নিজস্ব প্রতিবেদক :
পতিত স্বৈরাচার আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শুক্রবার (২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেয়া বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে আবারও স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অবজ্ঞা ও অবহেলামূলক বক্তব্য অপশক্তিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে সহায়তা করবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা দিতে হবে। তাই প্রয়োজন জনগণের নির্বাচিত সরকার।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে সব রাজনৈতিক দলকে জনগণের আদালতে তোলার ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকারকেই করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের অবস্থান এক হওয়া উচিত। বিগত বছরে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিরাজনীতিকরণ দেশের গণতন্ত্রের জন্য এক গভীর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। নির্বাচন বিষয়ে কেন সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে? এর ফলে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের সামনে আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
পাঁচ আগস্টের পর রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া নতুন ২৫টি দলকে স্বাগত জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আদর্শের ভিন্নতা থাকতে পারে, তবে দেশের স্বার্থে সব দল এক হয়ে কাজ করবে, এমন প্রত্যাশা আমরা রাখি।
তারেক রহমান পতিত স্বৈরাচারের পুনরুত্থান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে? যদি বর্তমান সরকার ব্যবস্থা না নেয়, পরবর্তী নির্বাচিত সরকার অবশ্যই স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময় জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি চেয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে যে, নির্বাচনের দাবি জানানোও যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের স্বার্থের প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলের অবস্থান এক ও অভিন্ন। ব্লেইম গেম দিয়ে এ সরকারের দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। নতুন যে সরকার গঠিত হবে, তারা পলাতক স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
জনগণকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা দিতে জনগণের নির্বাচিত সরকার দরকার মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশে স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, সুকৌশলে দেশে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে, যেন নির্বাচন নিয়ে কথা বলা না যায়। চলমান সংস্কার করতে গিয়ে যদি নির্বাচনের দাবিকে অবজ্ঞা করা হয়, তাহলে সংস্কারের কোনো মানে নেই।