Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচলকারী ডেমু ট্রেনের চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দিনাজপুরের রেলওয়ে জংশন পার্বতীপুর থেকে বিভাগীয় শহর রংপুরের মধ্যে রেলরুটে চলাচলকারী ডেমু ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণ দেখিয়ে রোববার (৯ এপ্রিল) থেকে ট্রেনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ে থাকা ডেমু ট্রেন দেশীয় প্রযুক্তিতে সচল করা হয়। সচল হওয়া ডেমু ট্রেন ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর রোববার থেকে পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচল শুরু করে।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ সেট ডেমু ট্রেন আমদানি করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল ওই ট্রেনের মাধ্যমে কাছাকাছি দূরত্বে ব্যাপক যাত্রী পরিবহন করা। চীনের তানসন ইন্টারন্যাশনাল ও ডানিয়াল টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ওই ডেমু ট্রেনের নির্মাতা। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ওই ট্রেনগুলো এক ধরনের বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত যা প্রযুক্তি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে হস্তান্তর করেনি। এর মডিউল বিকল হলে নতুন মডিউলের সঙ্গে সফটওয়্যার সেটআপ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এর জন্য ধরনা দিতে হয় চীনা প্রকৌশলীদের কাছে যা ছিল অনেক ব্যয়বহুল। একটি ডেমুতে ৪০টি মডিউল রয়েছে। যার একটির দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা। চীনা প্রকৌশলীরা প্রযুক্তি হস্তান্তর না করায় একটার পর একটা ট্রেন বিকল হতে থাকে।

পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনে কত্যর্বরত স্টেশন মাষ্টার মোঃ রেজাউল করিম জানান, পার্বতীপুর-রংপুর রুটে একটি ডেমু ট্রেন চলাচল করতো। সময়সূচি অনুযায়ী, প্রতিদিন বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে যাতো এবং সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে রংপুরে পৌঁছাতো। আবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে রংপুর থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পার্বতীপুরে এসে পৌঁছাতো। কিন্তু গত ৯ এপ্রিল থেকে ট্রেনটির চলাচল অনিদিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রয়েছে।

পার্বতীপুর রেলওয়ে লোকোসেডের এসএসএই/ ইনচার্জ মোঃ কাফিউল ইসলাম বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটির চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ত্রুটি মুক্ত হলে আবারও ট্রেনটি চলাচল করবে। তবে নাগাদ ট্রেনটি চলাচল করবে তা তিনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী ও আনবিক শক্তি কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান ডেমু ট্রেন নিয়ে দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় তিনি উদ্ভাবন করেন বাস-ট্রাকের মতোই ডেমু চালানোর প্রযুক্তি। ব্যয়বহুল মডিউল সরিয়ে দেন তিনি। সেক্ষেত্রে বসানো হয় মাত্র দুটি কন্ট্রোলার। এতে চালু হয়ে যায় অচল এক সেট ডেমু ট্রেন। চালু ট্রেনটি পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচল শুরু করে। কিন্তু আবারও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার(জিএম) অসিত কুমার তালুকদার বলেন, পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচলকারী ডেমু ট্রেনটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচলকারী ডেমু ট্রেনের চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

প্রকাশের সময় : ০৩:২৫:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দিনাজপুরের রেলওয়ে জংশন পার্বতীপুর থেকে বিভাগীয় শহর রংপুরের মধ্যে রেলরুটে চলাচলকারী ডেমু ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণ দেখিয়ে রোববার (৯ এপ্রিল) থেকে ট্রেনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ে থাকা ডেমু ট্রেন দেশীয় প্রযুক্তিতে সচল করা হয়। সচল হওয়া ডেমু ট্রেন ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর রোববার থেকে পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচল শুরু করে।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ সেট ডেমু ট্রেন আমদানি করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল ওই ট্রেনের মাধ্যমে কাছাকাছি দূরত্বে ব্যাপক যাত্রী পরিবহন করা। চীনের তানসন ইন্টারন্যাশনাল ও ডানিয়াল টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ওই ডেমু ট্রেনের নির্মাতা। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ওই ট্রেনগুলো এক ধরনের বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত যা প্রযুক্তি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে হস্তান্তর করেনি। এর মডিউল বিকল হলে নতুন মডিউলের সঙ্গে সফটওয়্যার সেটআপ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এর জন্য ধরনা দিতে হয় চীনা প্রকৌশলীদের কাছে যা ছিল অনেক ব্যয়বহুল। একটি ডেমুতে ৪০টি মডিউল রয়েছে। যার একটির দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা। চীনা প্রকৌশলীরা প্রযুক্তি হস্তান্তর না করায় একটার পর একটা ট্রেন বিকল হতে থাকে।

পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনে কত্যর্বরত স্টেশন মাষ্টার মোঃ রেজাউল করিম জানান, পার্বতীপুর-রংপুর রুটে একটি ডেমু ট্রেন চলাচল করতো। সময়সূচি অনুযায়ী, প্রতিদিন বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে যাতো এবং সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে রংপুরে পৌঁছাতো। আবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে রংপুর থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পার্বতীপুরে এসে পৌঁছাতো। কিন্তু গত ৯ এপ্রিল থেকে ট্রেনটির চলাচল অনিদিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রয়েছে।

পার্বতীপুর রেলওয়ে লোকোসেডের এসএসএই/ ইনচার্জ মোঃ কাফিউল ইসলাম বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটির চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ত্রুটি মুক্ত হলে আবারও ট্রেনটি চলাচল করবে। তবে নাগাদ ট্রেনটি চলাচল করবে তা তিনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী ও আনবিক শক্তি কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান ডেমু ট্রেন নিয়ে দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় তিনি উদ্ভাবন করেন বাস-ট্রাকের মতোই ডেমু চালানোর প্রযুক্তি। ব্যয়বহুল মডিউল সরিয়ে দেন তিনি। সেক্ষেত্রে বসানো হয় মাত্র দুটি কন্ট্রোলার। এতে চালু হয়ে যায় অচল এক সেট ডেমু ট্রেন। চালু ট্রেনটি পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচল শুরু করে। কিন্তু আবারও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার(জিএম) অসিত কুমার তালুকদার বলেন, পার্বতীপুর-রংপুর রেলরুটে চলাচলকারী ডেমু ট্রেনটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।