নিজস্ব প্রতিবেদক :
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ফখরুল মিথ্যা কথা বলতে বলতে কোন পর্যায়ের মিথ্যা বলেন, নিজেও ভুলে গেছেন।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে সন্ত্রাস-মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের অভয়াশ্রম বিএনপি- জামায়াতের নির্দেশে ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা দিবসে শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি মূর্খের মতো একজন মিথ্যুক। একজন মিথ্যুক যদি সত্যকে মিথ্যা বানাতে চান, তাকে কষ্ট করতে হয়। একজন বুদ্ধিমান মিথ্যুক হলে, ধরতে দেরি লাগে। আর আহাম্মকের মতো যদি মিথ্যা কথা বলেন, সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়ে যান। তিনি হচ্ছেন সেই আহাম্মকের এর মতো মিথ্যুক। কারণ হলো তিনি তথ্য না জেনেই কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকে যে লোকের কথা বলা হচ্ছে, তিনি একটা মিথ্যা কথা বলেছেন। জোর করে একজন আসামির জবানবন্দি নিয়ে এ মামলায় তারেক রহমানকে জড়িত করা হয়েছে। এখন নাম বলতে হয়, মির্জা ফখরুল ইসলাম। তার অভ্যাস বিএনপির সবার মতো মিথ্যা কথা বলা।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বিএনপির সরাসরি নির্দেশনা ছিল বলে দাবি করে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের অপরিপূর্ণ ষড়যন্ত্র পরিপূর্ণ করতেই বিএনপি ২১ আগস্ট বোমা হামলা চালায়। এই ঘটনার তারা কোনো সুষ্ঠু তদন্ত করেনি। তদন্ত করলে দেখা যাবে, তারেক রহমান ঘটনায় জড়িয়ে যাবে, খালেদা জিয়া ঘটনায় জড়িয়ে যাবে, এই জন্য তারা সুষ্ঠু তদন্ত আমরা দেখিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, যারা পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর দালাল ছিল, যারা এখন মুসলিম লীগের শেরওয়ানি ছেড়ে দিয়ে বিএনপির কাপড় পরা শুরু করছে, তারাই তখন বঙ্গবন্ধুর শত্রু এবং এখনো আছে। তারা কিছু মীর জাফর, কিছু কুলাঙ্গারের সাথে ষড়যন্ত্র করে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাসহ তার পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করে। এই হত্যার কারণ ছিল বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ যে অবিচ্ছেদ্য তার মাঝে বিচ্ছেদ তৈরি করা। তারা ভেবেছিল তাকে হত্যা করা হলে বাংলাদেশকে হত্যা করা হবে। তাঁরা জানতো যে যদি বঙ্গবন্ধু পরিবারের একজনকেও যদি বাঁচিয়ে রাখা হয় তাহলে আমাদের যে ষড়যন্ত্র তা কখনোই সফল হবে না। অতঃপর জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে বাংলার মানুষের মুক্তির কথা বলেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার এবং বাংলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেন। ঠিক সেই সময়টুকুতেই কিন্তু তারা ১৯৭৫ সালের অপরিপূর্ণ ষড়যন্ত্র পরিপূর্ণ করতেই বিএনপি ২১ আগস্ট বোমা হামলা চালায়।
আনিসুল হক বলেন, ওই বোমা হামলায় ২২ জনকে হত্যা করা হলো। তাৎক্ষণিক এর দুটি তদন্ত হয়। একটা মামলা হয়। তারা একজন বিচারপতিকে দায়িত্ব দিলেন। তারা বললেন, এখানে ভারতের হাত আছে। মামলার তদন্তও তারা কিন্তু সুষ্ঠুভাবে করেননি। কারণ তদন্ত করা হলে দেখা যাবে তারেক রহমান ঘটনায় জড়িয়ে যাবে। খালেদা জিয়া জড়িয়ে যাবে। তারা বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নাকি বোমা ভ্যানেটি ব্যাগে করে নিয়ে এসেছেন। আহাম্মকও হাসবে এমন কথা শুনলে।
বিএনপির মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম ভুলে গেছেন। মুফতি হান্নানকে অন্য কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তখন সেসব মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তখন এক পর্যায়ে মুফতি হান্নান বললেন, দেখুন, আমাকে তো ফাঁসিই দিয়ে দেবেন, আমি কিছু সত্য কথা বলতে চাই। কী সে সত্য কথা? পুলিশের কাছে বলব না, আমি বলব ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। তখন তাকে বলা হলো, ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বললে তো ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি হিসেবে নিতে হবে। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বলে গেছেন। তিনি জবানবন্দিতে তারেক রহমানের সেই হাওয়া ভবনে কথার এবং এই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং হত্যা ষড়যন্ত্র কোথায় হয়েছে এবং সেটার আসল নায়ক কে, এসব বলে গেছেন। মির্জা ফখরুলকে বলব আপনি তথ্য জেনে নিয়ে কথা বলুন, তাহলে আপনাকে এতো মিথ্যাবাদী কেউ বলবে না।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।