Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পানিবন্দি মানুষকে পানিমুক্ত করা সওয়াবের কাজ : শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একে এম শামীম ওসমান বলেন, পানিবন্দি মানুষকে পানিমুক্ত করা সওয়াবের কাজ। মানুষের বসতবাড়ি, মসজিদের পানি প্রবেশ করেছে। এটা যা হয়েছে এটা জলাবদ্ধতা নয়, ময়লাবদ্ধতা।

বুধবার (২৯ মে) বিকেলে ফতুল্লা চৌধুরী বাড়ী পারিবারিক মিলনায়তনে জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের সাথে মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শামীম ওসমান বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলতেছে, পানি টানতে সময় লাগে। ৭২ ঘন্টা সময় লাগে পানি কমতে। আশা করছি ২/১ দিনের মধ্যে পানি চলে যাবে।

তিনি বলেন, ফতুল্লার লালপুর এলাকা ফতুল্লার হার্ট। এখানে এলাকার মানুষের কিছুটা ভুল আছে। এখানে রাস্তা উঁচু এলাকা নিচু। তাই তিন লাখ মানুষ প্রায় পানিবন্দি হয়ে আছে। আমরা এখানে তিনটি পানির মোটর পাম্প বসিয়েছিলাম। এখানে একটি ট্রান্সফরমার ছিল, সেটা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ট্রান্সফরমার না হলে তিনটা পাম্প চালানো যাবে না। এটার কারণে প্রচুর পানি জমে রাস্তা ও মসজিদ, মন্দিরে প্রবেশ করছে।

তিনি আরো বলেন, এলজিআরডি আমরা প্রজেক্ট দিয়েছি। এলজিআরডি ব্যর্থ না। আমাদের এলজিআরডি মন্ত্রী চান এ কাজগুলো হোক। হয়ত নিচের লেভেল থেকে কাজগুলো সেখানে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে না। আমি আশা করি এটার পার্মানেন্ট সমাধান করতে এলজিআরডি সহায়তা লাগবে। আপাতত আমরা ট্রান্সফর্মার কিনছি। আগামী কয়েকদিনে পানি নেমে যাবে।

আমি এলজিআরডি মন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলব। তিনি সুযোগ্য ব্যাক্তিত্ব। তাদের সারা বাংলাদেশের প্রতি টান আছে। তারা এ কাজগুলো করে দেবেন বলে আমরা আশা করছি।

পরে সেখানে একটি সমাবেশে বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। এখন এখানে ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফরমার লাগে। এটা ছিল এখানে, খুলে নেওয়া হলো কেন? এখান থেকে ৯০ লাখ টাকা বকেয়া বিল আছে। এগুলো পরিশোধ হয়নি, কে পরিশোধ করবে? ইউনিয়ন পরিষদ বা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফরমার না হলে তিনটা পাম্প চালানো যাবে না।

তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে চাওয়া মানে একটা প্রসিডিউর আছে, এখানে সময় লাগবে। এখন যত টাকা দাম হোক আমি ঠিক করেছি সদকায়ে জরিয়া হিসেবে এ ট্রান্সফরমার কিনতে যত টাকা লাগে আমি দেব। এখানে অনেক ধনী লোক আছে। তারা এগিয়ে আসুক। এ এলাকায় বাড়ি দুই ফুট নিচে। কতদিন আমি এভাবে চলবো। এলজিআরডি আমি স্পেশাল প্রজেক্ট দিয়েছি।

আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। ৯০ লাখ টাকা কে দিবে? তো আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বসব। এটা মওকুফ হলে হবে নয়ত আমরা ব্যাবস্থা করবো। কিন্তু এর পরের বিল কে দিবে। আমি চেয়ারম্যান সাহেবদের বলব আগের থেকে ব্যবস্থা করবেন। এখন এখানে যত লোক আছে তারা সবাই একসঙ্গে বিল দিতে গেলেও সমস্যা। অনেকে আছেন সামর্থ্যবান, বিল দিতে পারেন। আবার অনেকে বিল দিতে পারেন না। আমি লজ্জিত। আমরা ভেবেছিলাম এবার এ জায়গা শুকনা থাকবে। এ পানি টানতে ৭২ ঘণ্টা লাগে। আমরা তিনটা জিনিস ভেবেছি। একটা ট্রান্সফরমার লাগবে। একটা ভালো ট্রান্সফরমারের ব্যবস্থা করো, আমি টাকা দেব।

