Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুই বিষয়ে রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে মূলত দুটি বিষয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছেন তারা।

শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ৯টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি দুইটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। একটা বলেছি, নির্বাচনটা কখন হবে? আপনি যে সময়সীমা দিয়েছেন, এর ভিতরেই জনগণের কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচনটা হওয়া দরকার। দুই নম্বর আমরা বলেছি, এই নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার এবং বিচারের কিছু দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে।

জামায়াত আমির বলেন, সংস্কার শেষ না করে যদি কোনো নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এখন করা সম্ভবও না। মাত্র ৫টা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তারা হাত দিয়েছেন। এতটুকু নিষ্পত্তি করা দরকার সন্তোষজনকভাবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার-নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হলে সংশয় কেটে যাবে। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে কিছুটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। তার ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের একটা বৈঠক হয়। সেই বৈঠক থেকে প্রধান উপদেষ্টা একটি মেসেজ জাতিকে দিতে চেয়েছিলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, তিনি (প্রদান উপদেষ্টা) সেটা দেননি। কিন্তু এটা খুব দ্রুত সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে এক ধরনের আশঙ্কা বিরাজ করে। আমরা সেটাকে আমলে নিয়েছি। একই সময়ে একজন রাজনৈতিক নেতা তার জনপ্রতিনিধিদের দাবি নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। আরেক জায়গায় অন্যরা গুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। সব মিলিয়ে বিষয়টা কিছুটা কষ্টের ও বিরক্তির। যে কারণে তিনি তার দায়িত্বের ব্যাপারে বিবেচনা করবেন এমনটি প্রকাশ করেছিলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশ ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকবো। দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এই পরিবর্তনে এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে সরকারের তাদের পরিচয় হলো তারা কোনো দলকে ধারণ করবে না। এটাই হওয়া উচিত নয়। আমাদের সবার দাবি ছিল অর্থবহ একটি সংস্কার হবে। এই সংস্কার ও বিচারের মধ্য দিয়েই একটা অর্থবহ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনের সুস্থ মাঠ থাকবে, যারা অংশগ্রহণ করবে তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হবে না, পেশী শক্তির প্রবণতা থাকবে না। সাড়ে ১৫ বছর জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এবার তারা ভোট দিতে পারবে সেটা নিশ্চিত হবে এটাই ছিল আমাদের দাবি।

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে কয়েকবার বলেছেন, নির্বাচন তিনি দিতে চান এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ দেননি। দিন মাস ঘোষণা করেননি এটাকে কেন্দ্র করে। আমরা বলেছি, দুটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার- গ্রহণযোগ্য সংস্কার হতে হবে, এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। আমরা মনে করি, সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপের ঘোষণা হলে অনেকটাই সংশয় কেটে যাবে।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই বিপ্লবে দেশে পরিবর্তন এসেছে কিন্তু এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের পরিচয় হলো তারা কোনো পার্টির রাজনীতি করবেন না। এটা হওয়া উচিত কিন্তু এখানেও কিছু ব্যাতিক্রম ঘটেছে। এটিও মাঝেমধ্যে সমাজকে উদ্বিগ্ন করেছে। এই বিপ্লবের অবশ্যম্ভাবী দাবি ছিল কিছু সংস্কার করা লাগবে এবং অপরাধীদের বিচার হতে হবে। এর মধ্য দিয়ে একটি অর্থবহ নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তাদের কোনো ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হতে হবে না। এখানে পেশিশক্তি এবং কালো টাকার প্রভাব থাকবে না এবং মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিতভাবে পাবে।

এর আগে রাত সাড়ে ৮টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’য় এ বৈঠক শুরু হয়। রাত ৮টার কিছু পরে প্রতিনিধি দলটি যমুনায় প্রবেশ করে।

জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুই বিষয়ে রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত

প্রকাশের সময় : ১১:১২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে মূলত দুটি বিষয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছেন তারা।

শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ৯টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি দুইটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। একটা বলেছি, নির্বাচনটা কখন হবে? আপনি যে সময়সীমা দিয়েছেন, এর ভিতরেই জনগণের কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচনটা হওয়া দরকার। দুই নম্বর আমরা বলেছি, এই নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার এবং বিচারের কিছু দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনগণের সামনে আসতে হবে।

জামায়াত আমির বলেন, সংস্কার শেষ না করে যদি কোনো নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এখন করা সম্ভবও না। মাত্র ৫টা সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তারা হাত দিয়েছেন। এতটুকু নিষ্পত্তি করা দরকার সন্তোষজনকভাবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার-নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হলে সংশয় কেটে যাবে। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে কিছুটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। তার ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের একটা বৈঠক হয়। সেই বৈঠক থেকে প্রধান উপদেষ্টা একটি মেসেজ জাতিকে দিতে চেয়েছিলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, তিনি (প্রদান উপদেষ্টা) সেটা দেননি। কিন্তু এটা খুব দ্রুত সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে এক ধরনের আশঙ্কা বিরাজ করে। আমরা সেটাকে আমলে নিয়েছি। একই সময়ে একজন রাজনৈতিক নেতা তার জনপ্রতিনিধিদের দাবি নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। আরেক জায়গায় অন্যরা গুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। সব মিলিয়ে বিষয়টা কিছুটা কষ্টের ও বিরক্তির। যে কারণে তিনি তার দায়িত্বের ব্যাপারে বিবেচনা করবেন এমনটি প্রকাশ করেছিলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশ ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকবো। দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এই পরিবর্তনে এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে সরকারের তাদের পরিচয় হলো তারা কোনো দলকে ধারণ করবে না। এটাই হওয়া উচিত নয়। আমাদের সবার দাবি ছিল অর্থবহ একটি সংস্কার হবে। এই সংস্কার ও বিচারের মধ্য দিয়েই একটা অর্থবহ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনের সুস্থ মাঠ থাকবে, যারা অংশগ্রহণ করবে তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হবে না, পেশী শক্তির প্রবণতা থাকবে না। সাড়ে ১৫ বছর জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এবার তারা ভোট দিতে পারবে সেটা নিশ্চিত হবে এটাই ছিল আমাদের দাবি।

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে কয়েকবার বলেছেন, নির্বাচন তিনি দিতে চান এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ দেননি। দিন মাস ঘোষণা করেননি এটাকে কেন্দ্র করে। আমরা বলেছি, দুটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার- গ্রহণযোগ্য সংস্কার হতে হবে, এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। আমরা মনে করি, সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপের ঘোষণা হলে অনেকটাই সংশয় কেটে যাবে।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই বিপ্লবে দেশে পরিবর্তন এসেছে কিন্তু এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের পরিচয় হলো তারা কোনো পার্টির রাজনীতি করবেন না। এটা হওয়া উচিত কিন্তু এখানেও কিছু ব্যাতিক্রম ঘটেছে। এটিও মাঝেমধ্যে সমাজকে উদ্বিগ্ন করেছে। এই বিপ্লবের অবশ্যম্ভাবী দাবি ছিল কিছু সংস্কার করা লাগবে এবং অপরাধীদের বিচার হতে হবে। এর মধ্য দিয়ে একটি অর্থবহ নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তাদের কোনো ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হতে হবে না। এখানে পেশিশক্তি এবং কালো টাকার প্রভাব থাকবে না এবং মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিতভাবে পাবে।

এর আগে রাত সাড়ে ৮টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’য় এ বৈঠক শুরু হয়। রাত ৮টার কিছু পরে প্রতিনিধি দলটি যমুনায় প্রবেশ করে।

জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।