Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে সরকার গঠনে অনিশ্চয়তা কাটল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

শাহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রেখে অবশেষে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করতে যাচ্ছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। ফলে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা কাটল।

ডনের খবরে বলা হয়েছে, জোট সরকার গড়তে একমত হয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ। আর প্রেসিডেন্ট হবেন পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি।

খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইসলামাবাদে জারদারির বাসভবনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এ ঘোষণা দেন। এর ফলে নির্বাচনের পর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল তা আপাতত কাটলো বলে মনে করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল বলেন, পিপিপি এবং পিএমএল-এন প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন অর্জন করেছে এবং এখন আমরা সরকার গঠনের অবস্থানে আছি। পিপিপি ও পিএমএল-এন জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে পিপিপির আসিফ আলী জারদারিকে সমর্থন দেয়ার জন্য পিএমএল-এনকে ধন্যবাদ জানান বিলাওয়াল ভুট্টো। তিনি বলেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল কেন্দ্রে সরকার গঠনের মতো সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ বলেন, আসিফ আলি জারদারিকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ভোট তাদের আছে।

জোট সরকার সরকার গঠনে একমত হলেও পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ যাত্রা সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেন শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, পরবর্তী সরকারের সামনের যাত্রা সহজ হবে না। অনেক অসুবিধা এবং বাধার মধ্য দিয়ে জোট সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তানসহ অন্য মিত্র দলগুলোকে ধন্যবাদ জানান শাহবাজ।

তবে নতুন সরকারের মন্ত্রীসভায় তারা কোন কোন মন্ত্রণালয়গুলো নেবেন বা পাবেন সেটি পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিলাওয়াল।

এদিকে এই সরকারকে বিগত পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদ বলে উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই।

ক্ষমতা ভাগাভাগির ফরমুলা

সূত্রকে উদ্ধৃত করে জিও নিউজ বলেছে, শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভায় কোনও দায়িত্ব নেবে না পিপিপি। কিন্তু প্রেসিডেন্সির মতো সাংবিধানিক কয়েকটি পদ তারা পাবে। পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারেও কোনও মন্ত্রণালয় নিচ্ছে না বিলাওয়ালের দল।

কী পাবে পিপিপি?

প্রেসিডেন্ট, সিনেট চেয়ারম্যান, পাঞ্জাবের গভর্নর, খাইবার পাখতুনখোয়ার গভর্নর, বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী, জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার।

এর বিনিময়ে কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গঠনে পিপিপির সমর্থন পাবে পিএমএলএন। বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী পদে পিপিপির প্রার্থীকে ভোট দেবে পিএমএলএন।

কী পাবে পিএমএলএন?

প্রধানমন্ত্রীত্ব, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী, জাতীয় পরিষদের স্পিকার, সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের গভর্নর।

পাকিস্তানের সংবিধান অনুসারে, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আহ্বান করতে হবে। ওই দিন নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

যেভাবে সমন্বয় করবে দলগুলো

ক্ষমতা ভাগাভাগির ফর্মুলার বিষয়ে দুই দলের সম্মতির কথা নিশ্চিত করে পিপিপির মুখপাত্র ফয়সাল করিম কুন্ডি বুধবার বলেছেন, শাহবাজ শরিফ নিজের পছন্দমতো মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দিতে পারবেন। নীতিনির্ধারণের জন্য কমিটি গঠন করা হচ্ছে। সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী নেতারা ঘোষণা করবেন।

তিনি বলেছেন, সমালোচনার জন্য সমালোচনা আমরা করব না। আমরা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার করতে করতে এখন কুসংস্কারের পথে এগোচ্ছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

পাকিস্তানে সরকার গঠনে অনিশ্চয়তা কাটল

প্রকাশের সময় : ০৫:১৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

শাহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রেখে অবশেষে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করতে যাচ্ছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। ফলে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা কাটল।

ডনের খবরে বলা হয়েছে, জোট সরকার গড়তে একমত হয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ। আর প্রেসিডেন্ট হবেন পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি।

খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইসলামাবাদে জারদারির বাসভবনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এ ঘোষণা দেন। এর ফলে নির্বাচনের পর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল তা আপাতত কাটলো বলে মনে করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল বলেন, পিপিপি এবং পিএমএল-এন প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন অর্জন করেছে এবং এখন আমরা সরকার গঠনের অবস্থানে আছি। পিপিপি ও পিএমএল-এন জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে পিপিপির আসিফ আলী জারদারিকে সমর্থন দেয়ার জন্য পিএমএল-এনকে ধন্যবাদ জানান বিলাওয়াল ভুট্টো। তিনি বলেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল কেন্দ্রে সরকার গঠনের মতো সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ বলেন, আসিফ আলি জারদারিকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ভোট তাদের আছে।

জোট সরকার সরকার গঠনে একমত হলেও পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ যাত্রা সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেন শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, পরবর্তী সরকারের সামনের যাত্রা সহজ হবে না। অনেক অসুবিধা এবং বাধার মধ্য দিয়ে জোট সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তানসহ অন্য মিত্র দলগুলোকে ধন্যবাদ জানান শাহবাজ।

তবে নতুন সরকারের মন্ত্রীসভায় তারা কোন কোন মন্ত্রণালয়গুলো নেবেন বা পাবেন সেটি পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিলাওয়াল।

এদিকে এই সরকারকে বিগত পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদ বলে উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই।

ক্ষমতা ভাগাভাগির ফরমুলা

সূত্রকে উদ্ধৃত করে জিও নিউজ বলেছে, শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভায় কোনও দায়িত্ব নেবে না পিপিপি। কিন্তু প্রেসিডেন্সির মতো সাংবিধানিক কয়েকটি পদ তারা পাবে। পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারেও কোনও মন্ত্রণালয় নিচ্ছে না বিলাওয়ালের দল।

কী পাবে পিপিপি?

প্রেসিডেন্ট, সিনেট চেয়ারম্যান, পাঞ্জাবের গভর্নর, খাইবার পাখতুনখোয়ার গভর্নর, বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী, জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার।

এর বিনিময়ে কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গঠনে পিপিপির সমর্থন পাবে পিএমএলএন। বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী পদে পিপিপির প্রার্থীকে ভোট দেবে পিএমএলএন।

কী পাবে পিএমএলএন?

প্রধানমন্ত্রীত্ব, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী, জাতীয় পরিষদের স্পিকার, সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের গভর্নর।

পাকিস্তানের সংবিধান অনুসারে, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আহ্বান করতে হবে। ওই দিন নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

যেভাবে সমন্বয় করবে দলগুলো

ক্ষমতা ভাগাভাগির ফর্মুলার বিষয়ে দুই দলের সম্মতির কথা নিশ্চিত করে পিপিপির মুখপাত্র ফয়সাল করিম কুন্ডি বুধবার বলেছেন, শাহবাজ শরিফ নিজের পছন্দমতো মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দিতে পারবেন। নীতিনির্ধারণের জন্য কমিটি গঠন করা হচ্ছে। সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী নেতারা ঘোষণা করবেন।

তিনি বলেছেন, সমালোচনার জন্য সমালোচনা আমরা করব না। আমরা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করব।