Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের নীতি সুদহার বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৩৮:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৯৯ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলো যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে সুদ হারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। রেপো রেট বৃদ্ধি করায় ব্যাংকগুলোর অর্থ নেওয়ার খরচ বাড়বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করে, তার সুদহার বাড়বে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে রাখা আমানত ও ব্যাংকঋণের সুদহারও বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নীতি সুদহার বা রেপো রেট দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করবে, তার সুদহার বাড়বে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহের পথে হাঁটছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নীতি সুদহার করিডোরের উর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) সুদহার ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) সুদহার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮ বেসিস পয়েন্ট করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, নীতি সুদহার বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে মনিটারি পলিসি কমিটির পঞ্চম সভায় নীতি সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুসৃত সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ওভারনাইট রেপো নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা নয় শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে পুনর্র্নিধারণ করা হলো।

এর আগে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে নীতি সুদহার বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

গভর্নর দায়িত্বে আসার পর দ্বিতীয়বারে মতো নীতি সুদহার বাড়ানো হলো। এর আগে সাড়ে ৮ থেকে বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, নীতি সুদহার চলতি সপ্তাহে বাড়ানো হবে। এরপর আগামী মাসে আরও কিছুটা বৃদ্ধি করা হবে। এখন নীতি সুদহার ৯ শতাংশে রয়েছে। গত বছরের মার্চ থেকে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে মিল রেখে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়।

নতুন নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুসৃত সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ওভারনাইট রেপাে নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৯ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে পুনর্র্নিধারণ করা হলো।

এছাড়া, ব্যাংকসমূহের তারল্য ব্যবস্থাপনা অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার লক্ষ্যে নীতি সুদহার করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুদহার শতকরা ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ১১ শতাংশ করা হয়েছে। আর নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপােজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) শতকরা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৮ শতাংশে পুনর্র্নিধারণ করা হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্ত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।

বিবিএস’র তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে দাঁড়ানোর পর চলতি বছরের জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়। এটি ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ।

বিগত সরকার গত অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। যদিও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যস্ফীতি ছিল দেশে।

অন্যদিকে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের মে থেকে বেশ কয়েকবার সংকোচনমূলক নীতি অনুসরণ করছে। বাড়ানো হচ্ছে পলিসি রেট। নীতি সুদহার বাড়ানোর ফলে ব্যাংক ঋণের সুদ বেড়েছে। এতে ঋণ নেওয়া আগের চেয়ে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফের নীতি সুদহার বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৮:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলো যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে সুদ হারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। রেপো রেট বৃদ্ধি করায় ব্যাংকগুলোর অর্থ নেওয়ার খরচ বাড়বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করে, তার সুদহার বাড়বে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে রাখা আমানত ও ব্যাংকঋণের সুদহারও বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নীতি সুদহার বা রেপো রেট দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করবে, তার সুদহার বাড়বে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহের পথে হাঁটছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নীতি সুদহার করিডোরের উর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) সুদহার ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) সুদহার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮ বেসিস পয়েন্ট করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, নীতি সুদহার বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে মনিটারি পলিসি কমিটির পঞ্চম সভায় নীতি সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুসৃত সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ওভারনাইট রেপো নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা নয় শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে পুনর্র্নিধারণ করা হলো।

এর আগে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে নীতি সুদহার বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

গভর্নর দায়িত্বে আসার পর দ্বিতীয়বারে মতো নীতি সুদহার বাড়ানো হলো। এর আগে সাড়ে ৮ থেকে বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, নীতি সুদহার চলতি সপ্তাহে বাড়ানো হবে। এরপর আগামী মাসে আরও কিছুটা বৃদ্ধি করা হবে। এখন নীতি সুদহার ৯ শতাংশে রয়েছে। গত বছরের মার্চ থেকে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে মিল রেখে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়।

নতুন নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুসৃত সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ওভারনাইট রেপাে নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৯ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে পুনর্র্নিধারণ করা হলো।

এছাড়া, ব্যাংকসমূহের তারল্য ব্যবস্থাপনা অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার লক্ষ্যে নীতি সুদহার করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুদহার শতকরা ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ১১ শতাংশ করা হয়েছে। আর নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপােজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) শতকরা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৮ শতাংশে পুনর্র্নিধারণ করা হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্ত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।

বিবিএস’র তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে দাঁড়ানোর পর চলতি বছরের জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়। এটি ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ।

বিগত সরকার গত অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। যদিও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যস্ফীতি ছিল দেশে।

অন্যদিকে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের মে থেকে বেশ কয়েকবার সংকোচনমূলক নীতি অনুসরণ করছে। বাড়ানো হচ্ছে পলিসি রেট। নীতি সুদহার বাড়ানোর ফলে ব্যাংক ঋণের সুদ বেড়েছে। এতে ঋণ নেওয়া আগের চেয়ে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে।