Dhaka শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীর কবিরহাটে নৈশপ্রহরীকে খুন করে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি  : 

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় নৈশপ্রহরী মো. শহীদ উল্যাকে (৬০) নামে এক নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে দুই স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত তিন কোটি টাকার স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুট করে ডাকাতরা।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. শহীদ উল্যা কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের উপদ্দি লামছি গ্রামের শামসুল হকের ছেলে।

ডাকাতি হওয়া দোকান দুইটি হলো মা-মনি জুয়েলার্স ও নূর জুয়েলার্স। দুই দোকানের প্রায় তিন কোটি টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মালিকপক্ষ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে ১৫-২০ জনের ডাকাতদল বাজারের মা-মনি জুয়েলার্স ও নূর জুয়েলার্সের তালা ও সিন্দুক কেটে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যান। এসময় বাজারের পাহারাদার শহীদ উল্যাহ বাধা দিলে ডাকাতরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। সকালে মরদেহ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিষয়টি তদন্ত করছে।

এ বিষয়ে মা-মনি জুয়েলার্সের মালিক মিন্টু চন্দ্র নাথ জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১৫-২০ জনের ডাকাতদল পিকআপ গাড়ি নিয়ে এসে আমার দোকানের তালা ও সিন্দুক কেটে ২৫০ ভরি স্বর্ণালংকার, ১৫০ ভরি রূপা ও নগদ তিন লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

নূর জুয়েলার্সে মালিক নূর আলম বলেন, দোকানের তালা কেটে ডাকাতরা সাত ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৫০ ভরি রূপা নিয়ে গেছে। বাজারের ব্যবসায়ীরা বেরিয়ে আসায় স্বর্ণের মূল সিন্দুক ভাঙতে পারেনি তারা।

ওই বাজারের শরীফ শপিং সেন্টারের মালিক নেয়ামত উল্যাহ (২৬) বলেন, ভোর সোয়া ৪টার দিকে ব্যবসার কাজে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার সময় ডাকাতরা আমাকে আটক করে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমার সঙ্গে থাকা চালানের তিন লাখ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জাহাঙ্গীর হোসেন বাচ্চু (৫০) বলেন, ভোর ৪টার দিকে ভাড়া আনতে যাওয়ার সময় ডাকাতরা আমাকে হাত-মুখ বেঁধে পিকআপে তোলে। অস্ত্রের মুখে আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। স্কচটেপ দিয়ে হাতমুখ বেঁধে রাখে। সেখানে নামাজ পড়তে বের হওয়া আরও দুজনকেও বেঁধে রেখেছিল।

চাপরাশিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন টিটু বলেন, ডাকাত দল রাত সাড়ে তিনটা থেকে প্রায় সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দুটি স্বর্ণের দোকানে লুটপাট চালায়। ডাকাতি শেষে তারা গাড়ি নিয়ে ফেনীর সোনাগাজীর দিকে চলে যায় বলে লোকজন জানিয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

কবিরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থল থেকে অনেকগুলো আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষীদের খুঁজে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ বলেন, দুটি সোনার দোকানে ডাকাতি এবং পাহারাদারকে হত্যার ঘটনায় তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টাকালে আটক ৭

নোয়াখালীর কবিরহাটে নৈশপ্রহরীকে খুন করে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি

প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি  : 

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় নৈশপ্রহরী মো. শহীদ উল্যাকে (৬০) নামে এক নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে দুই স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত তিন কোটি টাকার স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুট করে ডাকাতরা।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. শহীদ উল্যা কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের উপদ্দি লামছি গ্রামের শামসুল হকের ছেলে।

ডাকাতি হওয়া দোকান দুইটি হলো মা-মনি জুয়েলার্স ও নূর জুয়েলার্স। দুই দোকানের প্রায় তিন কোটি টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মালিকপক্ষ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে ১৫-২০ জনের ডাকাতদল বাজারের মা-মনি জুয়েলার্স ও নূর জুয়েলার্সের তালা ও সিন্দুক কেটে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যান। এসময় বাজারের পাহারাদার শহীদ উল্যাহ বাধা দিলে ডাকাতরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। সকালে মরদেহ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিষয়টি তদন্ত করছে।

এ বিষয়ে মা-মনি জুয়েলার্সের মালিক মিন্টু চন্দ্র নাথ জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১৫-২০ জনের ডাকাতদল পিকআপ গাড়ি নিয়ে এসে আমার দোকানের তালা ও সিন্দুক কেটে ২৫০ ভরি স্বর্ণালংকার, ১৫০ ভরি রূপা ও নগদ তিন লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

নূর জুয়েলার্সে মালিক নূর আলম বলেন, দোকানের তালা কেটে ডাকাতরা সাত ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৫০ ভরি রূপা নিয়ে গেছে। বাজারের ব্যবসায়ীরা বেরিয়ে আসায় স্বর্ণের মূল সিন্দুক ভাঙতে পারেনি তারা।

ওই বাজারের শরীফ শপিং সেন্টারের মালিক নেয়ামত উল্যাহ (২৬) বলেন, ভোর সোয়া ৪টার দিকে ব্যবসার কাজে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার সময় ডাকাতরা আমাকে আটক করে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমার সঙ্গে থাকা চালানের তিন লাখ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জাহাঙ্গীর হোসেন বাচ্চু (৫০) বলেন, ভোর ৪টার দিকে ভাড়া আনতে যাওয়ার সময় ডাকাতরা আমাকে হাত-মুখ বেঁধে পিকআপে তোলে। অস্ত্রের মুখে আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। স্কচটেপ দিয়ে হাতমুখ বেঁধে রাখে। সেখানে নামাজ পড়তে বের হওয়া আরও দুজনকেও বেঁধে রেখেছিল।

চাপরাশিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন টিটু বলেন, ডাকাত দল রাত সাড়ে তিনটা থেকে প্রায় সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দুটি স্বর্ণের দোকানে লুটপাট চালায়। ডাকাতি শেষে তারা গাড়ি নিয়ে ফেনীর সোনাগাজীর দিকে চলে যায় বলে লোকজন জানিয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

কবিরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থল থেকে অনেকগুলো আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষীদের খুঁজে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ বলেন, দুটি সোনার দোকানে ডাকাতি এবং পাহারাদারকে হত্যার ঘটনায় তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।