বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি নিয়ে সরকার কাজ করছে বলে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি নিয়ে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। তবে দীর্ঘ ২৭ বছরের এ সমস্যার সমাধান এখনও কিছুটা সময়সাপেক্ষ।
রোববার (২০ জুলাই) সকালে বান্দরবান জেলা পরিষদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ফলদ-বনজ চারা, গবাদিপশু, সেলাই মেশিন এবং প্রসূতি নারী ও নবজাতক শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আর্থিক অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যেকোনও জায়গায় বা দেশ উন্নয়নের জন্য সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতিগত ও প্রকৃতিগতভাবে আমাদের এই পার্বত্য অঞ্চল বৈচিত্র্যময়। এই বৈচিত্র্যকে যাতে শক্তিতে রূপান্তর করা যায় সেজন্যও আমরা যথেষ্ট আন্তরিক।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সময় লাগে। এটি হঠাৎ করে সম্ভব নয় — আমরা যেমন তা স্বীকার করি, তেমনি আপনারাও নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন। তবে সরকার পূর্ণাঙ্গ শান্তি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছে। চুক্তিটি ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হলেও এখনো অনেক দিক বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।
মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের সম্পদ কম। আমাদের সম্পদ মানুষ। এক্ষেত্রে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। গত ১৯ বছরে শিক্ষার প্রবল অবনতি হয়েছে। জিপিএ ৫ এর পেছনে দৌড়াতে-দৌড়াতে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ১২টা বেজে গেছে। তবে এর পরিবর্তন শুরু হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি থাকলে যে কোনো দেশ, যে কোনো সমাজ এগিয়ে যেতে পারে। বৈচিত্র্যময়তা আমাদের বেশি। কিন্তু সেই বৈচিত্র্যতাকে আমরা শক্তিতে রূপান্তর করতে পারি যদি সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি। সে চেষ্টা বহাল আছে। যেখান শান্তি থাকবে সেখানে কেউ তার টাকা ঢালতে যাবে না। শান্তি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন। এখানে বিপুল সম্ভাবনা আছে।
তিনি বলেন, এই সরকার চাই পার্বত্য তিন জেলায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক। যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়, এখানে বিপুল সম্ভাবনা আছে। তবে স্বল্প সময়ে আমরা সব কিছু করতে পারব না। তবে শুরু করে দিতে চাই। আগামী কিছুদিনের মধ্যে যেন শান্তিভাব ফিরে আসে। একটা সহাবস্থান নিশ্চিত হয়। এটি করতে পারলে আমরা অনেক এগিয়ে যাব।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আগে কনস্ট্রাকশন বরাদ্দ দেওয়া হত সব থেকে বেশি। যার কারণে জেলার সামগ্রিক উন্নয়ন ১৫ শতাংশে নেমেছে। এর থেকে উত্তরণে বর্তমান সময়ে কনস্ট্রাকশন খাতে শুধুমাত্র ২০ শতাংশ বরাদ্দ রেখে ৬০ শতাংশ বরাদ্দ জেলার শিক্ষা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে দেওয়া হবে। অপর ২০ শতাংশ স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতে ব্যয় করা হবে।
এসময় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাইয়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, জেলা পুলিশ সুপার মো.শহীদুল্লাহ কাওসার প্রমুখ।