিত না হয় : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো যেন আদালত পরিচালিত না হয়। সেই নির্মম আদালত, নির্মম বিচার ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে দেশে সত্যিকার অর্থে একটি আইনের শাসনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানো শেষে এ কথা বলেন তিনি। বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যান তিনি।

তিনি বলেন, গতকাল শেখ হাসিনার সঙ্গে গোপালগঞ্জের একজন ছাত্রলীগ নেতার একটা অডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা বলছেন, ‘আপা পুলিশ প্রতিদিন পাঁচ-ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।’ শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক মাসও হয়নি অথচ স্বেচ্ছাসেবক দলের দিদারকে গোপালগঞ্জে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরপরও পুলিশ তাদের পূজা করবে? তাদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানাবে?

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গতকাল ছাত্রলীগের ওই ছেলের সঙ্গে কথোপকথন করে আপনি যে বর্বর নিষ্ঠুর, রক্ত পান করা ছাড়া অন্য কোনো বিবেক আপনার নেই, মানবতা নেই সেটা আবার প্রমাণ করলেন। অথচ আপনি বলতে পারতেন, ওইখানে হত্যাকাণ্ড হলো কেন? অন্য একটি রাজনৈতিক দলের নেতা মারা গেল কেন? বলেননি কারণ আপনি ছিলেন আওয়ামী লীগের জননী, গডফাদারদের জননী, টাকা পাচারকারীদের জননী।

বিএনপির এ নেতা বলেন, এই কারণেই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের বাইরে যে গণতন্ত্রের জন্য কথা বলেছে তাকে খুন-গুম-হত্যা করেছেন। আয়নাঘরে আটকে রাখতেও এতটুকু বিবেকবোধ কাজ করেনি আপনার। এখন আপনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে যেভাবে ছাত্রলীগ যুবলীগকে উস্কে দিয়েছেন একই কায়দা এখন উস্কানি দিয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। একটা রক্তাক্ত বাংলাদেশের আবহ তৈরি করে আপনি মনে করেন, সেই সুযোগে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন। তা এই দেশের মানুষ হতে দেবে না।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরের সড়ক বিভাগ থেকে গত ১৫ বছরে কত হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে তার রিপোর্ট এখন প্রকাশিত হচ্ছে। বিভিন্ন সেক্টর থেকে হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে, এখন প্রতিদিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হচ্ছে। সুতরাং এই ধরনের লুণ্ঠন ও টাকা পাচারের দেশ তৈরি করার জন্য শেখ হাসিনা কাজ করেছেন।

রিজভী বলেন, গত ১৫ বছর বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে গুম খুন বিচার-বহির্ভূত হত্যা করে শেখ হাসিনা মনে করেছিলেন এই যে লুটপাট ও মাফিয়া রাজ্য গড়ে তুলেছিল তা চিরজীবনের জন্য বহাল থাকবে। শেখ হাসিনা তার পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি, যেটা তিনি নিজে গর্ব করে বলেন। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো যেন আদালতে বিচার কাজ পরিচালিত না হয়। সেই নির্মম আদালত, নির্মম বিচার ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে দেশে সত্যিকার অর্থে একটি আইনের শাসনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক।

দেশবাসী সত্যিকার একটি আইনের শাসনের সরকার চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে গ্রেফতার করা হয়েছিল; গ্রেফতার করে তাকে সাজা দেওয়া হয় ৭০ বছর। একটা অনাচারমূলক রাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত; শেখ হাসিনা যে মাফিয়া রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন, সেখানে হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ৭০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ হাবিবুল ইসলাম হাবিব নাকি শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা করেছিল। আমরা সেদিনের ঘটনা জানি, হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঢাকায় অবস্থান করছিল। আমাদের একটি প্রোগ্রাম ছিল ঢাকায়, অথচ তার নামে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা সাজানো মামলা দেওয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সদ্য কারামুক্ত বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো যেন আদালত পরিচালিত না হয় : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো যেন আদালত পরিচালিত না হয়। সেই নির্মম আদালত, নির্মম বিচার ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে দেশে সত্যিকার অর্থে একটি আইনের শাসনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানো শেষে এ কথা বলেন তিনি। বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যান তিনি।

