Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করতে সরকার কাজ করছে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৫৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৮৮ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে সরকার নানা রকমের উদ্যোগ গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বর্জ্য নিষ্পত্তি এবং সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করতে বেশ কিছু প্রকল্প চলমান। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সহায়ক হবে।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘টেকসই পানি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য শক্তিশালী স্থানীয় সরকার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ছাড়াও ভারত ও নেপালের সংসদ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে, যা সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করার জন্য ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও পরিবেশের সঠিক সুরক্ষার জন্য কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের পাগলায় স্থাপিত পয়ঃশোধানাগার প্রকল্পে ক্ষমতা ১২০ এমএলডি থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ এমএলডি করার প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এছাড়াও ৫০০ এমএলডি ক্ষমতা সম্পন্ন দাসেরকান্দি পয়ঃশোধানাগার প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে।

ঢাকা উত্তরের জন্য উত্তরা ক্যাচমেন্ট, ঢাকা পশ্চিমের জন্য মিরপুর ক্যাচমেন্ট ও রায়ের বাজার ক্যাচমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৬.২ ও ৬.৩ পূরণে সহায়ক হবে বলেও জানান তিনি।

মো. তাজুল ইসলাম এসময় চাষাবাদের জন্য সৌরশক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, কৃষিকাজে পানি সরবরাহের জন্য সৌর বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে তা টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের সাধারণ জনগণের কাছে ওয়াদা ছিল, আমরা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করব। এটা করতে গিয়ে আমাদের সারা দেশ বিদ্যুতের আওতায় আনতে হয়েছে। প্রচুর শিল্পায়ন করতে হয়েছে। এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে জলবায়ুতে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ১০-১৫ বছর আগে ঢাকা শহরের ৬০ ভাগের বেশি লোক পর্যাপ্ত পানি পেত না। এখন শতভাগ মানুষ পানি পাচ্ছে। পাশাপাশি কারখানাগুলোতেও প্রচুর পানি দরকার হচ্ছে। এজন্য আমাদের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হয়েছে। এটা করতে গিয়ে তার প্রভাব পড়েছে জলবায়ুতে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের যখন স্বাধীন দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু হয়, তখন আমাদের অবস্থা শোচনীয় ছিল। আমাদের জনগণের দারিদ্রের কারণে খুব স্বাভাবিকভাবেই জলবায়ু পরিবর্তন বা এই ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে কিছুই জানত না। ১৯৯৬ সালে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৩২৯ মার্কিন ডলার। এর থেকে বোঝা যায়, সে সময়ে অবস্থা কেমন ছিল।

তিনি আরও বলেন, এই সময়ের মধ্যে যখন ২০০৯ সালে আবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসেন, তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৭০০ ডলারের কাছাকাছি। বর্তমানে যেটি বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। কারণ, আমাদের এটা ওয়াদা ছিল।

তাজুল ইসলাম বলেন, কৃষিখাতে জিডিপি বাড়ার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। আর এজন্য পুরোনো কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তে এই খাতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করায় এটি সম্ভব হয়েছে। এজন্য কিছু চ্যালেঞ্জ এসেছে। অবশ্যই জলবায়ুর ওপর প্রভাব পড়েছে। কারণ কার্বন নিঃসরণ ও হেভি মেটাল। পাশাপাশি, এটা করতে গিয়ে আমাদের বিদ্যুৎখাতে সক্ষমতা বাড়াতে হয়েছে। এসব কারণেই জলবায়ুতে প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, আমরা এমডিজি বাস্তবায়ন করেছি। এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে। একই সময়ে আমাদের সামনে লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। এই সময়ের মধ্যে আমাদের ওয়াদা এবং মানুষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আমরা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ নিয়েছি। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন নেদারল্যান্ডস সফর করেন, আমরাও যেহেতু মনে করি ওয়াটার ম্যানেজমেন্টে নেদারল্যান্ডস পুরোপুরি সফল একটি দেশ, তাই আমরা চিন্তা করেছি তারাও ডেল্টা প্ল্যানিংয়ের দেশ, আমরাও ডেল্টা প্ল্যানিং নিয়েছি। নেদারল্যান্ডস এবং আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল আছে। ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে তারা আমাদের সহায়তা করবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করতে সরকার কাজ করছে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে সরকার নানা রকমের উদ্যোগ গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বর্জ্য নিষ্পত্তি এবং সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করতে বেশ কিছু প্রকল্প চলমান। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সহায়ক হবে।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘টেকসই পানি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য শক্তিশালী স্থানীয় সরকার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ছাড়াও ভারত ও নেপালের সংসদ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে, যা সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করার জন্য ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও পরিবেশের সঠিক সুরক্ষার জন্য কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের পাগলায় স্থাপিত পয়ঃশোধানাগার প্রকল্পে ক্ষমতা ১২০ এমএলডি থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ এমএলডি করার প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এছাড়াও ৫০০ এমএলডি ক্ষমতা সম্পন্ন দাসেরকান্দি পয়ঃশোধানাগার প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে।

