Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রিয় এফডিসি থেকে চিরবিদায় নিলেন মিয়া ভাই

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:১১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩
  • ১৮৬ জন দেখেছেন

বিনোদন ডেস্ক : 

এফডিসির কারণে তিনি আজ হয়ে উঠেছেন বাংলার ‘মিয়া ভাই’। এফডিসির প্রতিটি ইট-বলির সঙ্গে যেন পড়তে পড়তে জরিয়ে আছেন এই নায়কের নাম। এই প্রতিষ্ঠানটি ছিলো তার প্রিয় কর্মস্থল- একথা অনেকবার বলেছেন বাংলা সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। সেই এফডিসি থেকে শেষ বিদায় নিলেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুর ১ টায় ফারুকের মরদেহ এফডিসিতে নেওয়ার পর প্রিয় সহকর্মীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান নবীন-প্রবীণ সহকর্মীরা। মিয়াভাইকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন আলমগীর, সুজাতা, উজ্জল, রোজিনা, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, কাজী হায়ত, ওমর সানী, বাপ্পী চৌধুরীসহ অনেকেই। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াত, পরিচালিক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার তাকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। সবার শ্রদ্ধা জানানোর শেষে তার জানাজা শুরু হয় দুপুর ১টা ৫৩ মিনিটের দিকে। জানাজায় তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা ছাড়াও অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীরা অংশ নেন।

শ্রদ্ধা জানাতে এসে নায়ক ফারুককে নিয়ে অভিনেত্রী সুজাতা বলেছেন, এফডিসিতে কিংবা অন্য কোথাও যতবার দেখা হয়েছে; সে একটু (ডেয়ারিং) সাহসী প্রকৃতির মানুষ ছিল। ডেয়ারিং বলতে ভালো, সত্যকে কখনও অস্বীকার করেনি। যতই তিক্ত হোক, সে সত্যটা তুলে ধরেছে সবসময়। ফারুকের এই দিকটাই আমার বেশি ভালো লাগতো। ফারুক আমাদের হৃদয়ের মাঝে বেঁচে থাকবে।

এর আগে সকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছিল ফারুকের মরদেহ। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সর্বস্তুরের মানুষ।

এফডিসিতে শ্রদ্ধা ও জানাজা শেষে ফারুকের মরদেহ নেওয়া চ্যানেল এই প্রাঙ্গণে। সেখানে শ্রদ্ধা-জানাজা শেষে নেওয়া হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে। অভিনেতার নির্বাচনী এই এলাকায় বাদ আসর আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষ সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া দক্ষিণ সোম গ্রামের বাড়িতে চতুর্থ জানাজা সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আজগর হোসেন পাঠানের পাশে শায়িত হবেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা।

ছাত্রজীবনে যুক্ত হন রাজনীতিতে। ভবিষ্যৎ ভাবনাও ছিল রাজনীতি ঘিরে। ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। এর ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই তার নামে ৩৬টি হয়রানিমূলক মামলা দায়ের হয়। মূলত এসব মামলা, আইনি জটিলতা থেকে রেহাই পেতেই সিনেমায় নাম লেখান চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।

১৯৬৮ সালে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। সিনেমার নাম ‘জলছবি’। সেই সুবাদে প্রথমবার এফডিসিতে আসা। এরপর আর দ্বিতীয় কোনও পেশা খুঁজতে হয়নি। মৃত্যুর আগ অব্দি সিনেমার সঙ্গেই জুড়ে ছিলেন। মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে সেই প্রাণের আঙিনা, এফডিসি থেকে চিরবিদায় নিলেন ফারুক।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মার্চ থেকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফারুক। সোমবার (১৫ মে) সকাল ১০টায় মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

প্রিয় এফডিসি থেকে চিরবিদায় নিলেন মিয়া ভাই

প্রকাশের সময় : ০৪:১১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩

বিনোদন ডেস্ক : 

এফডিসির কারণে তিনি আজ হয়ে উঠেছেন বাংলার ‘মিয়া ভাই’। এফডিসির প্রতিটি ইট-বলির সঙ্গে যেন পড়তে পড়তে জরিয়ে আছেন এই নায়কের নাম। এই প্রতিষ্ঠানটি ছিলো তার প্রিয় কর্মস্থল- একথা অনেকবার বলেছেন বাংলা সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। সেই এফডিসি থেকে শেষ বিদায় নিলেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুর ১ টায় ফারুকের মরদেহ এফডিসিতে নেওয়ার পর প্রিয় সহকর্মীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান নবীন-প্রবীণ সহকর্মীরা। মিয়াভাইকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন আলমগীর, সুজাতা, উজ্জল, রোজিনা, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, কাজী হায়ত, ওমর সানী, বাপ্পী চৌধুরীসহ অনেকেই। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াত, পরিচালিক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার তাকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। সবার শ্রদ্ধা জানানোর শেষে তার জানাজা শুরু হয় দুপুর ১টা ৫৩ মিনিটের দিকে। জানাজায় তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা ছাড়াও অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীরা অংশ নেন।

শ্রদ্ধা জানাতে এসে নায়ক ফারুককে নিয়ে অভিনেত্রী সুজাতা বলেছেন, এফডিসিতে কিংবা অন্য কোথাও যতবার দেখা হয়েছে; সে একটু (ডেয়ারিং) সাহসী প্রকৃতির মানুষ ছিল। ডেয়ারিং বলতে ভালো, সত্যকে কখনও অস্বীকার করেনি। যতই তিক্ত হোক, সে সত্যটা তুলে ধরেছে সবসময়। ফারুকের এই দিকটাই আমার বেশি ভালো লাগতো। ফারুক আমাদের হৃদয়ের মাঝে বেঁচে থাকবে।

এর আগে সকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছিল ফারুকের মরদেহ। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সর্বস্তুরের মানুষ।

এফডিসিতে শ্রদ্ধা ও জানাজা শেষে ফারুকের মরদেহ নেওয়া চ্যানেল এই প্রাঙ্গণে। সেখানে শ্রদ্ধা-জানাজা শেষে নেওয়া হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে। অভিনেতার নির্বাচনী এই এলাকায় বাদ আসর আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষ সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া দক্ষিণ সোম গ্রামের বাড়িতে চতুর্থ জানাজা সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আজগর হোসেন পাঠানের পাশে শায়িত হবেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা।

ছাত্রজীবনে যুক্ত হন রাজনীতিতে। ভবিষ্যৎ ভাবনাও ছিল রাজনীতি ঘিরে। ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। এর ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই তার নামে ৩৬টি হয়রানিমূলক মামলা দায়ের হয়। মূলত এসব মামলা, আইনি জটিলতা থেকে রেহাই পেতেই সিনেমায় নাম লেখান চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।

১৯৬৮ সালে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। সিনেমার নাম ‘জলছবি’। সেই সুবাদে প্রথমবার এফডিসিতে আসা। এরপর আর দ্বিতীয় কোনও পেশা খুঁজতে হয়নি। মৃত্যুর আগ অব্দি সিনেমার সঙ্গেই জুড়ে ছিলেন। মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে সেই প্রাণের আঙিনা, এফডিসি থেকে চিরবিদায় নিলেন ফারুক।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মার্চ থেকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফারুক। সোমবার (১৫ মে) সকাল ১০টায় মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।