তিনি বলেন, গতকাল শেখ হাসিনার সঙ্গে গোপালগঞ্জের একজন ছাত্রলীগ নেতার একটা অডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা বলছেন, ‘আপা পুলিশ প্রতিদিন পাঁচ-ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।’ শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক মাসও হয়নি অথচ স্বেচ্ছাসেবক দলের দিদারকে গোপালগঞ্জে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরপরও পুলিশ তাদের পূজা করবে? তাদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানাবে?

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গতকাল ছাত্রলীগের ওই ছেলের সঙ্গে কথোপকথন করে আপনি যে বর্বর নিষ্ঠুর, রক্ত পান করা ছাড়া অন্য কোনো বিবেক আপনার নেই, মানবতা নেই সেটা আবার প্রমাণ করলেন। অথচ আপনি বলতে পারতেন, ওইখানে হত্যাকাণ্ড হলো কেন? অন্য একটি রাজনৈতিক দলের নেতা মারা গেল কেন? বলেননি কারণ আপনি ছিলেন আওয়ামী লীগের জননী, গডফাদারদের জননী, টাকা পাচারকারীদের জননী।

বিএনপির এ নেতা বলেন, এই কারণেই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের বাইরে যে গণতন্ত্রের জন্য কথা বলেছে তাকে খুন-গুম-হত্যা করেছেন। আয়নাঘরে আটকে রাখতেও এতটুকু বিবেকবোধ কাজ করেনি আপনার। এখন আপনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে যেভাবে ছাত্রলীগ যুবলীগকে উস্কে দিয়েছেন একই কায়দা এখন উস্কানি দিয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। একটা রক্তাক্ত বাংলাদেশের আবহ তৈরি করে আপনি মনে করেন, সেই সুযোগে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন। তা এই দেশের মানুষ হতে দেবে না।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরের সড়ক বিভাগ থেকে গত ১৫ বছরে কত হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে তার রিপোর্ট এখন প্রকাশিত হচ্ছে। বিভিন্ন সেক্টর থেকে হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে, এখন প্রতিদিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হচ্ছে। সুতরাং এই ধরনের লুণ্ঠন ও টাকা পাচারের দেশ তৈরি করার জন্য শেখ হাসিনা কাজ করেছেন।

রিজভী বলেন, গত ১৫ বছর বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে গুম খুন বিচার-বহির্ভূত হত্যা করে শেখ হাসিনা মনে করেছিলেন এই যে লুটপাট ও মাফিয়া রাজ্য গড়ে তুলেছিল তা চিরজীবনের জন্য বহাল থাকবে। শেখ হাসিনা তার পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি, যেটা তিনি নিজে গর্ব করে বলেন। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো যেন আদালতে বিচার কাজ পরিচালিত না হয়। সেই নির্মম আদালত, নির্মম বিচার ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে দেশে সত্যিকার অর্থে একটি আইনের শাসনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক।

দেশবাসী সত্যিকার একটি আইনের শাসনের সরকার চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে গ্রেফতার করা হয়েছিল; গ্রেফতার করে তাকে সাজা দেওয়া হয় ৭০ বছর। একটা অনাচারমূলক রাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত; শেখ হাসিনা যে মাফিয়া রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন, সেখানে হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ৭০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ হাবিবুল ইসলাম হাবিব নাকি শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা করেছিল। আমরা সেদিনের ঘটনা জানি, হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঢাকায় অবস্থান করছিল। আমাদের একটি প্রোগ্রাম ছিল ঢাকায়, অথচ তার নামে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা সাজানো মামলা দেওয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সদ্য কারামুক্ত বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ।