পারিবারিক দুর্ব্যবহারের প্রতিশোধ নিতে চাচাতো বোন তানিশা ইসলাম তানিশাকে (১১) খুন করে চাচাতো ভাই। আদালতে কিশোর আসামি (১৫) এমন জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
শুক্রবার রাতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমদ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় ওই কিশোর। জবানবন্দিতে সে বলে, ছোটবেলায় মারা যায় তারা বাবা। চাচা আর ফুফুসহ আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় চলছিল তার সংসার। প্রতিনিয়ত তাদের প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ব্যবহার থেকে ক্ষোভ জন্মাতে থাকে তার মধ্যে। এর শোধ নিতেই চাচাতো বোন তানিশাকে খুন করে সে।
জেলা পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, খুব অল্পসময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট দেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক দুর্ব্যবহারের কারণে দীর্ঘদিন থেকে কিশোরের মনে ক্ষোভ জমেছিল। তানিশার ভাই মসজিদে ‘ইতিকাফে’ থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে মসজিদে ভাত পৌঁছে দিতে বলে। সে ভাত নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে পথে অন্য একজনকে ওই ভাত পৌঁছে দিতে বলে-আবার বাড়ি ফিরে যায়। তখন ঘরে ছিল তানিশা ও তার দাদি।
এ সুযোগে তাদের ঘরে ঢুকে তানিশার হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে আসামি। টানাহেঁচড়া করে তাকে ছাদের সিঁড়ি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে একপর্যায়ে তানিশার হাত খুলে যায়। আবার হাত-মুখ বেঁধে তাদের রান্না ঘর থেকে ছোরা নিয়ে গলায় কোপানো হয়। পরে ছাদের এক পাশে একটি গাছ বেয়ে নিচে নেমে নিজের ঘরে চলে যায় অভিযুক্ত কিশোর। কিন্তু সিঁড়িতে তার স্যান্ডেল ফেলে যাওয়ার কথা তখন ভুলে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ইমরান হোসেন জানান, নিহতের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও রশি প্যাঁচানো ছিল। ছাদে মৃতদেহের পাশেই পড়ে ছিল আসামির জুতা। বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত ছোরাও উদ্ধার করা হয়। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালতের আদেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে নিহত তানিশা ইসলামের ভাই আশরাফুল ইসলাম ফেনী থানায় ওই কিশোরসহ (১৫) অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করেন।