নিজস্ব প্রতিবেদক :
গত বছরের ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ চলাকালে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে রমনা থানার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদেরের আদালত এ শুনানি এ আদেশ দেন।
এদিন আসামিপক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ আইনজীবী জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জামিনের বিরোধিতা করেন।
শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এ মামলায় জামিন পাওয়ায় তাদের মুক্তিতে আর কোনো বাধা রইল না বলে জানান তাদের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে থাকা ১০টি মামলার সবকটিতে জামিন পাওয়ায় তাদের মুক্তিতে আর কোনো বাধা রইল না।
এর আগে এ মামলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের জামিন নাকচ করে। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি জামিনের আবেদন করেন তাদের আইনজীবী। আদালত শুনানির জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিকাল তিনটার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এ সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। আহত হন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। এ ছাড়া কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক আহত হন।
এ ঘটনার পর গত ২৮ অক্টোবর মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আদালতে হাজির করা হলে আদালত তার জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে গত ২ নভেম্বর দিনগত রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালীন সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলায় তাকে ৬ দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারের পর মির্জা ফখরুল বিরুদ্ধে ১১ মামলা ও আমির খসরুর বিরুদ্ধে ১০ মামলা করা হয়। প্রধান বিচারকের বাড়িতে হামলা মামলা ছাড়া অন্য মামলাগুলোতে তারা জামিন পান। আজ এই মামলায় জামিন পাওয়ায় তাদের মুক্তিতে বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।