আপনারা সবাই যার যার এলাকার ড্রেন পরিষ্কার রাখবেন। আপনারা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করুন। আমি জানি এটা আপনাদের পক্ষে একা সম্ভব না। যদি আর বৃষ্টি না হয় দুইদিনের মধ্যে এ পানি সরে যাবে। তোমরা ট্রান্সফরমারের খোঁজ নাও, আমি টাকা রেডি রেখেছি। ওটা লাগালে যত পানি আসুক টেনে বের করে দিতে পারবো। এটার একটা পার্মানেন্ট সমাধান দরকার। আমি চাই এমনভাবে মানুষের কষ্ট তুলে ধরুন, সেটা আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠালে ওটা আমার কথার চেয়ে বেশি কার্যকর হবে।

এখানকার রাস্তাটা খুব দ্রুত হয়ে যাবে। আমার মা নাগিনা জোহা সড়ক হয়েছে। সেটা আরও দ্বিগুণ বড় হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ সেন্টার হচ্ছে। এখানে তিনটি মেট্রোরেল এসে থামবে। তবে এ এলাকাটার ঝামেলা হচ্ছে এ এলাকাটা নিচু। কেউ জায়গা দেয় না কিন্তু সবাই পানি পরিষ্কার করতে চায়।

শামীম ওসমান বলেন, আমি ভোট চাইতে আসিনি দোয়া চাইতে এসেছি। দোয়া করবেন এ কাজগুলো যেন করতে পারি। আপনারা খোঁজ নিয়ে ট্রান্সফরমার লাগান। আজকে এটা লাগালে কালকেই পানি বের হয়ে যাবে। সব সমস্যার সমাধান সম্ভব না। আমি ট্রান্সফরমারের জন্য বসে থাকলে ১৫ দিন লাগবে।

এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, ফতুল্লা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, ফতুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান ফাইজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পানিবন্দি মানুষকে পানিমুক্ত করা সওয়াবের কাজ : শামীম ওসমান

প্রকাশের সময় : ১১:০৪:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একে এম শামীম ওসমান বলেন, পানিবন্দি মানুষকে পানিমুক্ত করা সওয়াবের কাজ। মানুষের বসতবাড়ি, মসজিদের পানি প্রবেশ করেছে। এটা যা হয়েছে এটা জলাবদ্ধতা নয়, ময়লাবদ্ধতা।

বুধবার (২৯ মে) বিকেলে ফতুল্লা চৌধুরী বাড়ী পারিবারিক মিলনায়তনে জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের সাথে মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শামীম ওসমান বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলতেছে, পানি টানতে সময় লাগে। ৭২ ঘন্টা সময় লাগে পানি কমতে। আশা করছি ২/১ দিনের মধ্যে পানি চলে যাবে।

তিনি বলেন, ফতুল্লার লালপুর এলাকা ফতুল্লার হার্ট। এখানে এলাকার মানুষের কিছুটা ভুল আছে। এখানে রাস্তা উঁচু এলাকা নিচু। তাই তিন লাখ মানুষ প্রায় পানিবন্দি হয়ে আছে। আমরা এখানে তিনটি পানির মোটর পাম্প বসিয়েছিলাম। এখানে একটি ট্রান্সফরমার ছিল, সেটা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ট্রান্সফরমার না হলে তিনটা পাম্প চালানো যাবে না। এটার কারণে প্রচুর পানি জমে রাস্তা ও মসজিদ, মন্দিরে প্রবেশ করছে।

তিনি আরো বলেন, এলজিআরডি আমরা প্রজেক্ট দিয়েছি। এলজিআরডি ব্যর্থ না। আমাদের এলজিআরডি মন্ত্রী চান এ কাজগুলো হোক। হয়ত নিচের লেভেল থেকে কাজগুলো সেখানে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে না। আমি আশা করি এটার পার্মানেন্ট সমাধান করতে এলজিআরডি সহায়তা লাগবে। আপাতত আমরা ট্রান্সফর্মার কিনছি। আগামী কয়েকদিনে পানি নেমে যাবে।

