রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :
রাজশাহীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না পিয়াকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে পুলিশ পিয়াকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেফতার জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না পিয়া রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পিয়া ডিগ্রি পরীক্ষার্থী ছিলেন। আজ তার ইসলামিক স্টাডিজ তৃতীয়পত্র বিষয়ে পরীক্ষা ছিল বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে নগর ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না পিয়া ডিগ্রি পরীক্ষা দিতে যান। পরীক্ষা চলাকালীন পাশের সিটে বসা পরীক্ষার্থীরা পিয়াকে চিনতে পারেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ ছাত্রীরা ও ছাত্রদলের সদস্যরা একত্রিত হয়ে পরীক্ষার হলের বাইরে অবস্থান নেন। পরীক্ষা শেষে সাধারণ ছাত্রীরা পিয়াকে আটক করে পুলিশে দেন। পরে পুলিশ তাকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যায়।
রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা দিতে কলেজে এসেছিলেন। পরীক্ষা চলাকালেই একদল শিক্ষার্থী আসেন এবং তারা জানান, মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে।
শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে একটি মামলার এজাহার দেখান, যেখানে আসামি হিসেবে পিয়ার নাম রয়েছে। এটি দেখার পর অধ্যক্ষ পুলিশে ফোন করতে চান। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা নিজেরাই পুলিশ ডেকেছেন।
অধ্যক্ষ জানান, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা চলা পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করেন। পরীক্ষা শেষ হলে তারা পরীক্ষা কক্ষের ভেতরে যান। এরপর সেনাবাহিনীর সহায়তায় নারী পুলিশ সদস্যরা পিয়াকে ধরে নিয়ে যায়।
এদিকে, ছাত্রলীগের নেত্রী পিয়াকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য পরীক্ষার্থীরা বসে আছেন। সেখানেই পিয়াকে চড় মারছেন এক নারী। পিয়া জানতে চাইছেন, ‘আমার অপরাধ কি?’
একপর্যায়ে পরীক্ষার হলেই অসুস্থ হয়ে মেঝেতে পড়ে যান পিয়া। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসে। তারা যখন পিয়াকে পরীক্ষার হল থেকে বের করছিল, তখন ছাত্রলীগে নেত্রীকে মারধর করতে শুরু করেন দুই নারী। পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় পিয়া ‘মুজিব তোমার স্মরণে, ভয় করি না মরণে’, ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। পিয়াকে নিয়ে যখন পুলিশের গাড়ি কলেজ থেকে বের হচ্ছিল, তখন অনেকেই ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। কলেজ থেকে আনার পরই তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।