Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে ভয়াবহ দুর্দশা নেমে এসেছে ফিলিস্তিনিদের ওপর। তাদের এই দুর্দশায় সংহতি জানিয়ে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার গাজার বাসিন্দাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নববর্ষ উদযাপনে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কাকার বলেন, ফিলিস্তিনের গুরুতর উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য পাকিস্তানের সরকার নববর্ষ উপলক্ষে সব ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে।

এ সময় তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রদর্শন এবং নববর্ষে সংযম ও নম্রতা প্রদর্শনে পাকিস্তানের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কাকার বলেন, গাজা ও পশ্চিম তীরে নিরপরাধ শিশুদের গণহত্যা এবং নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানিরা এবং পুরো মুসলিম বিশ্ব অত্যন্ত ব্যথিত।

পাকিস্তানের এই তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান প্রত্যেকটি বৈশ্বিক ফোরামে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশার কথা বলছে এবং ভবিষ্যতেও ইসরায়েলি রক্তপাত বন্ধ করতে তা অব্যাহত রাখবে। পাকিস্তান ইতিমধ্যে দুই দফায় ফিলিস্তিনে সহায়তা পাঠিয়েছে। আরও এক দফায় সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান ফিলিস্তিনকে সময়মত সহায়তা এবং গাজার আহতদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জর্ডান এবং মিসরের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে, মঙ্গলবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে নববর্ষ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। শহরটির কর্তৃপক্ষ বলছে, ফিলিস্তিনিদের দুর্দশায় সংহতি জানাতে নববর্ষের সন্ধ্যায় কোনও ধরনের আতশবাজি কিংবা উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শারজাহ পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে নববর্ষ উদযাপনে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে।

ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে শারজাহ পুলিশ বলেছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পোস্টে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ‘‘গাজা উপত্যকায় আমাদের ভাইবোনদের প্রতি সংহতি এবং মানবিক সহযোগিতার আন্তরিক প্রকাশ।’’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দুই মাসের বেশি সময়ের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ২১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।

সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫৪ হাজার ৯৬৮ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।

অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা প্রয়োজন : সালাহউদ্দিন আহমদ

পাকিস্তানে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশের সময় : ১০:৪৯:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে ভয়াবহ দুর্দশা নেমে এসেছে ফিলিস্তিনিদের ওপর। তাদের এই দুর্দশায় সংহতি জানিয়ে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার গাজার বাসিন্দাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নববর্ষ উদযাপনে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কাকার বলেন, ফিলিস্তিনের গুরুতর উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য পাকিস্তানের সরকার নববর্ষ উপলক্ষে সব ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে।

এ সময় তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রদর্শন এবং নববর্ষে সংযম ও নম্রতা প্রদর্শনে পাকিস্তানের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কাকার বলেন, গাজা ও পশ্চিম তীরে নিরপরাধ শিশুদের গণহত্যা এবং নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানিরা এবং পুরো মুসলিম বিশ্ব অত্যন্ত ব্যথিত।

পাকিস্তানের এই তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান প্রত্যেকটি বৈশ্বিক ফোরামে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশার কথা বলছে এবং ভবিষ্যতেও ইসরায়েলি রক্তপাত বন্ধ করতে তা অব্যাহত রাখবে। পাকিস্তান ইতিমধ্যে দুই দফায় ফিলিস্তিনে সহায়তা পাঠিয়েছে। আরও এক দফায় সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান ফিলিস্তিনকে সময়মত সহায়তা এবং গাজার আহতদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জর্ডান এবং মিসরের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে, মঙ্গলবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে নববর্ষ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। শহরটির কর্তৃপক্ষ বলছে, ফিলিস্তিনিদের দুর্দশায় সংহতি জানাতে নববর্ষের সন্ধ্যায় কোনও ধরনের আতশবাজি কিংবা উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শারজাহ পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে নববর্ষ উদযাপনে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে।

ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে শারজাহ পুলিশ বলেছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পোস্টে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ‘‘গাজা উপত্যকায় আমাদের ভাইবোনদের প্রতি সংহতি এবং মানবিক সহযোগিতার আন্তরিক প্রকাশ।’’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দুই মাসের বেশি সময়ের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ২১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু,অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।

সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৫৪ হাজার ৯৬৮ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ জন। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।

অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।