স্পোর্টস ডেস্ক :
কাতার বিশ্বকাপের সময় অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া জানিয়েছিলেন, ক্যারিয়ারের শেষটা আর্জেন্টিনার কাটাতে চান। শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলতে চান। তবে বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন তারকার সেই ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না। মেয়েকে হত্যার হুমকির পর নিরাপত্তা শঙ্কায় জন্মভূমিতে ফিরছেন না এই উইঙ্গার।
রোজারিও আর্জেন্টিনার তৃতীয় বৃহত্তম শহর। সাম্প্রতিক সময়ে এ শহরে গ্যাংভিত্তিক অপরাধের বিস্তার ঘটেছে। তারই জেরে বুলেটবিদ্ধ শূকরের একটি মাথা হুমকি হিসেবে ডি মারিয়ার পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। এরপর থেকেই নিরাপত্তার শঙ্কায় ভুগছেন তিনি। অবশেষে জন্মভূমিতে না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আর্জেন্টিনার টিভি স্টেশন ‘রোজারিও ৩’কে দি মারিয়া বলেন, আমাদের বোনের ব্যবসায় হুমকি দেওয়া হয়েছে; একটি বাক্সে করে শূকরের মাথা পাঠানো হয়েছে, যার কপাল বুলেটবিদ্ধ। চিরকুটও দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, আমি যদি (রোজারিও) সেন্ট্রালে ফিরি, তাহলে পরবর্তী মাথাটি হবে আমার (ছোট) মেয়ে পিয়ার।
দি মারিয়া এরপর বলেন, আমি এভাবে রোজারিওতে ফিরব না। ওরা আমার পরিবারের প্রতি হাত বাড়িয়েছে, আমি কোনোভাবেই সেটা হতে দেব না। পরিবারের ‘শান্তি ও সুখ’ রক্ষা করার কথাও বলেছেন দি মারিয়া।
রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি, জুভেন্টাস ও বেনফিকার মতো ক্লাবে খেলা দি মারিয়া এর আগেও হুমকি পেয়েছেন। তাঁর পরিবার যেখানে বাস করে, সেখানে গত মার্চে একটি চিরকুট পাঠানো হয়। সেই চিঠিতেও রোজারিওর কোনো ক্লাবে যোগ দিলে দি মারিয়া এবং তাঁর পরিবারের জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। আর্জেন্টিনার কর্তৃপক্ষ তখন বলেছিল, নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে হুমকিটি দিয়েছে অপরাধী চক্র।
রোজারিও আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের শহর। সান্তা ফের গভর্নর মাক্সিমিলিয়ানো পুয়ারো এ মাসেই বলেছেন, বিখ্যাত ও বহুপরিচিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দি মারিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাসের অপেক্ষায় লোকে দাঁড়াতে পারছে না, একটি ব্যাকপ্যাকের জন্য খুন হচ্ছে কিংবা চুরি–ডাকাতির শিকার হচ্ছে। রোজারিওর লোকজন কাজের জন্য বাইরেও যেতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে আমার নিরাপত্তা নিয়ে কথাটা অসম্মানজনক।
দক্ষিণ আমেরিকার হাইপ্রোফাইল কিছু ফুটবলার অপরাধীদের হুমকি থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেরও শিকার হয়েছেন। ব্ল্যাকমেল থেকে অপহরণের ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। গত বছর রোজারিওতে লিওনেল মেসির স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর পারিবারিক দোকানে গুলি চালিয়েছিল বন্দুকধারীরা। শক্তি প্রদর্শনের জন্য হুমকি দিয়ে একটি চিরকুটও রেখে গিয়েছিল তারা।
এ ছাড়া কলম্বিয়ার গেরিলা যোদ্ধারা গত অক্টোবরে লিভারপুলের ফুটবলার লুইজ দিয়াজের বাবাকে অপহরণ করেছিল। ১২ দিন আটক রাখার পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।