ঢাকা উত্তরের জন্য উত্তরা ক্যাচমেন্ট, ঢাকা পশ্চিমের জন্য মিরপুর ক্যাচমেন্ট ও রায়ের বাজার ক্যাচমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৬.২ ও ৬.৩ পূরণে সহায়ক হবে বলেও জানান তিনি।

মো. তাজুল ইসলাম এসময় চাষাবাদের জন্য সৌরশক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, কৃষিকাজে পানি সরবরাহের জন্য সৌর বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে তা টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের সাধারণ জনগণের কাছে ওয়াদা ছিল, আমরা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করব। এটা করতে গিয়ে আমাদের সারা দেশ বিদ্যুতের আওতায় আনতে হয়েছে। প্রচুর শিল্পায়ন করতে হয়েছে। এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে জলবায়ুতে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ১০-১৫ বছর আগে ঢাকা শহরের ৬০ ভাগের বেশি লোক পর্যাপ্ত পানি পেত না। এখন শতভাগ মানুষ পানি পাচ্ছে। পাশাপাশি কারখানাগুলোতেও প্রচুর পানি দরকার হচ্ছে। এজন্য আমাদের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হয়েছে। এটা করতে গিয়ে তার প্রভাব পড়েছে জলবায়ুতে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের যখন স্বাধীন দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু হয়, তখন আমাদের অবস্থা শোচনীয় ছিল। আমাদের জনগণের দারিদ্রের কারণে খুব স্বাভাবিকভাবেই জলবায়ু পরিবর্তন বা এই ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে কিছুই জানত না। ১৯৯৬ সালে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৩২৯ মার্কিন ডলার। এর থেকে বোঝা যায়, সে সময়ে অবস্থা কেমন ছিল।

তিনি আরও বলেন, এই সময়ের মধ্যে যখন ২০০৯ সালে আবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসেন, তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৭০০ ডলারের কাছাকাছি। বর্তমানে যেটি বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। কারণ, আমাদের এটা ওয়াদা ছিল।

তাজুল ইসলাম বলেন, কৃষিখাতে জিডিপি বাড়ার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। আর এজন্য পুরোনো কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তে এই খাতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করায় এটি সম্ভব হয়েছে। এজন্য কিছু চ্যালেঞ্জ এসেছে। অবশ্যই জলবায়ুর ওপর প্রভাব পড়েছে। কারণ কার্বন নিঃসরণ ও হেভি মেটাল। পাশাপাশি, এটা করতে গিয়ে আমাদের বিদ্যুৎখাতে সক্ষমতা বাড়াতে হয়েছে। এসব কারণেই জলবায়ুতে প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, আমরা এমডিজি বাস্তবায়ন করেছি। এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে। একই সময়ে আমাদের সামনে লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। এই সময়ের মধ্যে আমাদের ওয়াদা এবং মানুষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আমরা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ নিয়েছি। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন নেদারল্যান্ডস সফর করেন, আমরাও যেহেতু মনে করি ওয়াটার ম্যানেজমেন্টে নেদারল্যান্ডস পুরোপুরি সফল একটি দেশ, তাই আমরা চিন্তা করেছি তারাও ডেল্টা প্ল্যানিংয়ের দেশ, আমরাও ডেল্টা প্ল্যানিং নিয়েছি। নেদারল্যান্ডস এবং আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল আছে। ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে তারা আমাদের সহায়তা করবে।