Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে : নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০২:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি: জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল না হলে দেশের জনগণের সামনে গভীর সংকট অপেক্ষা করছে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার নতুন দল একটি মধ্যপন্থী দল হবে। তিনি আরও বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের অন্যতম এজেন্ডা হবে গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান তৈরি।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, আমরা যদি আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলে এ নির্বাচনের আগেই সচেষ্ট না হই, তাহলে জনগণের সামনে গভীর সংকট অপেক্ষা করছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। এজন্য সরকার, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে বলবো, দোসরদের প্রতি দয়া দেখাবেন না। সামাজিক, পারিবারিকভাবে তাদের বয়কট করুন, তাদের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হোন। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের একমাত্র সমাধান হলো, তাদের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এবং বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেলে, যারা খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে খুনের দায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত তাদের নিবন্ধন বাতিল করুন। কারণ, খুনি হাসিনার বিচার এবং আওয়ামী লীগের ব্যানার এই দুটির সমাধান যদি আগামী নির্বাচনের আগে আমরা না করতে পারি, তাহলে মানুষগুলো শহীদ হয়ে যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চেয়েছিল, সেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে ফেরার কোনো পথ নেই।

তিনি আরো বলেন, ১৯৪৭ সালে আমাদের একটি ভূখণ্ডের লড়াই ছিল, একাত্তর সালে একটি জন আকাঙ্ক্ষার লড়াই ছিল। কিন্তু প্রতিটি লড়াইয়ে আমাদের পরবর্তীতে বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী, পক্ষের দলদাস হয়ে থাকতে হয়েছে। আমাদের সামনে ১৯৯০ সালেও একটি সুযোগ এসেছিল, তিনটি দল নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করেছিল। কিন্তু সেই চুক্তি থেকেও আমরা দেশের মানুষকে আকাঙ্ক্ষার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা নতুন একটি স্বপ্ন পেয়েছি। বাংলাদেশে যে স্বৈরতান্ত্রিক সংবিধানের কারণে আমরা আমাদের ২ হাজার ভাইকে হারিয়েছি, ৫০ হাজারের ওপরে ভাইদের অঙ্গহানি হয়েছে, তারা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। আমরা আগামীতে বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো রক্তপাত আর চাই না।

নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, জাতিসংঘের যে প্রতিবেদন এসেছে, সেখানে আমরা দেখেছি, কীভাবে আমাদের ভাইদের আয়নাঘর ও বিভিন্ন প্রান্তে খুন করা হয়েছিল। গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে কীভাবে আমাদের ভাই-বোনদের প্রতিনিয়ত হত্যা করা হয়েছে, সেটি স্পষ্ট হয়েছে। আমরা সেই রিপোর্টগুলোতে দেখেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন পক্ষ, গোষ্ঠী, যারা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তাদের অগণতান্ত্রিকভাবে নির্বিচারে রাজপথে হত্যা করা হয়েছে। কিন্ত আমরা এই রাজনৈতিক মণ্ডলের বাইরে সমাজের দিকে তাকালে দেখি, ব্রিটিশরা যেভাবে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাঁধিয়ে আমাদের পৃথক করে রেখেছিল, তেমনি বর্তমানে হেফাজত, জামায়াত, বিএনপি- বিভিন্ন মতাদর্শ ভিত্তিক আমাদের সমাজকে বিভাজিত করে রাখতে ট্যাগিং দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, ছাত্র সমাজের উদ্যোগে জাতীয় নাগরিক কমিটির যে একটি দল আসছে, সেটি একটি মধ্যপন্থার দল হবে। যে দলটি কোনো বাইনারি প্রসেসের মধ্যে থাকবে না, মতাদর্শ ভিত্তিক বিভাজন থাকবে না। আমাদের সামাজিকভাবে ঐক্যের জায়গাটা গড়তে হবে। এবং রাজনৈতিকভাবে এই ঐক্যের ওপর ভিত্তি করে যে মানুষগুলো আহত হয়েছে, শহীদ হয়েছে তাদের বিচারের দাবিতে রাজপথে আমাদের অবস্থান নিতে হবে। এই গণঅবস্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলে দাবিতে আমাদের রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে সামিল হতে হবে।

আলোচনা সভায় বিচারপতি (অব.) এ. এফ. এম আবদুর রহমান বক্তব্য দেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক তাজনূভা জাবীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, সদস্য টিনা নন্দী প্রমুখ।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে : নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী

প্রকাশের সময় : ০২:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি: জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল না হলে দেশের জনগণের সামনে গভীর সংকট অপেক্ষা করছে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার নতুন দল একটি মধ্যপন্থী দল হবে। তিনি আরও বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের অন্যতম এজেন্ডা হবে গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান তৈরি।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, আমরা যদি আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলে এ নির্বাচনের আগেই সচেষ্ট না হই, তাহলে জনগণের সামনে গভীর সংকট অপেক্ষা করছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। এজন্য সরকার, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে বলবো, দোসরদের প্রতি দয়া দেখাবেন না। সামাজিক, পারিবারিকভাবে তাদের বয়কট করুন, তাদের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হোন। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের একমাত্র সমাধান হলো, তাদের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এবং বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেলে, যারা খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে খুনের দায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত তাদের নিবন্ধন বাতিল করুন। কারণ, খুনি হাসিনার বিচার এবং আওয়ামী লীগের ব্যানার এই দুটির সমাধান যদি আগামী নির্বাচনের আগে আমরা না করতে পারি, তাহলে মানুষগুলো শহীদ হয়ে যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চেয়েছিল, সেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে ফেরার কোনো পথ নেই।

তিনি আরো বলেন, ১৯৪৭ সালে আমাদের একটি ভূখণ্ডের লড়াই ছিল, একাত্তর সালে একটি জন আকাঙ্ক্ষার লড়াই ছিল। কিন্তু প্রতিটি লড়াইয়ে আমাদের পরবর্তীতে বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী, পক্ষের দলদাস হয়ে থাকতে হয়েছে। আমাদের সামনে ১৯৯০ সালেও একটি সুযোগ এসেছিল, তিনটি দল নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করেছিল। কিন্তু সেই চুক্তি থেকেও আমরা দেশের মানুষকে আকাঙ্ক্ষার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা নতুন একটি স্বপ্ন পেয়েছি। বাংলাদেশে যে স্বৈরতান্ত্রিক সংবিধানের কারণে আমরা আমাদের ২ হাজার ভাইকে হারিয়েছি, ৫০ হাজারের ওপরে ভাইদের অঙ্গহানি হয়েছে, তারা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। আমরা আগামীতে বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো রক্তপাত আর চাই না।

নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, জাতিসংঘের যে প্রতিবেদন এসেছে, সেখানে আমরা দেখেছি, কীভাবে আমাদের ভাইদের আয়নাঘর ও বিভিন্ন প্রান্তে খুন করা হয়েছিল। গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে কীভাবে আমাদের ভাই-বোনদের প্রতিনিয়ত হত্যা করা হয়েছে, সেটি স্পষ্ট হয়েছে। আমরা সেই রিপোর্টগুলোতে দেখেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন পক্ষ, গোষ্ঠী, যারা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তাদের অগণতান্ত্রিকভাবে নির্বিচারে রাজপথে হত্যা করা হয়েছে। কিন্ত আমরা এই রাজনৈতিক মণ্ডলের বাইরে সমাজের দিকে তাকালে দেখি, ব্রিটিশরা যেভাবে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাঁধিয়ে আমাদের পৃথক করে রেখেছিল, তেমনি বর্তমানে হেফাজত, জামায়াত, বিএনপি- বিভিন্ন মতাদর্শ ভিত্তিক আমাদের সমাজকে বিভাজিত করে রাখতে ট্যাগিং দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, ছাত্র সমাজের উদ্যোগে জাতীয় নাগরিক কমিটির যে একটি দল আসছে, সেটি একটি মধ্যপন্থার দল হবে। যে দলটি কোনো বাইনারি প্রসেসের মধ্যে থাকবে না, মতাদর্শ ভিত্তিক বিভাজন থাকবে না। আমাদের সামাজিকভাবে ঐক্যের জায়গাটা গড়তে হবে। এবং রাজনৈতিকভাবে এই ঐক্যের ওপর ভিত্তি করে যে মানুষগুলো আহত হয়েছে, শহীদ হয়েছে তাদের বিচারের দাবিতে রাজপথে আমাদের অবস্থান নিতে হবে। এই গণঅবস্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলে দাবিতে আমাদের রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে সামিল হতে হবে।

আলোচনা সভায় বিচারপতি (অব.) এ. এফ. এম আবদুর রহমান বক্তব্য দেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক তাজনূভা জাবীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, সদস্য টিনা নন্দী প্রমুখ।