নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রথম আলোর প্রতিবেদককে গ্রেফতারের ঘটনায় পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ প্রকাশে দেশের ভাবমূর্তিতে বিন্দুমাত্র আঁচড়ও পড়বে না।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চরাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘আইওসি রিজিওনাল কমিটি ফর দ্য সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ওশান (আইসিওআইএনডিও)-এর নবম আন্তঃসরকারি অধিবেশনের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের যে অর্জন শুধু অর্থনৈতিক নয়, অ্যাকাউন্টিবিলিটির ক্ষেত্রেও আমাদের যে অর্জন; পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশই তা পারেনি। সে জায়গা থেকে আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এসব বিষয়ে আমাদের ভাবমূর্তিতে ন্যূনতম আঁচড়ও পড়বে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব চ্যালেঞ্জ রয়েছে; সেই চ্যালেঞ্জ নিজস্ব উপায়ে আমরা মোকাবিলাও করছি; স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ইস্যুতে সকলের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।
প্রথম আলোর সাংবাদিককে আটকের ঘটনায় বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র বিবৃতি দিয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে কি না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি বিবৃতিটি এখনো দেখিনি। এটা টেকনিক্যাল ইস্যু। এটা তথ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়।
শাহরিয়ার আলম বলেন, এই দেশগুলোতেই কিন্তু আইন করা হয়েছে গাড়ি প্রতিরোধ করে যদি দাবি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা কেউ করেন, তাহলে ৭ বছরের জেল হবে। তবে সেই দেশেও আইন পরিবর্তনের জন্য মানুষ রাস্তায় নামছে। সবারই একটা চ্যালেঞ্জ আছে রাষ্ট্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, এক সময় প্রতিটা মৃত্যুদণ্ডের সময় তার আগের দিন বা পরের দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি করে আমরা ফ্যাক্স পেতাম। তারা বলতেনও তাদের এটা নিয়ম অনুযায়ী পাঠাতে হয়। আমরা তাদের গ্রাউন্ড রিয়েলেটি বুঝি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা কোনোভাবেই এত ঠুনকো নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে শক্ত হাতে, সঠিক পথে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এসব মন্তব্য, বিবৃতি, অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন (এমএফসি)।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এমএফসির এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর বিষয়ে এমএফসি উদ্বিগ্ন। এর মধ্যে রয়েছে- সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহকারী সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা, আল-জাজিরার লন্ডন-ভিত্তিক সাংবাদিকের ভাইয়ের ওপর হামলা, ঢাকা ট্রিবিউনের আলোকচিত্র সাংবাদিকের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি প্রথম আলোর সাংবাদিক আটকের খবর।
বিবৃতিতে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে এর প্রতিটি ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে এমএফসি।
এমএফসির স্বাক্ষরকারী দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।