আমি এলজিআরডি মন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলব। তিনি সুযোগ্য ব্যাক্তিত্ব। তাদের সারা বাংলাদেশের প্রতি টান আছে। তারা এ কাজগুলো করে দেবেন বলে আমরা আশা করছি।

পরে সেখানে একটি সমাবেশে বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। এখন এখানে ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফরমার লাগে। এটা ছিল এখানে, খুলে নেওয়া হলো কেন? এখান থেকে ৯০ লাখ টাকা বকেয়া বিল আছে। এগুলো পরিশোধ হয়নি, কে পরিশোধ করবে? ইউনিয়ন পরিষদ বা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফরমার না হলে তিনটা পাম্প চালানো যাবে না।

তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে চাওয়া মানে একটা প্রসিডিউর আছে, এখানে সময় লাগবে। এখন যত টাকা দাম হোক আমি ঠিক করেছি সদকায়ে জরিয়া হিসেবে এ ট্রান্সফরমার কিনতে যত টাকা লাগে আমি দেব। এখানে অনেক ধনী লোক আছে। তারা এগিয়ে আসুক। এ এলাকায় বাড়ি দুই ফুট নিচে। কতদিন আমি এভাবে চলবো। এলজিআরডি আমি স্পেশাল প্রজেক্ট দিয়েছি।

আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। ৯০ লাখ টাকা কে দিবে? তো আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বসব। এটা মওকুফ হলে হবে নয়ত আমরা ব্যাবস্থা করবো। কিন্তু এর পরের বিল কে দিবে। আমি চেয়ারম্যান সাহেবদের বলব আগের থেকে ব্যবস্থা করবেন। এখন এখানে যত লোক আছে তারা সবাই একসঙ্গে বিল দিতে গেলেও সমস্যা। অনেকে আছেন সামর্থ্যবান, বিল দিতে পারেন। আবার অনেকে বিল দিতে পারেন না। আমি লজ্জিত। আমরা ভেবেছিলাম এবার এ জায়গা শুকনা থাকবে। এ পানি টানতে ৭২ ঘণ্টা লাগে। আমরা তিনটা জিনিস ভেবেছি। একটা ট্রান্সফরমার লাগবে। একটা ভালো ট্রান্সফরমারের ব্যবস্থা করো, আমি টাকা দেব।

আপনারা সবাই যার যার এলাকার ড্রেন পরিষ্কার রাখবেন। আপনারা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করুন। আমি জানি এটা আপনাদের পক্ষে একা সম্ভব না। যদি আর বৃষ্টি না হয় দুইদিনের মধ্যে এ পানি সরে যাবে। তোমরা ট্রান্সফরমারের খোঁজ নাও, আমি টাকা রেডি রেখেছি। ওটা লাগালে যত পানি আসুক টেনে বের করে দিতে পারবো। এটার একটা পার্মানেন্ট সমাধান দরকার। আমি চাই এমনভাবে মানুষের কষ্ট তুলে ধরুন, সেটা আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠালে ওটা আমার কথার চেয়ে বেশি কার্যকর হবে।

এখানকার রাস্তাটা খুব দ্রুত হয়ে যাবে। আমার মা নাগিনা জোহা সড়ক হয়েছে। সেটা আরও দ্বিগুণ বড় হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ সেন্টার হচ্ছে। এখানে তিনটি মেট্রোরেল এসে থামবে। তবে এ এলাকাটার ঝামেলা হচ্ছে এ এলাকাটা নিচু। কেউ জায়গা দেয় না কিন্তু সবাই পানি পরিষ্কার করতে চায়।

শামীম ওসমান বলেন, আমি ভোট চাইতে আসিনি দোয়া চাইতে এসেছি। দোয়া করবেন এ কাজগুলো যেন করতে পারি। আপনারা খোঁজ নিয়ে ট্রান্সফরমার লাগান। আজকে এটা লাগালে কালকেই পানি বের হয়ে যাবে। সব সমস্যার সমাধান সম্ভব না। আমি ট্রান্সফরমারের জন্য বসে থাকলে ১৫ দিন লাগবে।

এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, ফতুল্লা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, ফতুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান ফাইজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।