নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পলাশীর বেইমান সেনাপতি ইয়ার লতিফ আর পঁচাত্তরের বেইমান সেনাপতি জিয়াউর রহমান ।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতাসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের নামে ফ্যাসিবাদি তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। তাদের প্রতিদিন শুধু এক কথা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার। দেশে তত্ত্বাবধায়ক আর কখনো ফিরবে না।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের মাথাব্যথা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের আগে পাকিস্তানে নির্বাচন, সেখানে কেউ যায় না। অথচ আমরা দাওয়াত করি না, তা-ও কোথা থেকে কিছুদিন পরপরই মেহমান চলে আসে।
তিনি বলেন, তারা ধমক মারে, হুমকি দেয়, এখন আবার ভিসানীতি প্রয়োগ করেছে। অথচ এমন হুমকি বিএনপির বেলায় নেই। কিন্তু নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে বিএনপি। ফলে ভিসানীতিতে তারা পড়ে, আমরা না। আমরা নির্বাচনের আগেও শান্তি চাই, নির্বাচনের পরেও শান্তি চাই। বিএনপি বাংলাদেশের সন্ত্রাসী সংগঠন।
তিনি বলেন, ঘরুর হাট গোলাপবাগে বিএনপির কর্মীরা হতাশায় ছিল। এখন সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার আন্দোলনে কর্মীদের ২-৫ হাজার টাকা দিয়ে আন্দোলন করাতে ঢাকায় আনা হচ্ছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে পাকিস্তানে যাওয়ার পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের।
এ সময় বাংলাদেশের ওপর বিদেশিদের আগ্রহ নিয়েও ক্ষোভ ঝাড়েন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এ বছর ২০ থেকে ২২টি দেশে নির্বাচন হবে। বিদেশিরা ঐ ২০ দেশ বাদ দিয়ে শুধু বাংলাদেশ নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছে। আমাদের আগে পাকিস্তানে নির্বাচন, সেখানেও তো কেউ যায় না। অথচ আমরা দাওয়াত করি না, তাও কোথা থেকে কিছুদিন পর পরই মেহমান চলে আসে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা এখন বলে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র, ফ্যাসিবাদী কাকে বলে। এটার পুরো চরিত্রই বিএনপির ক্ষমতার আমলকে পুরো ফুটিয়ে তোলে। ফ্যাসিবাদের জ্বলন্ত প্রমাণ বিএনপি। ফ্যাসিবাদ তারা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে শৃঙ্খল মুক্ত করে দেশকে এগিয়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার লিভিং লিগ্যাসি হিসেবে এই জনপদ যতদিন থাকবে তার নাম প্রতিধ্বনিত হবে। এটা বোধহয় সৃষ্টিকর্তার অমর সৃষ্টি। এই দেশের সবচেয়ে বড় সৃষ্টি, বঙ্গবন্ধুর মুখ নিঃসৃত শব্দ মুক্তি আর স্বাধীনতা। স্বাধীনতার লিগ্যাসি বঙ্গবন্ধুর নামেই উচ্চারিত হবে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম এটাও তার লিগ্যাসি, এটা বহন করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের এই লিগ্যাসি আরও পরিষ্কার হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক রহমানকে বলেন, সাহস থাকলে আসতে। রাজপথে ফয়সালা হোক। আদালতের রায় আছে তার বক্তৃতা কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। প্রতিদিনই তিনি এগুলো করে যাচ্ছেন, এর কোনো বিচার নেই? ইউরোপ আমেরিকার গণতন্ত্রের নেতারা এই ফ্যাসিস্টের তৎপরতা দেখেন না। তারেকের বিষয় দেখেন না?
শেখ হাসিনা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো হুমকিতে ভয় পায় না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম থাকবে। বাংলাদেশ গত ১৫ বছরে স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে।
মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। আর সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যা পাওয়া বিএনপি চায় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে। কাজেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আর ভিসানীতি কার ওপর প্রয়োগ হয় সেটাই দেখা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র লীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।